আন্দোলনের মধ্য দিয়ে সত্যিকারের গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব : মির্জা ফখরুল
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, ‘আমরা যে যুদ্ধে নেমেছি আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই যুদ্ধে জয়ী হবই হব। সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করব।’
গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আজ শনিবার (১৪ জানুয়ারি) বিকেলে এক অনুষ্ঠানে মির্জা ফখরুল এসব কথা বলেন।
বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আমাদের হাজার হাজার নেতারা আটক রয়েছে, কিন্তু কারও মুখে ক্লান্তি, হতাশা দেখিনি; দেখেছি উজ্জীবিত মুখ। যতই নির্যাতন আসুক, যতই নিপীড়ন আসুক, আমরা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই ভয়াবহ দানবকে পরাজিত করব।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘যারা প্রাণ দিয়েছেন, তারা একটি আদর্শ ও লক্ষ্যের জন্য প্রাণ দিয়েছেন। সে আদর্শ এবং লক্ষ্য হচ্ছে তার নিজের দেশকে মুক্ত করা, সকল মানুষের অধিকারকে প্রতিষ্ঠা করা। বাংলাদেশে সত্যিকার অর্থে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য তাঁরা প্রাণ দিয়েছেন।’
ফখরুল আরও বলেন, ‘গত ২২ আগস্ট থেকে গণতন্ত্রকে মুক্ত করার জন্য আমরা যে কর্মসূচি শুরু করেছি, এই কর্মসূচিতে আমাদের ১৫ জন নেতাকর্মীর প্রাণ দিয়েছেন। এই ভয়াবহ অগণতান্ত্রিক, একনায়কতন্ত্র সরকার টিকে থাকার জন্য তারা অত্যাচার নির্যাতন চালিয়ে যাচ্ছে। পুলিশের গুলিতে ও আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীদের নির্যাতনে প্রায় ১৫ জন ভাই মারা গেছেন। তারা বীরের মতো, তারা কেউ পিছনে পালাতে গিয়ে শহীদ হননি; সামনে দাঁড়িয়ে বুক পেতে দিয়ে তাঁরা চলে গেছেন। আমাদের নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করেছেন, আরও ত্যাগ স্বীকার করার জন্য আমাদের সহকর্মীরা শপথগ্রহণ করেছেন।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘তাঁদের এই শাহাদাত তাঁদের পরিবারকে অসহায়ত্বের মধ্যে ফেলে দিয়েছে। তাঁরা দেশের জন্য দেশপ্রেমের জন্য যে আত্মত্যাগ করেছেন, তা ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। এটা তাদের জন্য গৌরবের কারণ হয়ে থাকবে।’
ফখরুল বলেন, ‘যুগে যুগে এই বিসর্জন দিতে হয়, প্রাণ দিতে হয় বড় কিছু করতে হলে। ৭১ সালে স্বাধীনতার যুদ্ধে আমাদের লাখ লাখ প্রাণ দিতে হয়েছে, তখন অনেক পরিবার অসহায় হয়ে পড়েছে। আজকে বড় এক দুঃসময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, একটি বর্বর শক্তি আমাদের সমস্ত অর্জন গুলোকে ধ্বংস করে দিয়েছে তছনছ করে দিয়েছে।’
এ সময় চলমান আন্দোলন সংগ্রামে নিহত তিন নেতার পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেয় বিএনপি। এতে বাগেরহাট জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম ভূঁইয়া তানুর স্ত্রী কানিজ ফাতেমা, মেয়ে তানজিনা তাশমি ও শ্বশুর শেখ আওরঙ্গজেব উপস্থিত ছিলেন। আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগর পল্লবী থানা ৫ নং ওয়ার্ড স্বেচ্ছাসেবক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মকবুল হোসেনের স্ত্রী হালিমা আক্তার বর্ষা ও মেয়ে মিতিলা আক্তার মারিয়া।
এ ছাড়া পঞ্চগড় জেলা বোদা উপজেলা ময়দানদীঘি বিএনপি যুগ্ম আহ্বায়ক আব্দুর রশিদ আরেফিনের স্ত্রী শিরিন আক্তার ও ছেলে মোহাম্মদ আব্দুল আল মাহি উপস্থিত ছিলেন।
বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য জমির উদ্দিন সরকার, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুল হাবিব দুলু, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি এসএম জিলানী, সাধারণ সম্পাদক রাজিব আহসান, সাংগঠনিক সম্পাদক ইয়াসিন আলী প্রমুখ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।