আশুগঞ্জে অগ্নিকাণ্ডে দগ্ধ রেখারও মৃত্যু, রইল না কেউ পরিবারে
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় স্বামী ও দুই ছেলে এবং নবজাতকের পর চলে গেলেন গৃহবধূ রেখা বেগমও (৩৫)। গতকাল সোমবার রাত ১১টার দিকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মৃত রেখার চাচাশ্বশুর ও আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি শরীফ হোসাইন।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাতে উপজেলার আশুগঞ্জ বাজারের আলাই মোল্লা ভবনে অগ্নিকাণ্ডে ভাড়াটিয়া স্কুলশিক্ষক মকবুল মিয়া (৪২), তার অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী রেখা বেগম, ছেলে আরিফ হোসেন জয় (১১) ও জুবায়ের হোসেন (৭) দগ্ধ হয়। এ ঘটনায় একে একে মারা গেল পরিবারের সবাই।
জানা যায়, ১৩ বছরে আগে জেলার নবীনগরের রেখা বেগমকে বিয়ে করেন আশুগঞ্জ উপজেলার শরীফপুরের সফর মিয়ার ছেলে মকবুল মিয়া। মকবুল মিয়া ছিলেন সাবেক ইউপি সদস্য ও ইউপি স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি। পেশায় তিনি সহকারী শিক্ষক ছিলেন।
বিয়ের পর তাদের সংসারে দুই ছেলে সন্তান জন্ম নেয়। মকবুল দুই ছেলে ও স্ত্রীকে নিয়ে আশুগঞ্জ উপজেলা সদরে ভাড়া বাসায় বসবাস করতেন। রেখা ছিলেন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা।
গত ২২ ফেব্রুয়ারি রাত সাড়ে ১০টার দিকে হঠাৎ মকবুলের বাসায় বিস্ফোরণের বিকট শব্দ শোনা যায়। তাৎক্ষণিক তার বাসা থেকে প্রথমে ধোঁয়া বের হয়। একপর্যায়ে আগুন চারপাশে ছড়িয়ে পড়ে।
এ সময় মকবুল হোসেন, তার স্ত্রী, ছেলে জয় ও জুবায়ের কক্ষে আটকা পড়ে। এতে ওই পরিবারের চারজনই দগ্ধ হয়। অগ্নিদগ্ধদের উদ্ধার করে ঢাকায় নেওয়ার পথে মকবুলের ছোট ছেলে জুবায়ের মারা যায়। ঘটনার পরের দিন ২৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে মকবুল মিয়া মারা যান। স্বামী মারা যাওয়ার পর ওই দিন রাতে দগ্ধ রেখা একটি মৃত সন্তান প্রসব করেন।
গত রোববার চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় মকবুলের বড় ছেলে জয়। সর্বশেষ গতকাল রাত ১১টার দিকে মকবুলের স্ত্রী রেখা বেগমও আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে এই পরিবারের পাঁচজনই মারা গেল।