‘করোনার লড়াই দীর্ঘস্থায়ী’, বরাদ্দ ১৫ হাজার করার দাবি
করোনাভাইরাসের বিরুদ্ধে লড়াই দীর্ঘস্থায়ী হবে বলে মনে করে বিএনপি। দলের পক্ষ থেকে এই সংকট মোকাবিলায় প্রতিটি দরিদ্র পরিবারের জন্য অবিলম্বে এককালীন ১৫ হাজার টাকা করে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ দাবি জানান। এ সময় তিনি করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে ও দেশকে রক্ষার প্রয়োজনে বিএনপির পক্ষ থেকে পাঁচটি সমন্বিত পদক্ষেপ বাস্তবায়নে সরকারকে সর্বাত্মক পরিকল্পনা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে।
মনে রাখতে হবে, করোনা মহামারির বিরুদ্ধে যে লড়াই সেটা বস্তুত একটি দীর্ঘস্থায়ী লড়াই- এমন মন্তব্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এই ভয়াবহ করোনা মহামারির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হলে চলমান লকডাউনে দরিদ্র, দুঃস্থ ও কর্মহীন জনগোষ্ঠী অর্থাৎ দিন আনে দিন খায়, অপ্রাতিষ্ঠানিক শ্রমিক, পরিবহন শ্রমিক, দোকানশ্রমিক, হকার, প্রান্তিক কৃষক এবং যেসব নিম্নবিত্ত এরই মধ্যে দরিদ্রের কাতারে নেমে পড়েছে তাদের চিহ্নিত করে প্রত্যেকের ঘরে রাখার প্রয়োজনে প্রত্যেককে অবিলম্বে এককালীন নগদ ১৫ হাজার টাকা দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’
‘আমাদের জিডিপির ছয় থেকে সাত ভাগ অর্থাৎ বর্তমান ছয় লাখ কোটি টাকার বিরাট বাজেটের একটি সামান্য অংশ এ খাতে বরাদ্দ করলেই দরিদ্র জনগোষ্ঠীকে মানবিক সহায়তা দেওয়া সম্ভব। যা দরকার সেটা হলো সরকারের স্বদিচ্ছা ও আন্তরিকতা’, যোগ করেন মির্জা ফখরুল।
বিএনপির পক্ষ থেকে যে পাঁচটি দাবি তুলে ধরা হয়েছে সেগুলো হচ্ছে-
এক. দরিদ্র মানুষকে ঘরে রাখার জন্য তাদের ঘরে কমপক্ষে এককালীন ১৫ হাজার করে টাকা এবং খাদ্য পৌঁছে দিতে হবে। মানুষকে বাইরে বের হওয়ার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মানা এবং মাস্ক ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
দুই. অন্তত ৮০ শতাংশ মানুষকে অতি দ্রুত টিকাদান সম্পন্ন করতে হবে। এ জন্য একটি সমন্বিত ও সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ প্রণয়ন করে জাতির সামনে উপস্থাপন করতে হবে এবং বাস্তবায়ন করতে হবে।
তিন. অবিলম্বে দেশে টিকা উৎপাদনের কার্যকর ব্যবস্থা নিতে হবে। বর্তমানে সারা দেশে করোনা আক্রান্ত রোগীদের সর্বাত্মক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে হবে।
চার. সারা দেশে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ, আইসিইউ ও করোনা বেড বৃদ্ধিসহ অত্যাবশ্যকীয় চিকিৎসাসামগ্রী ও পর্যাপ্ত চিকিৎসক-স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ করতে হবে।
পাঁচ. অনেক বিলম্ব হলেও এখনি দেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ, সব রাজনৈতিক দল, এনজিও ও সামাজিক সংগঠনের সমন্বয়ে একটি জাতীয় আপদকালীন পরামর্শক কমিটি গঠন করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ড. আব্দুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ইসমাইল জবিউল্লাহ।