করোনায় মারা গেলেন প্রবীণ শিক্ষক-সাংবাদিক জগদীশ চন্দ্র ঘোষ
ফরিদপুরের প্রবীণ শিক্ষক ও ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সদস্য সাংবাদিক জগদীশ চন্দ্র ঘোষ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ফরিদপুরের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (বিএসএমএমসি) নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল শুক্রবার রাত সোয়া ৮টার দিকে মারা যান তিনি। তাঁর বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর। স্থানীয়ভাবে তারাপদ স্যার হিসেবে পরিচিত ছিলেন তিনি।
ফরিদপুর ডায়াবেটিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা. আ স ম জাহাঙ্গীর চৌধুরী টিটো জানান, অসুস্থতাজনিত কারণে গত ২৯ মার্চ ডায়াবেটিক হাসপাতালে ভর্তি হন জগদীশ চন্দ্র ঘোষ। এরপর নমুনা পরীক্ষায় তাঁর করোনা শনাক্ত হলে ৩১ মার্চ বিএসএমএমসির আইসিইউতে ভর্তি করা হয়। সেখানে গতকাল শুক্রবার রাত সোয়া ৮টার দিকে তিনি মারা যান।
এদিকে আজ শনিবার সকাল ১০টার দিকে ফরিদপুর প্রেসক্লাবে আনা হচ্ছে জগদীশ চন্দ্র ঘোষের মরদেহ। সেখানে সর্বস্তরের শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তাঁকে নিয়ে যাওয়া হবে অম্বিকাপুর মহাশ্মশানঘাটে।
জগদীশ চন্দ্র ঘোষ ১৯২৯ সালের ৬ আগস্ট মানিকগঞ্জের কাঞ্চনপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর পরিবারের সঙ্গে ফরিদপুর সদরের ঈশান গোপালপুর এলাকায় বসবাস করতে শুরু করেন তিনি। প্রথম জীবনে পোস্ট মাস্টারের চাকরি নিলেও পরে শিক্ষকতাকে পেশা হিসেবে বেছে নেন জগদীশ। ১৯৬৮ সালে পাকিস্তান অবজারভার পত্রিকার মাধ্যমে সাংবাদিকতায় যোগ দেন তিনি। ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় ঈশান গোপালপুরের গণহত্যায় নিহত ২৮ জনের মধ্যে তাঁর বাবা যোগেশ চন্দ্র ঘোষ, ভাই গৌর গোপাল ঘোষও ছিলেন। পরে জগদীশ চন্দ্র শহরের ঝিলটুলীতে বসবাস করতে শুরু করেন।
প্রবীণ এই শিক্ষক ও সাংবাদিকের মৃত্যুতে ফরিদপুর সদর আসনের সংসদ সদস্য ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ফরিদপুরের জেলা প্রশাসক অতুল সরকার, পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান, আওয়ামী লীগের সাবেক কেন্দ্রীয় নেতা বিপুল ঘোষ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি এ কে আজাদ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ মাসুদ হোসেন, ফরিদপুর জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ড. যশোদা জীবন দেবনাথ, ফরিদপুর প্রেসক্লাবের সভাপতি কবিরুল ইসলাম সিদ্দিকীসহ সব শ্রেণি-পেশার মানুষ গভীর শোক প্রকাশ করেছেন।