ঋণের প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকের কোটি টাকা আত্মসাৎ, গ্রেপ্তার ২
গাজীপুরে ঋণ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সাধারণ মানুষের কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে একটি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমিতির কর্মকর্তারা। এ ঘটনায় দুই প্রতারককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে গাজীপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান এ তথ্য জানিয়েছেন।
গ্রেপ্তাকৃতরা হলেন পিরোজপুরের ভাণ্ডারিয়া উপজেলার নথমুলা এলাকার মিজানুর রহমান (৩৭) এবং একই উপজেলার ধাওয়া এলাকার হাফিজুর রহমান (৩২)। তারা গাজীপুরের গাছা থানা এলাকায় ভাড়া বাসায় থাকে।
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাকছুদের রহমান জানান, গত ২০১৯ সালে গাজীপুর সিটি করপোরেশনের গাছা থানাধীন কলমেশ্বরের আইইউটি গেইট এলাকার হাসেম মার্কেটের দ্বিতীয় তলায় ‘বোর্ড বাজার প্রতিভা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড’ নামের একটি অফিস ভাড়া নেয় শাহীন আলম, মিজানুর রহমান ও হাফিজুর রহমানসহ কয়েক ব্যক্তি। তারা এ সমিতির মাধ্যমে ঋণ দেওয়ার লোভ দেখিয়ে ৬০০ থেকে সাড়ে ৬০০ মানুষকে সদস্য করেন। এসব সদস্যদের কাছ থেকে সঞ্চয়ের নামে প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। এক পর্যায়ে তারা সদস্যদের টাকা আত্মসাৎ করে অফিসে তালা ঝুলিয়ে গা ঢাকা দেয়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, গত ১৭ অক্টোবর এক সদস্য সমিতির অফিসে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখতে পান। পরবর্তীতে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করে জমা দেওয়া টাকা ও কর্মকর্তাদের খুঁজে পান না। পরে জিএমপির গাছা থানায় মামলা করেন ভুক্তভোগী এক সদস্য। এরপর গাছা থানা পুলিশ মামলাটির তদন্ত শুরু করে। পরবর্তীতে মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় গাজীপুরের পিবিআইকে। আজ বুধবার রাতে মামলার আসামি মিজান ও হাফিজুরকে গ্রেপ্তার করেন তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের উপপরিদর্শক (এসআই) মো. আরিফুল ইসলাম।
এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তারকৃত প্রতারকরা।
পুলিশ সুপার আরও জানান, গ্রেপ্তারকৃত মিজানুর রহমান ও হাফিজুর রহমান প্রথমে গার্মেন্টসে চাকরি করতেন। তাদের সঙ্গে পরিচয় হয় মামলার অপর আসামি শাহিন আলমের। শাহীন প্রথমে নিউ লাইফ মাল্টি প্রোডাক্টস্ লিমিটেডে ব্যবসা করতেন। পরিচয়ের সূত্রধরে এ ব্যবসায় যুক্ত হন আসামি মিজান ও হাফিজুরের সঙ্গে। এ তিনজনসহ অপর পাঁচ থেকে ছয়জন মিলে প্রতিষ্ঠা করে ‘বোর্ড বাজার প্রতিভা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি লিমিটেড।’ তারা ঋণ ও সুদ দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে সমিতিতে ভর্তি করিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে সঞ্চয় সংগ্রহ করেন। সুদসহ আসল পরিশোধ করার অঙ্গীকার করলেও পরবর্তীতে তারা কোনটি পরিশোধ না করে সম্পূর্ণ টাকা আত্মসাৎ করে পালিয়ে যান।