‘আজ আরও অভিনেত্রী কোর্টে এলে, সব আইনজীবী এজলাসে চলে আসবেন’
‘আজ সিএমএম আদালতে আরও অভিনেত্রীর শুনানি থাকলে কোন আইনজীবী বাইরে থাকবে না। সবাই তাদের দেখতে এজলাসে চলে আসবে’ বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আতিকুল ইসলাম।
আজ বৃহস্পতিবার চিত্রনায়িকা পরী মণির রিমান্ড শুনানির সময় বিচারক এই কথা বলেন। বিচারক আরও বলেন, ‘পরী মণিকে দেখতে যারা এসেছেন, তাদের দেখা হয়ে গেলে চলে যান।’ এ সময় আদালতে হাসির রোল পড়ে যায়।
পরী মণিকে আজ আদালতের এজলাসে ১১টা ৩০ মিনিটে হাজির করা হয়। তাঁকে দেখতে শত শত আইনজীবী এজলাসে ভিড় জমান। সে সময় এজলাস ও বাইরে তিল ধারণের ঠাঁই ছিলে না। পরী মণিকে এজলাসে আনার পরে তাঁর মামলার শুনানি শুরু না হওয়ায়, আইনজীবীরা হৈ চৈ শুরু করে দেন। সে সময় বিচারক বলেন, ‘পরী মণির নথি শুনানি হচ্ছে না, তার নিশ্চয় কোনো কারণ আছে। বাসে দেখবেন, যখন খালি সিট থাকে সবাই দৌড় দিয়ে সেই সিটে বসতে যায়। কিন্তু সেখানে কাহিনী আছে। সিটে দেখবেন হয়তো কেউ বমি বা কেউ প্রসাব করেছে। তাই পরী মণির নথি শুনানি না হওয়ার পেছনে নিশ্চয়ই কোনো কারণ আছে।’
এর পরে পরী মণির রিমান্ড শুনানি শুরু হয়। বিচারক শুনানি শেষে পরী মণির এক দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। তবে সে রিমান্ড তিন দিনের মধ্যে কার্য করার জন্য নির্দেশ দেন বিচারক।
এদিকে আজ সকাল সাড়ে ৮টার দিকে গাজীপুরের কাশিমপুর কারাগার থেকে পরী মণিকে ঢাকার সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। এর আগে গতকাল পরী মণিকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
এর আগে গত শুক্রবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে পরী মণিকে সিএমএম আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর মামলার তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক গোলাম মোস্তফা।
গত ৪ আগস্ট পরী মণিকে তাঁর বনানীর বাসা থেকে আটক করে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। অভিযানে নতুন মাদক এলএসডি, মদ ও আইস উদ্ধার করা হয় বলে দাবি করে র্যাব। তাঁর ড্রয়িংরুমের কাবার্ড, শোকেস, ডাইনিংরুম এবং বেডরুমের সাইড টেবিল ও টয়লেট থেকে বিপুল মদের বোতল উদ্ধার করা হয় বলেও দাবি করা হয়। পরদিন ৫ আগস্ট বিকেলে র্যাব সদর দপ্তর থেকে পরী মণি, প্রযোজক ও অভিনেতা মো. নজরুল ইসলাম রাজ ও তাঁদের দুই সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপু ও মো. সবুজ আলীকে বনানী থানায় সোপর্দ করে র্যাব। এরপর র্যাব বাদী হয়ে পরী মণি ও তাঁর সহযোগী দীপুর বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করে৷ সেদিন রাত ৮টা ২৪ মিনিটে পরী মণি ও তাঁর সহযোগীকে ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়। এরপর বনানী থানার মামলায় তাঁদের সাত দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। এ সময় আসামিপক্ষে তাঁদের আইনজীবী রিমান্ড বাতিল চেয়ে আবেদন করেন। অন্যদিকে, রাষ্ট্রপক্ষ রিমান্ডের পক্ষে শুনানি করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাঁদের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এরপর ১০ আগস্ট পরী মণি ও তাঁর সহযোগী দীপুকে আদালতে হাজিরের পর ফের পাঁচ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করে মামলার তদন্ত সংস্থা সিআইডি। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে আদালত তাঁদের দুই দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
দুই দফায় রিমান্ড শেষে গত ১৩ আগস্ট পরী মণি ও তাঁর সহযোগী আশরাফুল ইসলাম দীপুকে আদালতে হাজির করা হলে আদালত তাঁদের জামিন আবেদন খারিজ করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।