কুষ্টিয়ায় তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব শুরু
‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের এই আধ্যাত্মিক বাণীর শ্লোগানে দোল পূর্ণিমা উপলক্ষে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়ীতে আজ শনিবার (৪ মার্চ) থেকে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী লালন স্মরণোৎসব।
আজ সন্ধ্যায় উৎসবের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশ অওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, এমপি। তবে, এর আগেই একতারা-দোতারা আর ঢোল-বাঁশির সুরে ও আধ্যাত্মিক গানে মুখরিত হয়ে উঠেছে লালন আখড়াবাড়ি। গুরু-শিষ্যের মিলনের এই ক্ষণ যতোটা দীর্ঘ করা যায় সেই লক্ষ্যে প্রতিবছরই অনুষ্ঠান শুরুর আগেই চলে আসেন তারা। এখানেই আত্মার শান্তি খোঁজেন সাধু-বাউলরা। দুইশ বছর ধরে দোল পূর্ণিমা তিথিতে এ সাধুসঙ্গ চলে আসছে।
এবার পবিত্র শবে বরাতের কারণে দুইদিন এগিয়ে আনা হয়েছে অনুষ্ঠানমালা। তবে, মূল আনুষ্ঠানিকতা তিথি মেনে করায় সাধুরা আপত্তি করেননি। লালন উৎসবের আনুষ্ঠানিকতা আগামী ৬ মার্চ রাতে শেষ হলেও দোলের তিথি অনুযায়ী বাউল সাধু ভক্তানুরাগীদের মূল আনুষ্ঠানিকতা অধিবাস শুরু হবে ৬ মার্চ রাতে। পরদিন ৭ মার্চ ভোরে বাল্যসেবা ও দুপুরে পূর্নসেবার মধ্যদিয়ে শেষ হবে সাধুদের কার্যক্রম।
সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় লালন একাডেমি এ লালন স্মরণোৎসবের আয়োজন করেছে। এদিকে আখড়াবাড়ী চত্বরে কালী নদীর তীরে বিশাল মাঠে জমে উঠেছে লালন মেলা। আর ঐতিহাসিক এই উৎসবকে নির্বিঘ্ন করতে প্রশাসনের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
উল্লেখ্য, বাউলদের খাঁটি করে গড়ে তুলতে বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহ তাঁর জীবদ্দশায় ছেঁউড়িয়ার এই নিজ আখড়াবাড়ীতে প্রতিবছর চৈত্রের দৌলপূর্ণিমা রাতে বাউলদের নিয়ে সাধু সঙ্গ উৎসব করতেন। ১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক তাঁর মৃত্যুর পরও এ উৎসব চালিয়ে আসছেন তাঁর অনুসারীরা।