খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিতে সরকারের অনুমতি দাবি শত নাগরিকের
বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার দাবি জানিয়ে গণমাধ্যমে বিবৃতি দিয়েছে ‘শত নাগরিক’ নামের একটি সংগঠন। আজ মঙ্গলবার রাতে সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। তাঁর অবস্থা এখন সংকটাপন্ন। এ অবস্থায় সরকারের কাছে সনির্বন্ধ অনুরোধ, সব ধরনের প্রতিহিংসাপরায়ণতা, সংকীর্ণ দল ও ব্যক্তিস্বার্থ পরিহার করে, সম্পূর্ণ মানবিক কারণে জনগণের এই প্রিয় নেত্রীকে যত দ্রুত সম্ভব অত্যাধুনিক চিকিৎসা নেওয়ার জন্য বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিন।
এতে আরও বলা হয়, এক্ষেত্রে যে কোনো ধরনের বিলম্ব ও অজুহাত বড় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে বলে আমাদের আশঙ্কা, যা কারও জন্য ভালো বার্তা বহন করবে না।
শত নাগরিক সংগঠনের নেতারা বলেন, আমরা প্রত্যাশা করি, সরকারের মধ্যে কল্যাণ ও মঙ্গলবোধ জেগে উঠবে। তারা সত্যিকারের দায়িত্বশীলতার সঙ্গে শুভ চেতনার পরিচয় দিয়ে সাবেক এ প্রধানমন্ত্রীর বিদেশযাত্রার ব্যবস্থা করবে।
শত নাগরিকের পক্ষে বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন, প্রফেসর ড. আনোয়ার উল্লাহ চৌধুরী, প্রফেসর ড. এস. এম. এ ফায়েজ, প্রফেসর ড. মাহবুব উল্লাহ, প্রফেসর জেড. এন তাহমিদা বেগম, প্রফেসর ড. ওয়াকিল আহমেদ, প্রফেসর মনসুর মুসা, প্রফেসর আবদুল হাই শিকদার (কবি), প্রফেসর ডা. আবদুল কুদ্দুস, প্রফেসর ওবায়দুল ইসলাম, প্রফেসর ড. লুৎফুর রহমান, প্রফেসর আবদুর রহমান সিদ্দিকী, প্রফেসর ড. রেজাউল করিম, প্রফেসর ড. ইফতেখারুল আলম মাসুদ, প্রফেসর ড. মুজাদ্দেদী আলফেসানী, প্রফেসর ড. কামরুল আহসান, প্রফেসর ড. ফরহাদ হালিম ডোনার ও জাহাঙ্গীর আলম মিন্টু।
শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় খালেদা জিয়া বর্তমানে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এমন পরিপ্রেক্ষিতে তাঁর ভাই শামীম ইস্কান্দার পরিবারের পক্ষ থেকে বিদেশে উন্নত চিকিৎসার জন্য অনুমতি চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বরাবর চিঠি দিয়েছেন। পরে আবেদনটির বিষয়ে আইনি মতামত চেয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ব্যাপারে আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক আজ মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে বিএনপির সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার এক প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিদেশে নিয়ে যাওয়ার জন্য আবেদন করতে হলে নতুন করে জেলে গিয়ে তাঁকে আবেদন করতে হবে। ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারা অনুযায়ী একবার আবেদন নিষ্পত্তি হওয়ার পর একই বিষয়ে আবার নতুন আবেদন গ্রহণ করার সুযোগ নেই।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘ফৌজদারি কার্যবিধি ৪০১ ধারার ওপর ভারত, পাকিস্তানসহ দেশের উচ্চ আদালতের অনেক ডিসিশান রয়েছে। রুমিন ফারহানা এসব দেখতে পারেন। এ মুহূর্তে খালেদা জিয়াকে কারাগারে গিয়ে আবেদন করা ছাড়া বিদেশে যাওয়ার জন্য আবেদনের সুযোগ নেই।’
খালেদা জিয়ার বিদেশে চিকিৎসার অনুমতি চেয়ে এর আগে গত ৫ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন তাঁর ভাই শামীম ইস্কান্দার। পরে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেই আবেদন ‘মঞ্জুর করা যাবে না’ মর্মে মতামত দেয় আইন মন্ত্রণালয়। আইন মন্ত্রণালয়ের এ মতামতের ওপর ভিত্তি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আবেদনটি নাকচ করে দেয় তখন।