ভারতে পর্নোপ্রীতি বাড়ছে কেন?
হলিউডের কোনো চলচ্চিত্রে পর্নো তারকাদের নেওয়ার সময় কয়েকবার ভেবে দেখা হয়। সর্বোচ্চ ছোটখাটো কোনো চরিত্র। সেখানে সানি লিওনের মতো পর্নো তারকা বলিউডের কয়েকটি চলচ্চিত্রের মূল নায়িকা। ভারতজোড়া খ্যাতির সঙ্গে সঙ্গে প্রথম সারির মিডিয়াগুলোতেও তাঁকে নিয়ে বিস্তর আলোচনা। ভারতীয়রা কি তাঁর অভিনয়গুণ দেখে মুগ্ধ, না অন্যকিছু?
ভারতীয় মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলো কলরেট অনেক কমিয়েছে। তবুও ব্যবসা খারাপ চলছে না। কারণ তাদের লাভের বড় খাত এখন তথ্যসেবা। এই মোবাইল ইন্টারনেটের একটি অংশ পর্নোগ্রাফি দেখায় ব্যবহার হয়। ২০১৪ সালে বিশ্বে পর্নো দেখায় শীর্ষ দেশগুলোর মধ্যে ভারত অন্যতম।
অ্যালেক্সা র্যাঙ্কিং অনুযায়ী, গত বছর ভারত বিশ্বের একটি শীর্ষ পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটে চতুর্থ অবস্থানে পৌঁছে গেছে। তাদের সামনে আছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও কানাডা। গত বছর ভারতে পর্নোগ্রাফি প্রীতি অনেক বেড়েছে। এ কারণেই ভারতের অবস্থান তিন ধাপ ওপরে উঠেছে। ওয়েবসাইটটির ইতিহাসে শীর্ষ ১০ এর মধ্যে থাকা কোনো দেশের ক্ষেত্রে এটিই সবচেয়ে বড় অগ্রগতি।
অ্যালেক্সা বিশ্বের ওয়েবসাইটগুলোর অবস্থান এবং সেখানকার বিষয়বস্তুর প্রতি মানুষের আগ্রহ নিয়ে কাজ করে।
অনলাইনভিত্তিক সংবাদমাধ্যম কোয়ার্টজ ইন্ডিয়ার তথ্যমতে, পর্নোগ্রাফি দেখায় ভারতীয়রা বর্তমানে কম্পিউটারের চেয়ে মোবাইল ফোন বেশি ব্যবহার করে। ২০১৩ সালেও পর্নোগ্রাফি দেখার ক্ষেত্রে প্রায় ৬০ শতাংশ ক্ষেত্রে কম্পিউটার ব্যবহার হতো। আর বাকি ৪০ শতাংশ ক্ষেত্রে ব্যবহার হতো মোবাইল ফোন ও ট্যাব। তবে ২০১৪ সালে এই হিসাব পাল্টে যায়। এখন প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয় মোবাইল। বাকি ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় কম্পিউটার ও ট্যাব। দুই বছরই এ ক্ষেত্রে ট্যাবের ব্যবহার ৩ শতাংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল।
ভারতে স্মার্টফোনের ব্যবহার দ্রুত বাড়ছে। ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতে আট কোটি স্মার্টফোন আমদানি হয়েছে। ২০১৩ সালে এ সংখ্যা ছিল চার কোটি ৪০ লাখ। বর্তমানে ভারতে মাত্র ৩০ মার্কিন ডলারেই স্মার্টফোন কেনা যায়। এ কারণে ভারতীয়দের মধ্যে ইন্টারনেটের ব্যবহার বাড়ছে। বাড়ছে পর্নোগ্রাফি প্রীতিও। শুধু ভারতে নয়, সারা বিশ্বেই মোবাইল ফোনে পর্নোগ্রাফি দেখার হার বেড়েছে।
দিন হিসেবে সারা বিশ্বে পর্নোগ্রাফি বেশি দেখা হয় সোমবার। আর সবচেয়ে কম শুক্রবার। তবে ভারতে এর ভিন্নতা দেখা গেছে। ভারতে সবচেয়ে বেশি পর্নোগ্রাফি দেখা হয় শনিবার। আর সবচেয়ে কম বুধবার।
ভারতে পর্নো দর্শনার্থীর ২৫ শতাংশই নারী। বিশ্বে গড়ে এই হার ২৩ শতাংশ। দেশ হিসেবে ভারতীয় নারীরা ষষ্ঠ অবস্থানে। ব্রাজিলে নারী পর্নো দর্শনার্থীর হার সবচেয়ে বেশি, ২৯ শতাংশ।
একটি শীর্ষ পর্নোগ্রাফিক ওয়েবসাইটে সারা বিশ্বেই ভারতীয় পর্নোগ্রাফিও বিশেষ অবস্থান পেয়েছে। ইংরেজিতে ভারতীয় অর্থাৎ, ‘ইন্ডিয়ান’ এই শব্দ দিয়ে পর্নো খোঁজার অবস্থান ১৮তম। এ ক্ষেত্রে ‘জাপানিজ’ শব্দটির অবস্থান ১৬তম।
অনেকে ভারতে পর্নোগ্রাফি দেখার হার বেড়ে যাওয়ার কারণ হিসেবে বলিউডের নতুন অভিনেত্রী সানি লিয়নকেই দায়ী করেন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত কানাডার এই নাগরিক আগে ছিলেন বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ পর্নো তারকা। তাই শুধু বলিউড অভিনেত্রী হিসেবে নয় ভারতীয়দের পর্নোগ্রাফি খোঁজায়ও তিনি শীর্ষে।