কিশোরগঞ্জের পাগলা মসজিদের দানবাক্সের টাকা গণনা চলছে
কিশোরগঞ্জের ঐতিহাসিক পাগলা মসজিদের দানবাক্স খুলে এবারও বিপুল পরিমাণ টাকা পাওয়া গেছে। দানবাক্সে বৈদেশিক মুদ্রা ও স্বর্ণালঙ্কারও পাওয়া গেছে।
আজ রোববার সকালে মসজিদের আটটি দানসিন্দুক একসঙ্গে খোলা হয়। সকাল ৯টায় মসজিদের গণনা শুরু হয়। এর আগে গত বছরের ৬ নভেম্বর সর্বশেষ দানবাক্সটি খোলার পর তিন কোটি ৭ লাখ ১৭ হাজার ৫৮৫ টাকা পাওয়া গিয়েছিল।
সংশ্লিষ্টরা জানান, সকাল ৯টায় জেলা প্রশাসনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে মসজিদের আটটি দানবাক্স খোলা হয়। দানবাক্স খুলে প্রথমে ১৫টি বড় বস্তায় টাকা ভরা হয়। এরপর শুরু হয় গণনার কাজ। টাকা গণনার কাজে মসজিদ ও মাদ্রাসার শতাধিক ছাত্র-শিক্ষক, রূপালী ব্যাংকের ৫০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী, ১০ জন আনসার এবং মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য ও সার্বক্ষণিক দায়িত্বরত কর্মকর্তা-কর্মচারীরা অংশ নেন।
পাগলা মসজিদ পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শামীম আলমসহ জেলা প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা ও মসজিদ কমিটির সদস্যদের উপস্থিতিতে রূপালী ব্যাংকের ময়মনসিংহ বিভাগীয় জিএম হেমন্ত কুমার দাসের তত্ত্বাবধানে টাকা গণনার কাজ শুরু করা হয়।
মসজিদ কমিটি সূত্রে জানা যায়, প্রাপ্ত দানের টাকা থেকে পাগলা মসজিদের এবং এই মসজিদ কমপ্লেক্সের অন্তর্ভুক্ত মাদ্রাসা, এতিমখানা ও কবরস্থানের ব্যয় নির্বাহ করাসহ জেলার বিভিন্ন মসজিদ, মাদ্রাসা, এতিমখানায় সহায়তা করা হয়। পাশাপাশি গরিব ছাত্রদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন সামাজিক কাজেও টাকা প্রদান করা হয়।
সুউচ্চ মিনার ও তিন গম্বুজবিশিষ্ট তিনতলা বিশাল পাগলা মসজিদ কিশোরগঞ্জের অন্যতম ঐতিহাসিক স্থাপনা। জেলা শহরের পশ্চিম প্রান্তে নরসুন্দা নদীর তীরে হারুয়া এলাকায় অবস্থিত পাগলা মসজিদটি প্রথমে ১০ শতক জায়গায় প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরে এর আয়তন আরও বাড়ানো হয়। মসজিদের প্রায় চার একর জায়গা রয়েছে।
কথিত আছে প্রায় ৫০০ বছর আগে বাংলার ১২ ভুঁইয়া বা প্রতাপশালী ১২ জন জমিদারের অন্যতম ঈশা খাঁর আমলে ‘দেওয়ান জিলকদর খান ওরফে জিল কদর পাগলা’ নামে একজন ব্যক্তি নদীর তীরে বসে নামাজ পড়তেন। পরবর্তী সময়ে ওই স্থানটিতে মসজিদটি নির্মিত হয়। জিল কদর পাগলার নামানুসারেই মসজিদটি ‘পাগলা মসজিদ’ নামে পরিচিতি পায়।