আজ থেকে আবারও প্রথম ডোজের টিকা দেওয়া শুরু
আজ বৃহস্পতিবার (১ জুলাই) থেকে আবারও সারা দেশে প্রথম ডোজের টিকা কার্যক্রম শুরু হচ্ছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের লাইন ডিরেক্টর এবং টিকা কর্মসূচির পরিচালক ডা. শামসুল হক।
ডা. শামসুল হক বলেন, ‘আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) সারা দেশব্যাপী সিনোফার্মের টিকা কার্যক্রম শুরু হতে যাচ্ছে। সারা দেশের সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সব জেলা সদর হাসপাতালসহ চট্টগ্রামের বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ট্রপিক্যাল অ্যান্ড ইনফেকশন ডিজিজেস হাসপাতাল ও সৈয়দপুর সদর হাসপাতালে প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত টিকা দেয়া হবে।’
ডা. শামসুল হক গতকাল বুধবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের নিয়মিত করোনা বুলেটিনে বলেন, ‘ঢাকা শহরের মধ্যে আমরা পূর্বে ৪৮টি কেন্দ্রে টিকা কার্যক্রম শুরু করেছিলাম, কিন্তু এই মুহূর্তে আটটি কেন্দ্রকে বাদ দিয়ে ৪০টি কেন্দ্রে পুরোদমে টিকাদান কার্যক্রম চালু করব।’
শামসুল হক আরও বলেন, অগ্রাধিকার তালিকায় যাঁরা আছেন, বিশেষ করে আমাদের মেডিকেল, নার্সিং, ম্যাটস শিক্ষার্থীরা টিকা পাবেন। একইসঙ্গে আমাদের সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রী, পুলিশ বাহিনীর লোকজন এবং অন্যান্য অগ্রাধিকার কর্মীরারাও টিকা নিতে পারবেন। এ ছাড়া যাঁরা আগে নিবন্ধন করে টিকা নিতে পারেননি, তাঁরা নিতে পারবে।
‘অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে যাঁরা টিকা পাওয়ার যোগ্য, তাদের জন্য আজ থেকে নিবন্ধন কার্যক্রম খুলে দেওয়া হচ্ছে। নিবন্ধনের পর কেন্দ্র থেকে যখন এসএমএস আসবে, তখন সে অনুযায়ী কেন্দ্রে গিয়ে টিকা নেবেন। এ ক্ষেত্রে অবশ্যই টিকা কার্ড ও এনআইডি সঙ্গে নিয়ে যাবেন’, যোগ করেন ডা. শামসুল হক।
ডা. শামসুল হক আরও বলেন, ‘আমাদের করোনার টিকাদান কেন্দ্রগুলো লকডাউনের আওতাবহির্ভূত থাকবে। টিকা নেওয়ার জন্য বের হওয়া কাউকে যদি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জিজ্ঞাসা করে, তাহলে টিকা কার্ডটি দেখাবেন এবং কোন কেন্দ্রে যাচ্ছেন সেটি বলবেন।’
‘করোনাভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধে বিদেশগামী প্রবাসী কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্রের ফাইজার এবং চীনের সিনোফার্মের দুই টিকাই দেওয়া হবে। এ ক্ষেত্রে সৌদিআরব, কুয়েতসহ যেসব সিনোফার্মের টিকা নিয়ে জটিলতা রয়েছে, শুধু তাঁদেরই ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। আর বাকি সব প্রবাসীদের দেওয়া হবে সিনোফার্মের টিকা।’
‘যেসব কেন্দ্র থেকে আমাদের সিনোফার্মের টিকা দেওয়া হবে, সেসব কেন্দ্রে আমাদের প্রবাসী শ্রমিকেরা নিবন্ধন করে টিকা নিয়ে কার্ড সংগ্রহ করে বিদেশ যেতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে রেজিস্ট্রেশনের বিষয়টি দেখবে জনশক্তি উন্নয়ন ব্যুরো। সেখান থেকে আমাদের কাছে তালিকা এলেই আমরা সেটি সুরক্ষা সার্ভারে দিয়ে দেব। এরপরই তাঁরা নিবন্ধন করতে পারবেন।’
ডা. শামসুল হক আরও বলেন, ‘আমাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শুধু যাঁরা প্রবাসী শ্রমিক এবং যেসব দেশে ফাইজার-মডার্না টিকা ছাড়া প্রবেশে জটিলতা রয়েছে তাঁদেরই ফাইজারের টিকা দেওয়া হবে। আমাদের জানামতে সৌদিআরব, কুয়েতসহ কয়েকটি দেশে নির্দেশনা আছে যে, ফাইজার বা মডার্নার টিকা ছাড়া যেতে পারবে না। সেসব দেশের প্রবাসী শ্রমিকেরা ফাইজারের টিকা নেবেন, তবে এ ক্ষেত্রেও জনশক্তি উন্নয়ন ব্যুরোর মাধ্যমে আমাদের কাছে তালিকা আসতে হবে।’
নিবন্ধন ছাড়া কাউকে টিকা দেওয়া হবে না উল্লেখ করে ডা. শামসুল হক আরও বলেন, প্রবাসী শ্রমিকেরাও যদি নিবন্ধন ছাড়া টিকা কেন্দ্র এসে ভিড় জমান, তবুও কাউকে তাৎক্ষণিক নিবন্ধন করে টিকা দেওয়া হবে না।
‘যাঁরা টিকা নেবেন, তাঁদের তালিকাটা আমাদের কাছে আসবে জনশক্তি উন্নয়ন ব্যুরোর মাধ্যমে। সে অনুযায়ী নিবন্ধন করে নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী কেন্দ্র থেকে টিকা নিতে পারবেন’, বলেন ডা. শামসুল হক।
যে সাত কেন্দ্রে দেওয়া হবে ফাইজারের টিকা
ডা. শামসুল হক বলেন, ফাইজারের টিকা কার্যক্রম আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) থেকে চালু হবে। সারা দেশে এই টিকা পরিবহণ করা কঠিন, তাই আমরা শুধু ঢাকায় সাতটি কেন্দ্র নির্ধারণ করেছি। কেন্দ্রগুলো হলো ঢাকা মেডিকেল কলেজ, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতাল, শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার হাসপাতাল ও কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল।
ডা. শামসুল হক বলেন, ‘আমাদের টিকা কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত আছে। আগামীকাল (আজ বৃহস্পতিবার) থেকে কেন্দ্রগুলোতে অগ্রাধিকারের তালিকার ভিত্তিতে টিকা প্রয়োগ শুরু হবে।’