আমরা চাই দেশে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকুক : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, নতুন প্রযুক্তির আবির্ভাবের সাথে সাথে অপরাধের ধরন পরিবর্তিত হয়েছে। এর পরিপ্রেক্ষিতে জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে প্রথাগত ও অপ্রথাগত হুমকি মোকাবিলায় জোর দেওয়া হচ্ছে। আমরা চাই দেশে একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ থাকুক।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ মঙ্গলবার মিরপুর সেনানিবাসের ডিফেন্স সার্ভিস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি) ‘ডিএসসিএসসি কোর্স ২০২২’এর গ্রাজুয়েশন সেরিমনিতে শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সে গ্রাজুয়েটদের মধ্যে সনদ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ‘ট্রাডিশনাল সিকিউরিটি থ্রেট’এর পাশাপাশি ‘নন ট্রেডিশনাল সিকিউরিটি থ্রেট’ প্রতিহত করাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। এখন নিরাপত্তার বিষয়টি অনেক বদলে গেছে। ডিজিটাল ডিভাইস যেমন আমাদের অনেক সুযোগ করে দিয়েছে। তেমনি সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ কিংবা অপরাধের ধারাটাও পাল্টে গেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা চাই একটা শান্তিপূর্ণ পরিবেশ দেশে থাকুক, সেভাবেই আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি এবং আমাদের লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ অর্থাৎ বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষই এই ডিজিটাল ডিভাইস সম্পর্কে জানবে, ব্যবহার করবে।
শেখ হাসিনা বিশ্ব সম্প্রদায়ের কল্যাণে অবিলম্বে রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ করতে বিশ্ব নেতাদের প্রতি আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করে বলেন, আমরা যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। আমরা আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সকল বিরোধ ও মতভেদ দূর করতে চাই। সরকার সশস্ত্র বাহিনীকে উন্নত ও শক্তিশালী করে চলেছে। কিন্তু সেটা কারো সঙ্গে যুদ্ধ করার জন্য নয়।
তিনি বলেন, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি, ‘সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’খুব স্পষ্ট। আমরা জাতির পিতার গৃহীত পররাষ্ট্রনীতি অনুসরণ করে সকলের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে রাষ্ট্র পরিচালনা করছি। জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের নিজ ভূমিতে প্রত্যাবাসন নিয়ে তারা মিয়ানমারের সঙ্গে কোনো বিবাদে জড়াননি। আমরা আলোচনার মাধ্যমে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছি।
প্রধানমন্ত্রী প্রতিবেশি ভারত ও মিয়ানমারের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রেখে আইনি লড়াইয়ে জয়ী হয়ে আলোচনার মাধ্যমে ভারতের সঙ্গে স্থল সীমানা সমস্যা সমাধান এবং বিশাল সমুদ্র এলাকা ও এর সম্পদের অধিকার প্রতিষ্ঠার কথা উল্লেখ করেন।
তিনি আবারও দেশবাসীকে ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং তারল্য নিয়ে গুজবের বিরুদ্ধে সতর্ক করে বলেন, “একটি স্বার্থান্বেষী মহল ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এবং তারল্য নিয়ে গুজব ছড়ানোর চেষ্টা করছে, গুজবে কান দেবেন না। ব্যাংকে পর্যাপ্ত বৈদেশিক রিজার্ভ রয়েছে।
শেখ হাসিনা বলেন, তার সরকার ২০০৮ সালের নির্বাচনি ইশতেহারে উল্লিখিত রূপকল্প-২০২১ অনুযায়ী বাংলাদেশকে একটি ডিজিটাল ও উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তর করতে সক্ষম হয়েছে। জাতি যখন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে তখন বাংলাদেশকে একটি উন্নয়নশীল দেশে পরিণত করা আমাদের জন্য একটি বড় অর্জন। আমরা এখন রূপকল্প-২০৪১ বাস্তবায়নের মাধ্যমে বাংলাদেশকে একটি উন্নত, সমৃদ্ধ ও ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’কে একটি ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’রূপান্তর করতে প্রস্তুত।