আবরার হত্যা : আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি চায় পরিবার
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আবরার ফাহাদ রাব্বী (২২) হত্যা মামলার রায় হবে আগামীকাল রোববার। আলোচিত এ হত্যা মামলার সব আসামির ফাঁসি চায় তাঁর পরিবার। ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল-১ এর আদালতে এ রায় ঘোষণা করা হবে।
কুষ্টিয়া শহরের পিটিআই সড়কের বাসায় আবরারের মা রোকেয়া খাতুন আজ শনিবার বিকেলে বলেন, ‘হত্যাকারীদের কঠিন শাস্তি নিশ্চিত করলে আর কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মেধাবী শিক্ষার্থীদের এভাবে চলে যেতে হবে না। ওদের সর্বোচ্চ শাস্তি না হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে হত্যাকাণ্ড চলতেই থাকবে।’
চোখ মুছতে মুছতে আবরারের মা বলেন, ‘আজ আমার ছেলে গিয়েছে, কাল আরেক মায়ের বুক খালি হবে। আমার মতো আর যেন কোনো মায়ের কষ্ট নিতে না হয়।’
আবরারের মা সব আসামির মৃত্যুদণ্ডের আদেশের পাশাপাশি দ্রুত রায় কার্যকরের দাবি জানান।
আবরার ফাহাদের ছোট ভাই আবরার ফাইয়াজ বলেন, ‘আমরা সর্বোচ্চ শাস্তির রায় আশা করছি। ভাইয়ের রায় শুনতে আব্বার সঙ্গে আমিও ঢাকায় যাব। আমাদের সঙ্গে পরিবারের আরও অনেকে যাবেন।’
২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর দিবাগত রাতে বুয়েটের শেরেবাংলা হলের একটি কক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা আবরারকে পিটিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় ১৯ জনকে আসামি করে ৭ অক্টোবর চকবাজার থানায় একটি হত্যা মামলা করেন আবরারের বাবা।
২০১৯ সালের ১৩ নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক (নিরস্ত্র) মো. ওয়াহিদুজ্জামান ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
এ মামলায় আসামিরা হলেন—বুয়েট ছাত্রলীগের বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান রাসেল, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মুহতামিম ফুয়াদ, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক মো. অনিক সরকার ওরফে অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক মেহেদী হাসান রবিন ওরফে শান্ত, আইনবিষয়ক উপসম্পাদক অমিত সাহা, উপসমাজসেবাবিষয়ক সম্পাদক ইফতি মোশাররফ সকাল, ক্রীড়া সম্পাদক মো. মেফতাহুল ইসলাম জিয়ন, গ্রন্থ ও প্রকাশনাবিষয়ক সম্পাদক ইশতিয়াক আহম্মেদ মুন্না, কর্মী মুনতাসির আল জেমি, খন্দকার তাবাখখারুল ইসলাম তানভীর, মো. মুজাহিদুর রহমান, মো. মনিরুজ্জামান মনির, আকাশ হোসেন, হোসেন মোহাম্মদ তোহা, মো. মাজেদুর রহমান মাজেদ, শামীম বিল্লাহ, মুয়াজ ওরফে আবু হুরায়রা, এ এস এম নাজমুস সাদাত, আবরারের রুমমেট মিজানুর রহমান, শামসুল আরেফিন রাফাত, মোর্শেদ অমত্য ইসলাম, এস এম মাহমুদ সেতু, মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ।
আসামিদের মধ্যে মুহাম্মদ মোর্শেদ-উজ-জামান মণ্ডল ওরফে জিসান, এহতেশামুল রাব্বি ওরফে তানিম ও মুজতবা রাফিদ পলাতক। বাকি ২২ জন গ্রেপ্তার আছেন। এ মামলায় আটজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
করোনাভাইরাসের কারণে আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকায় মামলার বিচারকাজ অনেকদিন বন্ধ ছিল।