অস্ট্রেলিয়ায় পরিবারসহ স্থায়ী হওয়ার সুযোগ
অভিবাসন প্রত্যাশীদের কাছে সবচেয়ে পছন্দের দেশের নাম অস্ট্রেলিয়া। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, সারা বিশ্বের মানুষদের কাছে বসবাস ও কাজের জন্য অস্ট্রেলিয়ার শহরগুলো সবচেয়ে বেশি প্রিয়। এর মূল কারণ শান্তি-শৃঙ্খলা, সামাজিক নিরাপত্তা, পরিবেশ, চাকরি, খরচ, যোগাযোগ ব্যবস্থা, শিক্ষা ও চিকিৎসার মানের দিক দিয়ে দেশটি সবসময়ই সেরা।
যারা অস্ট্রেলিয়ার ভিসা প্রত্যাশি তাঁদের প্রথমেই জেনে রাখা দরকার দেশটির সরকার মূলত ছয় ধরনের ভিসা দিয়ে থাকে। যেমন : ছাত্র ভিসা, দক্ষতা অনুযায়ী কাজের ভিসা, বিজনেস ভিসা, পরিবারের সদস্যদের জন্য ভিসা এবং অন্যান্য ভিসা।
সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী এগোলে বাংলাদেশীরা কাজ ও দক্ষতা প্রমাণ করে খুব সহজেই স্থায়ী ভিসার জন্য আবেদন করতে পারেন। আর ভিসা পেয়ে পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় কাজ ও বসবাস করার সুযোগ পেতে পারেন।
অস্ট্রেলিয়ায় মাইগ্রেশনের সব প্রোগ্রামগুলোকে বেশ কিছু সাব-ক্লাসের মাধ্যমে আইডেন্টিফাই করা হয়েছে। এগুলো হলো :
সাব-ক্লাস ১৮৯-স্কিলড ইনডিপেনডেন্ট ভিসা।
সাব-ক্লাস ১৯০-স্টেট নমিনেটেড ভিসা।
সাব-ক্লাস ৪৮৯-রিজিওনাল স্পন্সরড ভিসা।
সাব-ক্লাস ৪৮৫-অস্থায়ী গ্র্যাজুয়েট ভিসা।
তুলনামূলক সহজ ক্যাটাগরি গুলো হচ্ছে :
সাব-ক্লাস ৪৫৭-চাকরিদাতা কর্তৃক স্পনসরড অস্থায়ী ভিসা।
সাব-ক্লাস ১৮৬- চাকরিদাতা কর্তৃক স্পনসরড স্থায়ী ভিসা।
সাব-ক্লাস ৪০২-ট্রেনিং এবং গবেষণার জন্য ভিসা।
সাব-ক্লাস ৪৬১ নিউজিল্যান্ডে বসবাসরত পরিবারের সদস্যদের জন্য ভিসা।
তাসমেনিয়া রাজ্যে স্থায়ীভাবে বসবাস ভিসার ঘোষণা :
অভিবাসীদের গন্তব্য হিসেবে বরাবরই জনপ্রিয়তার শীর্ষ তালিকায় থাকে অস্ট্রেলিয়া। প্রতিবছর সারা বিশ্ব থেকে প্রায় দুই লাখ ভিসার আবেদন আসে দেশটিতে। তবে সম্প্রতি দেশটিতে জনপ্রিয় কর্মদক্ষতা ভিত্তিক ৪৫৭ ভিসা বাতিল ও নাগরিকত্ব প্রদানের নতুন আইন নিয়ে চলছে নানা শঙ্কা ও সমালোচনা। অন্যদিকে অস্ট্রেলিয়ার তাসমেনিয়া রাজ্যের মাধ্যমে মনোনীত হয়ে এ দেশে অস্থায়ীভাবে এসে স্থায়ীভাবে বসবাসের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। আগে এই সুযোগ অস্ট্রেলিয়াতে ইতিমধ্যে যারা বসবাস করছিলেন তাদের জন্যই শুধু প্রযোজ্য ছিল।
মনোনীত ভিসাধারীরা তাসমেনিয়া রাজ্যের যেকোনো জায়গায় বসবাস ও কাজ করতে পারবেন। ভিসা শ্রেণি ৪৮৯-এর আওতায় অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ উপকূলীয় দ্বীপরাজ্য তাসমেনিয়া নতুন করে এ ভিসা চালুর ঘোষণা করেছে। নতুন এই ভিসার মাধ্যমে চার বছর মেয়াদে তাসমেনিয়ায় বসবাস ও কাজের সুযোগ পাবেন বিদেশি আবেদনকারীরা। দুই বছর বসবাস ও এক বছর কাজ করার পর স্থায়ীভাবে বসবাসের জন্য আবেদন করতে পারবেন নতুন এই ভিসাধারীরা।
এই ঘোষণা গত ১ জুলাই থেকে কার্যকর হয়েছে। দক্ষতার ভিত্তিতে অস্ট্রেলিয়ার তাসমেনিয়া থেকে মনোনীত হয়ে সাবক্লাস ৪৮৯ ভিসার জন্য ইমি অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে আবেদন করতে হবে। অস্ট্রেলিয়ার বাইরে থেকে (অফশোর অ্যাপ্লিক্যান্ট) হিসেবে নতুন এ ভিসায় আবেদন করা যাবে। এ ভিসার আওতায় আবেদন করলে অভিবাসন স্কোরিং পয়েন্টে তাসমেনিয়া রাজ্য অতিরিক্ত ১০ পয়েন্ট দেবে। তাসমেনিয়ার দক্ষ পেশা তালিকার যেকোনো একটি পেশায় দক্ষতার সকল প্রমাণ জমা দিতে সক্ষম হলে আবেদন করা যাবে এ ভিসায়। এ ছাড়া তাসমেনিয়ায় কমপক্ষে দুই বছর বাস ও চার বছরের যেকোনো এক বছর পূর্ণকালীন (সপ্তাহে কমপক্ষে ৩৫ ঘণ্টা) কাজ করার পর নতুন এই ভিসাধারী স্থায়ী বসবাসের জন্য আবেদন করার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন।
পরিবারসহ অস্ট্রেলিয়ায় স্থায়ী ভিসা (সাব-ক্লাস ১৮৯,১৯০ এবং ৪৮৯ অধীনে) :
সাব-ক্লাস ১৮৯, ১৯০ এবং ৪৮৯ অধীনে যেকোনো বিদেশি নাগরিক এখন মাত্র ১২ মাসে অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব নিতে পারছেন।
এই প্রোগ্রামের সুবিধা ও বৈশিষ্ট্যগুলো হলো :
• সবচেয়ে সমৃদ্ধশালী, সুখী ও শান্তিপূর্ণ অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব
• চাকরির অফারের প্রয়োজন নেই
• বাচ্চাদের বিনামূল্যে লেখাপড়ার সুযোগ
• পরিবারের জন্য বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা
• বিশ্বের ১৬৯টি উন্নত দেশে ভিসা ফ্রি যাতায়াত করার সুবিধা
• সবচেয়ে কম খরচে এবং কম সময়ে পিআর প্রসেস
• কোনো কোটা বা কোনো লিমিটেশন নেই
• যেকোনো সময় স্টেট গভর্নমেন্ট নমিনেশনের জন্য আবেদন করা যায়
• ডিপেনডেন্টদের জন্য সরকারি খরচ আর সবচেয়ে কম খরচে পিআর প্রসেস করা যায়।
পেশা :
সব ধরনের ইঞ্জিনিয়ার, ডাক্তার, আইটি, অ্যাকাউনটেন্ট, অডিটর, আর্কিটেক্ট, ডেনটিস্ট, ফার্মাসিস্ট, ফিজিওথেরাপিস্ট, ব্যাংকার, রেডিওলজিস্ট, নার্স, সনোগ্রাফার, প্যাথলজিস্ট, সার্ভেয়ার, মিডওয়াইফ, শিক্ষক ইত্যাদি পেশার লোকজন তাদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করতে পারবেন।
এই প্রোগ্রামে আবেদন করার ন্যূনতম যোগ্যতা হচ্ছে :
বয়স সীমা :
অস্ট্রেলিয়া স্কিলড প্রোগ্রামে আবেদন করার জন্য প্রার্থীর বয়স অবশ্যই ৫৫ বছরের নিচে হতে হবে। প্রথমে আপনাকে এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) সাবমিট করতে হবে। পরে আমন্ত্রণপত্র বা ইনভাইটেশন লেটার এলে মূল আবেদন জমা দিতে হবে।
শিক্ষাগত যোগ্যতা :
চার বছরের অনার্স এবং এক বছরের মাস্টার্স অথবা তিন বছরের অনার্স এবং দুই বছরের মাস্টার্স ডিগ্রি থাকলে যে কেউ আবেদন করতে পারবেন।
কাজের অভিজ্ঞতা :
এ ক্ষেত্রে প্রথমেই মনে রাখতে হবে যে, অস্ট্রেলিয়ার বাইরের যেকোনো ডিগ্রিকে সেখানকার সমমানের করার জন্য প্রার্থীর ওই একই ক্ষেত্রে অন্তত তিন থেকে পাঁচ বছরের কাজের অভিজ্ঞতা থাকা প্রয়োজন।
ইংরেজি জ্ঞান :
প্রার্থীকে অবশ্যই আইইএলটিএসের (সাধারণ বা একাডেমিক) প্রতিটি মডিউলে আলাদা আলাদা করে ৬.০+ স্কোর করতে হবে। কোনো প্রার্থী যদি প্রতিটি মডিউলে আলাদা আলাদা করে ৭.০+ স্কোর করতে পারেন, সেক্ষেত্রে তিনি আবেদন করার সঙ্গে অতিরিক্ত ১০ পয়েন্ট পাবেন।
অস্ট্রেলিয়া স্কিলড মাইগ্রেশন - সাব ক্লাস ৪৫৭-এর অধীনে (সর্বশেষ তারিখ মার্চ ২০১৮) :
এই প্রোগ্রাম হচ্ছে অস্ট্রেলিয়া সরকারের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রোগ্রামগুলোর মধ্যে অন্যতম। যেহেতু পরিবারসহ কাজ ও বসবাস করার সুযোগ পাওয়া যায় সেহেতু এই প্রোগ্রামটি ছিল সবার পছন্দের। তবে প্রোগ্রামটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে কিছু পরিবর্তন সাপেক্ষে প্রোগ্রামটির নতুন কোনো সাব-ক্লজ ঘোষণা হয়েছে।
আগামী বছরের মার্চ মাসের মধ্যে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে সাব-ক্লাস ৪৫৭। তাই আর দেরি না করে এখনই আবেদন করা যেতে পারে। যে কেউ তাঁর গ্র্যাজুয়েশন বা শিক্ষাগত যোগ্যতার ওপর নির্ভর করে সাব-ক্লাস ৪৫৭ এর অধীনে আবেদন করে স্বপ্ন পূরণ করতে পারেন। সাধারণত মেডিকেল প্রশাসক, আইটি, অ্যাকাউনটেন্ট, অডিটর, আর্কিটেক্ট, ডেনটিস্ট, ফার্মাসিস্ট, থেরাপিস্ট, রেডিওলজিস্ট, নার্স, সনোগ্রাফার, পেথোলজিস্ট, মিডওয়াইফ, শিক্ষক, ব্যাংকারসহ আরো অনেকে পেশাজীবীরা স্বল্প সময়ে অস্ট্রেলিয়ায় পরিবারসহ বসবাস ও কাজ করার অনুমতি পেতে পারেন এই ক্যাটাগরিতে আবেদন করে।
প্রোগ্রামটির উল্লেখযোগ্য সুবিধাজনক দিক হচ্ছে, চাকরিসহ অস্ট্রেলিয়ায় যাওয়া যায়। এজন্য আইএলটিএসের ন্যূনতম স্কোর লাগে ৪.৫, অন্তত ডিগ্রি পাশ হলেই চলে। রয়েছে পরিবারসহ যাওয়ার সুযোগ। কম সময়ের মধ্যেই সবকিছু প্রসেস করা যায় এবং আবেদনের ভিত্তিতে আগে আসলে আগে পাবেন ভিত্তিতে বিবেচনা করা হয়।
অস্ট্রেলিয়া মাইগ্রেশনের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে পিআর ভিসা নিয়ে সেখানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একজন ব্যক্তির সন্তানরা প্রতি মাসে সোশ্যাল বেনিফিট পাওয়া শুরু করবে। আর সবচেয়ে, গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো অস্ট্রেলিয়ায় বিনামূল্যে চিকিৎসা সুবিধা পাওয়া যায়, যা পরিবারের সবার জন্য প্রযোজ্য। তাই আগ্রহীদের আর দেরি করা উচিত নয়। যথাযথ যোগ্যতা থাকলে এখনই আবেদনের মাধ্যমে যে কেউ পেতে পারেন অস্ট্রেলিয়ার নাগরিকত্ব।
বাংলাদেশের যে কয়েকজন ইমিগ্রেশন আইনজীবী অত্যন্ত দক্ষতা, সততা ও পেশাদারত্বের সঙ্গে মাইগ্রেশন নিয়ে কাজ করছেন তাদের মধ্যে একবারের শীর্ষে অবস্থান করছেন বিশিষ্ট কলাম লেখক, টিভি ব্যক্তিত্ব ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ (রাজু)।
অস্ট্রেলিয়ায় মাইগ্রেশনের বিষয়ে জানতে চাইলে ওয়ার্ল্ড ওয়াইড মাইগ্রেশন কনসালট্যান্ট লিমিটেডের কর্নধার ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ (রাজু) বলেন, আমাদের পাশের দেশ ভারত এমনকি শ্রীলংকা থেকেও প্রতি বছর বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে প্রচুর মানুষ মাইগ্রেশন করে অস্ট্রেলিয়ায় যান। প্রতি বছর আমাদের দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে প্রচুর গ্র্যাজুয়েট বের হন কিন্তু শুধু আইইএলটিএস পরীক্ষা ভীতির কারণে আরো বেশি যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁরা অস্ট্রেলিয়ায় যেতে পারেন না।
তরুণদের প্রতি বিশেষ করে যারা উন্নত দেশে বসবাস করতে আগ্রহী তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে এই অভিবাসন বিশেষজ্ঞ আইনজীবী বলেন, ‘নিজের যোগ্যতার প্রতি সুবিচার করুন এবং আস্থা রাখুন। সঠিক সময়ে সঠিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করলে অস্ট্রেলিয়া খুব দূরের স্বপ্ন নয়।’
অস্ট্রেলিয়ায় অভিবাসন বিষয়ে আরো তথ্য জানতে আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইনজীবী, ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ড. শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এ জন্য নিজের পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত পাঠাতে পারেন [email protected] অথবা [email protected] এই দুটি ই-মেইল ঠিকানায়।
এ ছাড়া যোগাযোগ করতে পারেন হোয়াটসঅ্যাপ অথবা ভাইবারে+৬০১৪৩৩০০৬৩৯ নম্বরে। আরো তথ্য জানতে ভিজিট করতে পারেন www.wwbmc.com ওয়েবসাইটে।
ঢাকার উত্তরায় ৭ নম্বর সেক্টরের ৫১ সোনারগাঁও জনপথে অবস্থিত খান টাওয়ারে ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন লিমিটেডের অফিসেও খোঁজ নিতে পারেন বিস্তারিত তথ্যের জন্য। প্রাথমিক তথ্যর জন্য টেলিফোনে কথা বলতে পারেন ০১৯৬৬০৪১৫৫৫, ০১৯৬৬০৪১৩৩৩, ০১৯৯৩৮৪৩৩৪০, ০১৯৬৬০৪১৮৮৮ এই নম্বরগুলোতে।