মার্কিন সাম্রাজ্যের মসনদে জর্জ ওয়াশিংটন থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প
বিশ্বের অন্যতম ক্ষমতাধর দেশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। তাই দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন এলেই সবার চোখ চলে যায় এদিকে। যদিও দেশটির প্রেসিডেন্ট নির্বাচন প্রক্রিয়া অনেকটাই জটিল। তাই বুঝে ওঠা সবার পক্ষে সম্ভব নয়। তবুও কৌতুহলের শেষ নেই। সেই দেশটির এবারের নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ৪৬তম ব্যক্তি হিসেবে ট্রাম্প উঠবেন হোয়াইট হাউসে। ডেমোক্রাটিক পার্টির কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে রিপাবলিকান নেতা ডোনাল্ড ট্রাম্প এই বিজয়ের হাসি হাসতে চলেছেন। জায়ের দ্বারে পৌঁছাতে আর বাকি ৪টি ইলেক্টরাল ভোট।
হোয়াইট হাউসের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত ৪৬ জন প্রেসিডেন্ট (অনেকে একাধিকবার নির্বাচিত) দায়িত্ব পালনকালে হয়েছেন আলোচিত, সমালোচিত, এমনকি নিন্দিতও। তাদের মধ্যে এবারের বিজয়ী হতে চলা ট্রাম্পও আছেন। আবার অনেকে দিয়েছেন প্রাণ, অনেকে হয়েছেন হামলায় গুরুতর আহত; কেউ কেউ মৃত্যুবরণ করেছেন রোগেশোকে। তবে, যাই হোক না কেন, নির্বাচনি লড়াই থেমে থাকেনি। আসুন জেনে নেই, এ পর্যন্ত যারা বসেছেন দেশটির মসনদে।
জর্জ ওয়াশিংটন ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম প্রেসিডেন্ট। ১৭৮৯ সালের এপ্রিল ৩০ থেকে ১৭৯৭ সালের মার্চ ৪ পর্যন্ত। নির্দলীয় এই প্রেসিডেন্টের ভায়েস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন অ্যাডাম্স।
জর্জ ওয়াশিংটনের সময়কার ভায়েস প্রেসিডেন্ট জন অ্যাডাম্স পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হন। ১৭৯৭ সালের মার্চ ৪ থেকে ১৮০১ সালের মার্চ ৪ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন তিনি। তিনি ছিলেন একজন আইনজীবী, কূটনীতিক, রাজনৈতিক ভাষ্যকার, ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জনকদের মধ্যে অন্যতম। তিনি ফেডারেলিস্ট পার্টির হলেও নির্দলীয়ভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। তার ভায়েস প্রেসিডেন্ট ছিলেন টমাস জেফারসন।
টমাস জেফারসন মার্কিন ক্ষমতায় আসেন ১৮০১ সালের ৪ মার্চ, থাকেন ১৮০৯ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত। ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকানের এই নেতার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন অ্যারন বিউর। পরবর্তীতে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ ক্লিনটন।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জেমস ম্যাডিসন। তিনি ১৮০৯ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮১৭ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকানের হয়ে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ ক্লিনটন। পরবর্তীতে একই পদে দায়িত্ব পালন করেন এলব্রিজ গ্যারি।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জেমস মন্রো। তিনি ১৮১৭ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮২৫ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকান পার্টির এই নেতার রাজত্বকালে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন ড্যানিয়েল ডি থম্পকিন্স।
তারপর জন কুইন্সি অ্যাডাম্স যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তিনিও জয়লাভ করেন ডেমোক্রেটিক-রিপাবলিকান পার্টির হয়ে। ১৮২৫ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮২৯ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন সি ক্যালৌন।
অ্যান্ড্রু জ্যাকসন মার্চ ১৮২৯ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮৩৭ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত পরবর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির নেতা। তার সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন সি ক্যালৌন। পরে ভাইস প্রেসিডেন্ট হন মার্টিন ভ্যান বিউরেন।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ডেমোক্রেটিক পার্টির মার্টিন ভ্যান বিউরেন। তিনি ১৮৩৭ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮৪১ সালের মার্চ ৪ পর্যন্ত দায়িত্ব পালণ করেন। তার সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন রিচার্ড মেন্টর জনসন।
দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম হেনরি হ্যারিসন দায়িত্ব পালন করেন ১৮৪১ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮৪১ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত। হুইগ পার্টি থেকে তিনিই দেশটির প্রথম প্রেসিডেন্ট। জন টাইলার ছিলেন তার ভাইস প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার পর অভিষেক-অনুষ্ঠানে হ্যারিসন তুষারপাতের মধ্যেই টানা এক ঘণ্টা ভাষণ দেন। ফলে ঠান্ডা লেগে তিনি নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হন এবং মাসখানেক পরে মারা যান। তার শাসনামল ছিলো মাত্র ৩১ দিন, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টদের মধ্যে সবচেয়ে সংক্ষিপ্ত শাসনকাল। রোনাল্ড রেগান নির্বাচিত হওয়ার আগে হ্যারিসনই ছিলেন সবচেয়ে বেশি বয়সে নির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার সময় হ্যারিসনের বয়স ছিল ৬৮ বছর।
প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম হেনরি হ্যারিসনের মৃত্যুর পর ১৮৪১ সালের ৪ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষমতায় আসেন হুইগ পার্টির নেতা ও সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট জন টাইলার। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তিনি ১৮৪৫ সালের ৪ মার্চ পর্য দেশটির ক্ষমতায় আসীন ছিলেন।
জেমস নক্স পোক নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে ১৮৪৫ সালের ৪ মার্চ প্রেসিডেন্ট হয়ে মার্কিন মসনদে বসেন, ছিলেন ১৮৪৯ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতার শাসনামলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ এম ডালাস।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ছিলেন জ্যাকারি টেইলর। ১৮৪৯ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮৫০ সালের ৯ জুলাই পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন হুইগ পার্টির এই নেতা। তার সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্টে ছিলেন মিলার্ড ফিল্মোর। টেইলর ছিলেন মার্কিন সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা যিনি মেজর জেনারেল পদে উন্নীত হন এবং মেক্সিকান-আমেরিকান যুদ্ধে তার বিজয়ের জন্য জাতীয় বীর হিসেবে পরিচিত হন। তার অস্পষ্ট রাজনৈতিক বিশ্বাস সত্ত্বেও তিনি হোয়াইট হাউসে নির্বাচিত হন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে তার প্রধান অগ্রাধিকার ছিল ইউনিয়ন সংরক্ষণ করা। তিনি দায়িত্ব গ্রহণের ১৬ মাসের মাথায় পেটের রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। টেইলরের প্রেসিডেন্ট মেয়াদ যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে তৃতীয়-সংক্ষিপ্ততম ছিল।
প্রেসিডেন্ট টেইলরের মৃত্যুতে দায়িত্ব নেন হুইগ পার্টির অন্যতম নেতা ও টেইলরের সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট মিলার্ড ফিল্মোর। ১৮৫০ সালের ৯ জুলাই থেকে ১৮৫৩ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্বে ছিলেন তিনি।
দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ছিলেন ফ্রাংক্লিন পিয়ের্স। ১৮৫৩ সালের ৪ মার্চ তিনি ক্ষমতায় বসেন। ছিলেন ১৮৫৭ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতার শাসনামলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেনউইলিয়াম আর কিং।
এরপর জেমস বিউকানান ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। নির্বাচনে জিতে ১৮৫৭ সালের ৪ মার্চ ক্ষমতায় বসেন তিনি। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতা চার বছর শাসন করে বিদায় নেন ১৮৬১ সালের ৪ মার্চ। তার সময়ে ভাইস প্রেসিন্টের দায়িত্বে ছিলেন জন সি ব্রেকিনরিজ।
বিশ্বে সব থেকে জনপ্রিয় ও গণতন্ত্রের আধুনিক সংজ্ঞাদানকারী আব্রাহাম লিংকন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রেসিডেন্ট। রিপাবলিকান ন্যাশনাল ইউনিয়নের এই নেতা ১৮৬১ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮৬৫ সালের ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ন্যাশনাল ইউনিয়ন পার্টি মূলত ইউনিয়ন পার্টি বা ইউনিয়নিস্ট যা ছিল রিপাবলিকান, ওয়ার ডেমোক্র্যাট এবং সীমান্ত রাজ্যের শর্তহীন ইউনিয়নবাদীদের একটি যুদ্ধকালীন জোট। এটি আমেরিকান গৃহযুদ্ধের সময় লিঙ্কন প্রশাসনকে সমর্থন করেছিল। ১৮৬৩ সালের ১৯ নভেম্বর আব্রাহাম লিংকন পেনসিলভানিয়ার গেটিসবার্গ বক্তব্যে বলেছিলেন, গণতান্ত্রিক সরকার জনগণের অংশগ্রহণ, জনগণের দ্বারা ও জনগণের জন্য। তার শাসনামলে হ্যানিবাল হ্যামলিন ও পরে অ্যান্ড্রু জনসন ছিলেন ভাইস প্রেসিডেন্ট।
ডেমোক্রেটিক ন্যাশনাল ইউনিয়নের হয়ে আব্রাহাম লিংকনের পর প্রেসিডেন্ট পদে আসেন অ্যান্ড্রু জনসন। এই প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ছিল ১৮৬৫ সালের ১৫ এপ্রিল থেকে ১৮৬৯ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত।
ইউলিসিস এস গ্রান্ট ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। তিনি ১৮৬৯ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮৭৭ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতার শাসনামলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন শুইলার কোলফ্যাক্স ও হেনরি উইলসন।
এরপর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন রাদারফোর্ড বি হেইজ। তার শাসনামল ছিল ১৮৭৭ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮৮১ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতার সময়ে দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন উইলিয়াম এ হুইলার।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন জেমস গারফিল্ড। তিনি ১৮৮১ সালের ৪ মার্চ থেকে একই বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে ২ জুলাই শনিবার সকাল সাড়ে ৯টায় গুলিবিদ্ধ হন। এরপর অর্ধমাস চিকিৎসার পর ১৯ সেপ্টেম্বর মারা যান তিনি। তার সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন চেস্টার এ আর্থার।
রিপাবলিকান পার্টির নেতা চেষ্টার এ আর্থার ছিলেন দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। তিনি ১৮৮১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ২০তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন জেমস গারফিল্ড মারা গেলে প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পান। ক্ষমতায় ছিলেন ১৮৮৫ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত।
দেশটিতে এরপর প্রেসিডেন্ট ছিলেন গ্রোভার ক্লিভ্ল্যান্ড, যিনি ১৮৮৫ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮৮৯ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতার শাসনামালে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেনটমাস এ হেন্ড্রিক্স।
রিপাবলিকান নেতা বেঞ্জামিন হ্যারিসন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। তিনি ১৮৮৯ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮৯৩ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। তার সরকারের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন লেভি পি মর্টন।
১৮৯৩ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮৯৭ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট ছিলেন গ্রোভার ক্লিভ্ল্যান্ড। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতা দ্বিতীয়বার মার্কিন মসনদে চড়েন। এর আগে তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১৮৮৫ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৮৮৯ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। দ্বিতীয়বার সরকার গঠন করলে গ্রোভার ক্লিভ্ল্যান্ডের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন অ্যাডলাই ই স্টিভেনসন।
পরে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন উইলিয়াম ম্যাকিন্লি, যিনি ১৮৯৭ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৯০১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। রিপাবলিকান পার্টি থেকে বিজয়ী এই প্রেসিডেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন গ্যারেট হোবার্ট ও থিওডোর রুজ্ভেল্ট।
আততায়ীর গুলিতে প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম ম্যাকিন্লি নিহত হলে থিওডোর রুজ্ভেল্ট হন বিশ্বের ক্ষমতাসীন প্রেসিডেন্ট। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতা তিনি ১৯০১ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ১৯০৯ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন চার্লস ডব্লিউ ফেয়ারব্যাংক্স।
যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ছিলেন উইলিয়াম হাওয়ার্ড ট্যাফ্ট্। তিনি ১৯০৯ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৯১৩ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতার মসনদে ছিলেন। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতার শাসনামলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জেমস এস শার্মান।
উড্রো উইল্সন ১৯১৩ সালের ৪ মার্চ দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন। ডেমোক্রেটিক পার্টির এই নেতা ক্ষমতায় ছিলেন ১৯২১ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন থমাস আর মার্শাল।
ওয়ারেন জি. হার্ডিং ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। ১৯২১ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৯২৩ সালের ২ আগস্ট পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন রিপাবলিকান পার্টির এই নেতা। তার মৃত্যুর সময় পর্যন্ত অন্যতম জনপ্রিয় প্রেসিডেন্ট ছিলেন তিনি। যদিও পরে তার প্রশাসনের অধীনে ঘটে যাওয়া টিপট ডোম কেলেঙ্কারি প্রকাশিত হয় এবং তার পরিচারিকা ন্যান ব্রিটনের সাথে তার সম্পর্কের কথা প্রকাশিত হয়। এরপর থেকে তার নামের সঙ্গে যুক্ত হয় কলঙ্কিত একটি অধ্যায়। এই প্রেসিডেন্টের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন ক্যালভিন কুলিজ।
এরপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন ক্যালভিন কুলিজ। ১৯২৩ সালের ২ আগস্ট থেকে ১৯২৯ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত হোইট হাইসের অধিশ্বর ছিলেন রিপাবলিকান এই নেতা। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন চার্লস জি ডয়েস।
দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ছিলেন হার্বার্ট হুভার। তিনি ১৯২৯ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৯৩৩ সালের ৪ মার্চ পর্যন্ত ক্ষমতায় ছিলেন। রিপাবলিকান পাটির এই নেতার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন চার্লস কার্টিস।
ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট ১৯৩৩ সালের ৪ মার্চ থেকে ১৯৪৫ সালের ১২ এপ্রিল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে ছিলেন। ডেমোক্রেটিক পার্টি থেকে মার্কিন অধিপতি ফ্রাঙ্কলিনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন ন্যান্স গার্নার, এরপর হেনরি এ. ওয়ালেস ও শেষে হ্যারি এস ট্রুম্যান।
দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ছিলেন সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারি এস ট্রুম্যান। তিনিও ডেমোক্রেটিক পার্টির ছিলেন। ১৯৪৫ সালের ১২ এপ্রিল থেকে ১৯৫৩ সালের ২০ জানুয়ারি ক্ষমতায় ছিলেন ট্রুম্যান। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন অ্যালবেন বার্কলি।
ডোয়াইট ডি. আইজেনহাওয়ার ১৯৫৩ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ১৯৬১ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ছিলেন হোয়াইট হাউসের অধিশ্বর। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন রিচার্ড নিক্সন।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ছিলেন জন এফ কেনেডি। ডেমোক্রেটিক পার্টির হয়ে লড়ে তিনি ১৯৬১ সালের ২০ জানুয়ারি ক্ষমতার মসনদে চড়েন। ছিলেন ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর পর্যন্ত। লিন্ডন বি. জনসন ছিলেন তার ভাইস শাসনামলে ভাইস চেয়ারম্যান।
এরপর লিন্ডন বি. জনসন ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট। ডেমোক্রেটিক এই নেতা ১৯৬৩ সালের ২২ নভেম্বর থেকে ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি দায়িত্ব পালন করেন। তার সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন হুবার্ট হাম্ফরে।
যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ছিলেন রিচার্ড নিক্সন। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতা ১৯৬৯ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ১৯৭৪ সালের ৯ আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন স্পিরো অ্যাগনিউ ও জেরাল্ড ফোর্ড।
১৯৭৪ সালের ৯ আগস্ট ভাইস প্রেসিডেন্ট থেকে প্রেসিডেন্টের দায়িত্বে আসেন জেরাল্ড ফোর্ড। রিপাবলিকান পার্টির এই নেতা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জিসেবে ১৯৭৭ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন নেলসন রকফেলার।
জিমি কার্টার আমেরিকান রাজনীতিবিদ, লেখক এবং ডেমোক্রেটিক পার্টির সদস্য। তিনি ১৯৭৭ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ১৯৮১ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০২ সালে শান্তিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন ওয়াল্টার মন্ডেল।
রোনাল্ড উইলসন রেগন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ১৯৮১ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ১৯৮৯ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। প্রেসিডেন্টের আগে তিনি হলিউডের চলচ্চিত্র অভিনেতা ছিলেন। এরপর তিনি ১৯৬৭ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ক্যালিফোর্নিয়ার ৩৩তম গভর্নরের দায়িত্ব পালন করেন। রিপাবলিকান এই নেতার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ।
জর্জ হার্বার্ট ওয়াকার বুশ একজন আমেরিকান রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক এবং ব্যবসায়ী যিনি ১৯৮৯ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ১৯৯৩ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। রিপাবলিকান পার্টির এই সদস্য রোনাল্ড রিগানের অধীনে ১৯৮১ থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত দেশটির ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে এবং এর আগে বিভিন্ন ফেডারেল পদে দায়িত্ব পালন করেন। জর্জ ওয়াকার বুশের সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন ড্যান কোয়ায়েল।
বিল ক্লিনটন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট ছিলেন। ১৯৯৩ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ডেমোক্রেটিক এই নেতা ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতার মসনদে থেকেছেন। এই সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন আল গোর।
জর্জ ওয়াকার বুশ বা জর্জ ডব্লিউ বুশ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ২০০১ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ২০০১ ও ২০০৪ সালের যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে রিপাবলিকান দলের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে বিজয়ী হন। এর আগে তিনি ১৯৯৫ থেকে ২০০০ সাল পর্যন্ত টেক্সাস অঙ্গরাজ্যের ৪৬তম প্রশাসক বা গভর্নর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।
পরে বারাক ওবামা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ২০০৯ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত ডেমোক্র্যাটিক পার্টির সদস্য দেশটি পরিচালনা করেন। ওবামা ছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম আফ্রো-মার্কিন বংশোদ্ভূত প্রেসিডেন্ট। তিনি এর আগে ২০০৫ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত ইলিনয় থেকে মার্কিন সিনেটর এবং ১৯৯৭ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত ইলিনয় রাজ্যের সিনেটর হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই নেতার ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন জো বাইডেন।
রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। তিনি ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতায় ছিলেন। এছাড়া তিনি একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব, লেখক হিসেবে আলোচিত। এই সময়ে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন মাইক পেন্স।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ডেমোক্রেট পার্টির নেতা জো বাইডেন দেশটির পরবর্তী প্রেসিডেন্ট। ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতার মসনদে আছেন তিনি। একই সময়ে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব পালন করছেন কমলা হ্যারিস।
রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প ২০২৪ সালের নির্বাচনে আবারও বিজয়লাভ করেছেন। ডেমোক্র্যাটের কমলা হ্যারিসকে হারিয়ে তিনিই হলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। এরইমধ্যে বিশ্বনেতারা জানিয়েছেন শুভেচ্ছা, দিয়েছেন অভিনন্দন। এর আগে তিনি তিনি ২০১৭ সালের ২০ জানুয়ারি থেকে ২০২১ সালের ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত দেশটির ক্ষমতায় ছিলেন। এ ছাড়া তিনি একজন ধনাঢ্য ব্যবসায়ী, বিনিয়োগকারী, বিশিষ্ট সামাজিক ব্যক্তিত্ব, লেখক হিসেবে আলোচিত। তার সেই আমলে ভাইস প্রেসিডেন্ট ছিলেন মাইক পেন্স।