জন্মদিন
কবি সব্যসাচীর জন্মদিনে
আজ ২৭ ডিসেম্বর ২০১৬, মঙ্গলবার। গত বছর এই দিনে সকালে শয্যা থেকে নিজেকে ছিন্ন করে কম্পিউটারে এসে বসেছিলাম। ভাবছিলাম ৮০ বা ৮১ বছর আগের এই দিনটিরই কথা। ভাবছিলাম? কী করে ভাবব, আমি কি তখন উপস্থিত ছিলাম! তবু ভেবেছি। কবিজন্মকে স্মরণ করে শব্দের নৈবেদ্য সাজাতে চেয়েছি। তাই সবার আগে কবি-জননীকেই সালাম জানাই। শুধু কি কবিজননীকে, যিনি গর্ভে ধরেছিলেন বাংলার এক সব্যসাচীকে? জন্মদাতাকেও তবে স্মরণ করা সমীচীন। এ যুক্তির কথা। আবেগের বয়ান হচ্ছে মায়ের ঋণ মনে রাখা। বাঙালিই কি মায়ের জন্য এমন আবেগমথিত হয়? আজ সৈয়দ হকের জন্মদিন। তাঁর প্রয়াণের পর প্রথম জন্মদিন। গত জন্মদিনে যখন তাঁর কবিতার বই খুলে পড়ছিলাম, ফের কম্পিউটারের চাবি টিপে টিপে সেসব কবিতা নিয়ে শব্দের পর শব্দ সাজাচ্ছিলাম, তখন আমরা কি ঘুণাক্ষরেও মনে করেছিলাম আজ তাঁর জন্মদিনে আমরা আর তাঁর সাক্ষাৎ পাব না!
হ্যাঁ, ৮০ পেরিয়েছিলেন বটে তিনি, এই বাংলায় একেবারে সামান্য নয় এই আয়ু। তবু সৃষ্টিশীলের আয়ু যত দীর্ঘই হোক, তাঁর প্রয়াণ সর্বকালেই অকাল প্রয়াণ। তা ছাড়া সৈয়দ হককে আমরা গত জন্মদিনেও দেখেছি তারুণ্যে উদ্দীপ্ত এক সুঠাম ঋজু মানুষ হিসেবে। কথায় আছে মাথায় বাজ ভেঙে পড়া। এক মাথায় ক’বার ভেঙে পড়ে বাজ! হঠাৎ জানা গেল কবি বিলেত গেছেন মরণব্যাধির চিকিৎসা করাতে। কয়েক মাস পর ফিরে এলেন তিনি, দ্বিতীয় দফা বজ্রপাত হলো আমাদের শিরে তাঁর আয়ু নাকি আর মোটে ছয় মাস? ও মা! মাসও ঘুরল না তিনি বিদায় নিলেন। শয্যা পাতলেন জন্মগ্রাম কুড়িগ্রামে।
সৈয়দ শামসুল হকের প্রথম প্রকাশ তো কবিতারই মাধ্যমে, নয় কি? সে ৬১ সালের কথা। সে আমার জন্মের আগের কথা। তবু আমি, আমরা বাংলার ষাটের দশককে কত আপন করেই না চিনি। না, সৈয়দ শামসুল হককে এখন শুধু কবি বলেই সম্বোধন করছি বটে, যদিও তাঁর প্রথম কাব্যটি প্রকাশের আগে বেরিয়ে গেছে একটি উপন্যাস, দুটি ছোটগল্পের বই এবং সেই একষট্টি সালে প্রথম কবিতার বইটি বেরুনোর কয়েক বছরের মধ্যে তিনি পান বাংলা একাডেমি পুরস্কার। সেই শুরু। তারপর কত পুরস্কারই না তিনি পেয়েছেন, সম্মান, সম্মাননা। আজ কবির জন্মদিন। আজ তাঁর কবিতা নিয়ে হোক আলাপ। ভালোবাসার কবিতা। কবিকে ভালো বাসা। আমার সামান্য পঠনে মনে করে উঠতে পারি কবির তিনটে প্রেমকাব্যের কথা : পরানের গহীন ভিতর, এক আশ্চর্য সংগমের স্মৃতি, কাননে কাননে তোমারই সন্ধানে। আমার সংগ্রহে রয়েছে। হাতের কাছে খুঁজে পাব না। ৮৬ সালের পর থেকে কবি শামসুর রাহমানের কোনো কবিতার বই আর আমাকে কিনতে হয়নি। সব তিনি উপহার দিয়েছেন, প্রকাশের স্বল্পতম সময়ের মধ্যেই। সেসব কি আর খুঁজে পাব? বাসাবদলের নিয়তি যার এই নিষ্ঠুর নগরে, তার বড় কর্তিত জীবন। তবু ভাগ্যকে বাহবা দেই, পেলাম ‘ভালোবাসার দিনে’। কবিকে ভালোবাসার জন্য এই বা মন্দ কী! অভিন্ন শিরোনামে ৭১টি স্বতন্ত্র কবিতা। তবে মূল সুর ওই অভিন্নই। কবি এটি লিখেছেন লন্ডনে বসে, ২০০৯ সালের জুলাইয়ের মধ্যভাগে মাত্র দু’ সপ্তাহের ভেতরে। এই হলো কবিতার ঘোর, এই হলো ভালোবাসার ঘোর। কবিতার জন্য ভালোবাসা, মানবীর জন্য প্রেম।
প্রেম নিজেই সে গরিব গ্রহের এক আশ্চর্য সুন্দর ধ্বনিময় কবিতা। দুটি টলটলে থরথর উথালপাথাল হৃদয়ের নৈঃশব্দে নিহিত এক পরম প্রাণভোমরা। (আবার একটি হৃদয় নিষ্ক্রিয় ও মৌন রইলেও তুমুল সংঘটিত হতে পারে প্রেম!) প্রেমে পড়লে চতুর চণ্ডালও কবি। আর কবির প্রেম? সে তো মহার্ঘ্যবিশেষ, যার সুঘ্রাণ পায় প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণ। প্রতিটি প্রেমই নতুন, বলতে পারি অভিনব। কিন্তু তার অভ্যন্তরে ফুটতে থাকা অনুভূতিগুচ্ছ সবই পুরাতন। সেই চিরপুরাতনকে নতুন শব্দ ও বাকভঙ্গিমায় চিরনতুন রূপেই কবি আমাদের সামনে তুলে আনতে সক্ষম। তাই প্রেমিক কবিমাত্রই পরম ঈশ্বর!
প্রেমিক কখনো বালকও বটে (কিংবা বালিকা); প্রেমে পাগল হলে সেটাই সংগত। তবু পরিণত কবির প্রেমপঙক্তি চিত্রপটে ধরে রাখে প্রেমের দর্শন, সূক্ষ্ম সঞ্জিবনী। সেখানে প্রাজ্ঞের অভিজ্ঞতার শাঁস, আর প্রতারিতের পতনের ফাঁস মিলেমিশে থাকতে পারে। এখন আমি সৈয়দ শামসুল হকের ‘ভালোবাসার দিনে’ পর্যটন করতে গিয়ে ছুঁয়ে যেতে পারছি ভালোবাসার ভুলগুলোকে, ফুলগুলোকে। কবি নির্দিষ্টভাবে নিজের কথা বলেন প্রেমের কবিতায়, আবার পৃথিবীর বহু প্রেমিকের বহুল স্বরও বেজে উঠতে পারে তাঁর শব্দে। নিজেকে শত প্রেমিকের মধ্যে হারিয়ে যেতে দেয়া, এবং শত প্রেমিককে নিজের মধ্যে ধারণ উভয়ই অসম্ভব নয়। অন্তত কবিতা রচনার ক্ষেত্রে এমনটা অস্বাভাবিক মনে হয় না। বলতে চাইছি, প্রতিটি প্রেমেরে কবিতার নায়ক অবধারিতভাবে স্বয়ং কবিই হবেন এটা স্বতঃসিদ্ধ নয়। তবু কবি যখন উচ্চারণ করেন, তা তাঁর নিজেরই জীবনের উচ্চারণ। অপরের প্রেমের অভিজ্ঞতা কবির নিজের ভালোবাসার উপলব্ধি না হলে তা কবিতা হবে কেন? একটি প্রেমকাব্য যদি প্রেমিকমাত্রেরই প্রেমকাব্য হয়ে উঠতে পারে (শতভাগ না হলেও) তবে সেটা অত্যন্ত সৌভাগ্যের। কবির চরণকে আউড়ে বলা যায়, এ তো আমারই অভিজ্ঞতা, কবি! আমি লিখিনি, আপনি লিখেছেন।
‘ তোমাদের মুখের ছবিতে অবিরাম এক নারীকেই তো আমি দেখেছি
পৃথিবীর প্রতিটি প্রেমিকের মুখের ভেতরে আমি দেখেছি আমারই মুখ।’
এ দুটো পঙক্তি বইয়ের উৎসর্গপত্র থেকে নেওয়া। বলতে পারি এ হলো প্রেমকাব্যের প্রবেশিকা বা মুখবন্ধ। অথচ প্রেমিক অহংকারী। সে নিজেকে ভাবে তার মতো প্রেমিক আর হয় না। তার চেয়ে কে বেশি ভালোবাসতে জানে? কেই বা এমন ফালি ফালি হয়, পোড়ে তীব্র অনলে! ভালোবাসা শব্দের বিপরীত শব্দ কি? আপনি বলবেন, ঘৃণা। যুক্তি সেটাই বলবে। কেউ বলতে পারেন উপেক্ষা, কিংবা উদাসীনতা। অপ্রেমও বটে। আমাদের প্রেমিক কবি সৈয়দ হক বলছেন ‘মৃত্যুদণ্ড’। ছোট্ট কবিতার পুরোটা পড়া যাক:
আমার নামের মানে রবি হয়, অথবা মার্তণ্ড।
যে যেমন দেখে থাকে প্রেমে কিংবা ক্রোধে।
কারো কাছে ভালোবাসা কারো কাছে প্রাণদণ্ড
দুটোই গ্রহণ করি পুরস্কারবোধে।
প্রাণদণ্ড তুমিই দিয়েছ!
ভালোবাসা? সেও তুমি- তুমিই দিয়েছ॥
আচ্ছা প্রেমের কবিতার বেলায় অন্ত্যমিল কি জরুরি? না, জরুরি নয়। মানে অপরিহার্য শর্ত নয়। তাহলে প্রশ্ন উঠতেই পারে, প্রেমের যে কবিতাগুলো আমাদের মনের ভেতর খোদিত হয়ে আছে, যেগুলো বহুল পঠিত, আবৃত্তিকারদের বাছাই-তালিকার শীর্ষে সেগুলোর বেশির ভাগই পারফেক্ট ছন্দে লেখা এবং তাতে রয়েছে মধ্যমিল অন্ত্যমিল। মিল মানেই সংগীতই তাতে বেজে বেজে ওঠে। কবিতায় এই যে গীতলতা এসে প্রেমের পঙক্তিকে বাজিয়ে দিয়ে যায়, এটা ওষ্ঠের উচ্চারণ ও শ্রুতির সংবেদনের জন্য আরামপ্রদ। কবিতাগ্রন্থের শেষ প্রচ্ছদের ছ’পঙক্তির ছলটুকু চেখে দেখা যাক। ছটি চরণে একই মিল পাঠককে ধন্দে ফেলে দেওয়ার কৌশল এ কোনো নবীন কবির রচনা নয়কি? ওই উচ্চারণ নবীন প্রেমিকের তো বটেই। তাই এমন কৌশল পাঠককে আরো কৌতূহলী করে তোলে অনাঘ্রাত রসাস্বাদনের আকাঙ্ক্ষায়।
ভালোবাসার জলে আমার তোমার সঙ্গে নাওয়া
আমি তোমার আদম, তুমি আমার পাশে হাওয়া।
তোমার পাশেই এখন আমার বেহেশতকে পাওয়া
...
প্রচ্ছদ-পার্শ্বে (ব্লার্বে) চৌদ্দ মাত্রার অক্ষরবৃত্তের অন্তমিল লক্ষ করা যাক :
তুমি যে সেজেছ লাল সোনালি শাড়িতে,
রাজপথে নয় যেন বিয়ের বাড়িতে
আমার হৃদয় ভেঙে বাজে যে সানাই
সারাদিন শুনি আমি, তুমি শোনো নাই
যখন আকাশ ক্রমে লাল হয়ে ওঠে
তখন সেনালি শব্দ ‘ভালোবাসা’ ফোটে
তারায় তারায়, চাঁদ ধরায় আগুন।
তখন সানাই পায় ইমনের ধুন॥
সহজ মিলের (শাড়িতে/ বাড়িতে) মিছিলের শেষটায় গিয়ে প্রচলতাকে ভেঙে দেওয়া। শানাইয়ের বিপরীতে শোনো নাই-ও আমাদের কানে চমক নিয়ে আসে। কিন্তু আগুন শব্দের সঙ্গে ‘ইমনের ধুন’ দিয়ে সূচনার সহজতাকে এক পলকে নিয়ে যান গভীর গহীনে।
এখানে কয়েকটি চরণ উদ্ধৃত করছি যেগুলো তুলনা-উপমায়, ধ্বনিতে-উচ্চারণে বাংলা কবিতায় স্বতন্ত্র ও অভিনব। এমনভাবে কোনো বাঙালি কবির কলম বলে ওঠেনি। এই প্রাপ্তিগুলো অসামান্য, তাৎপর্যবহ।
বইছে হাওয়া এলোমেলো জ্বরের মৌসুম-ই।
অ্যাসপিরিনের মোড়ক ছিঁড়ে বেরিয়ে এসো তুমি।
...
যদি আমার জ্বরের মুখে হাত রাখতে তুমি
বাংলাদেশের বৃষ্টি পেত আরব মরুভূমি!
(৭ সংখ্যক কবিতা)
খ.
তোমার চুল উড়ছে হাওয়ায়, বস্ত্র তোমার সেঁটে যাচ্ছে শরীরে
আমার ঝড় তুমি গ্রহণ করেছ বৃক্ষের মতো সহজে
গ.
দেখি যত নদী ঢেউ তার দেখি তোমার শাড়ির ভাঁজে।
জোছনার চাঁদ কামিজের ভাঁজে
ঘন অরণ্য পাজামার ভাঁজে।
আমার হৃদয় হাহাকার করে বিছানার প্রতি ভাঁজে ॥
(৬৮ সংখ্যক কবিতা)
ঘ.
ভালোবাসা এ তো নয় কথা শুধু কথা।
ভালোবাসা- আঙুলের সেই সক্ষমতা
যাতে ভরে দেয়া যায় এই পৃথিবীকে
তোমার একটি নাম কোটি বার লিখে
(৭১ সংখ্যক কবিতা)
এ কাব্য প্রসঙ্গেই সরাসরি একবার কবির কাছে আজকের এক তরুণ কবি প্রশ্ন রেখেছিলেন ‘এই বিপুল প্রেমের উৎসভূমি কোথায়?’
সৈয়দ শামসুল হক উত্তরে জানান : “উৎস হচ্ছে মানবজীবন। প্রেম বলতেই আমাদের এখানে তরুণ-যুবা-অবিবাহিত ব্যক্তিদের ব্যাপার বলে মনে করা হয়। কিন্তু প্রেম তো একটি জীবনব্যাপী ক্রিয়া। জীবনের নানা পর্যায়ে প্রেমের প্রতি অবলোকন পরিবর্তিত হয়। রবীন্দ্রনাথের কবিতা ও গানে দেখা যাবে প্রেমের কত বিচিত্র রূপ সেখানে প্রকাশিত। ‘মৃত্যুর মুখে দাঁড়ায়ে বলিব তুমি আছ, আমি আছি’ এই উচ্চারণ যুবা বয়সে সম্ভব নয়। আমার এখন ৭৬ চলছে। প্রেমকে এখন ঘন অনুভূতির ধরনে দেখছি। কবিতার বিষয় তো আর আকাশ থেকে আসে না। প্রেম বলতেই আমরা নরনারীকেন্দ্রিক প্রেমকে বুঝে থাকি, কিন্তু ঈশ্বরপ্রেম, ভ্রাতৃপ্রেম, দেশপ্রেম, ভাষাপ্রেম ইত্যাদি প্রেম তো মিথ্যা নয়। আমার নিজের কথা বলতে পারি? বায়ান্ন সালে ভাষা আন্দোলনের সময়, আটান্নর সামরিক শাসন জারির পর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময়, পঁচাত্তরের বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর অর্থাৎ জাতীয় জীবনের সংকটে-সংগ্রামে দেশমাতাকে নিয়ে যে প্রেম অনুভব করেছি, তা নারীপ্রেমের চেয়েও মহত্তর প্রেম বলে মনে করি।
আমি প্রেমিক। এমনকি এখন যখন আমার নাতনিও প্রেমে পড়ার বয়সে এসে উপনীত, তখনো আমার প্রেম-তৃষ্ণা নিবৃত্ত হয়নি। তাই আমি যে প্রেমের কবিতা লিখব, তা খুবই স্বাভাবিক। আমার প্রেমের উৎস আমি নিজেই। উৎস আমার বোধ, অভিজ্ঞতা।”
কবি সৈয়দ শামসুল হক, শুভ জন্মদিন। আজ একখানা টাটকা নতুন সাক্ষাৎকার আপনার শুনতে পাব না, এটা সত্যি। বিগত কয়েকটি বছরে আপনার জন্মদিনে কমপক্ষে তিনটে করে সাক্ষাৎকার পেতাম আমরা। সাক্ষাৎকার মানে একান্ত কথামালা। নিজের কথা। সেসব আলাপচারিতায় আজ আবার কান পাতব। চোখ বুজলে দেখব এক আশ্চর্য পাঠাগার জেগে আছে। তার একেকটি বুকশেলফে একেক ধরনের গ্রন্থ, সব আপনারই লেখা। এ ক্ষেত্রে আপনি এক ও অদ্বিতীয় এই বাংলায়। কোনো শেলফে গল্পের বই, কোনোটায় উপন্যাস, একটা পুরো র্যাক ভরে আছে কাব্যনাট্যে, আরেকটা শেলফ ভর্তি শুধু কবিতারই বই। কাছেই আরেকটা শেলফে অনেক অনেক গদ্যের বই, অনুবাদও বা বাকি যায় কেন? এত বই, এত আলো! ‘সৈয়দ শামসুল হক পাঠকক্ষে’ আজ আমাদের আরেকবার প্রবেশ হোক, সাহিত্যের পাতাগুলো থেকে আলো ঠিকরে বেরুতে থাকুক অক্ষরের, ধ্বনির, আশা ও সম্ভাবনার। সর্বোপরি বোধের, জীবনকে ভালোবাসার।