এসএসসি-এইচএসসি ও পিইসি পরীক্ষার্থীদের প্রতিদিন ক্লাস
করোনা মহামারির মধ্যে দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর বন্ধ থাকার পর আগামী ১২ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। তবে প্রাথমিকভাবে শুধু এসএসসি, এইচএসসি ও পঞ্চম শ্রেণির পিইসি পরীক্ষার্থীরা প্রতিদিন ক্লাসে যাবে। আর বাকি ক্লাসগুলোর শিক্ষার্থীরা সপ্তাহে একদিন স্কুলে যাবে।
আজ রোববার আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি সংবাদ সম্মেলনে গণমাধ্যমকে এই তথ্য জানান। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষের এ বৈঠকে আরও অংশ নেন কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন ও যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘শুধুমাত্র ২০২১ ও ২০২২ সালে যারা পিইসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা দিবে, তারা প্রতিদিন ক্লাসে আসবে। আর অন্যরা (প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয়, চতুর্থ, ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম, নবম শ্রেণি) সপ্তাহে একদিন করে ক্লাস করবে।’
‘প্রাথমিকভাবে পূর্ণঘণ্টা ক্লাস হবে না। প্রতিদিন আট ঘণ্টার পরিবর্তে চার-পাঁচ ঘণ্টা ক্লাস হবে। ধাপে ধাপে সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করা হবে।’
এ সময় স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষার ব্যাপারে মন্ত্রী বলেন, পরিস্থিতি অনুকূলে থাকলে যদি পিইসি, জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নেওয়া যায় তাহলে বার্ষিক পরীক্ষা নেওয়া কোনো ব্যাপারই না। পরিস্থিতি বুঝে সেটি নেওয়া যাবে।
বাংলাদেশে গত বছর ৮ মার্চ প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর ১৭ মার্চ থেকে সারা দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী স্কুলের সামনে, ফটকে ভিড় এড়ানোর জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, করোনা সুরক্ষা সামগ্রী; যেমন- হ্যান্ড সেনিটাইজার, মাস্ক বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থা রাখতে হবে।
‘কোনো শিক্ষার্থীর পরিবারের একজন সদস্যও যদি করোনায় আক্রান্ত থাকে তাহলে ওই শিক্ষার্থীর শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে আসার কোনো প্রয়োজন নেই’, যোগ করেন ডা. দীপু মনি। তিনি আরও বলেন, সকালবেলায় অ্যাসেম্বলি করা যাবে না। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনায় নিয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে কিছু সময়ের জন্য তাদের খেলাধুলা করতে দিতে হবে।
এ সময় শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষার্থীদের টিকার দেওয়ার বিষয়েও কথা বলেন। তিনি জানান, ১২ থেকে ১৮ বছর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের টিকার দেওয়ার ব্যাপারে জাতীয় টেকনিক্যাল কমিটির পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. মাহবুব হোসেন, কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান, মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক আলমগীর মুহম্মদ মনসুরুল আলম, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ বি এম খুরশীদ আলম প্রমুখ।