খুনিদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যস্ত আমেরিকা-কানাডা : প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, আমেরিকা ও কানাডাসহ কিছু দেশ খুনিদের মানবাধিকার রক্ষায় ব্যস্ত। তারা মানবাধিকার লঙ্ঘনকারীর মানবাধিকার রক্ষা করছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
আজ বুধবার শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আওয়ামী লীগ মানুষের অধিকার নিশ্চিত করে। অন্যদিকে, তাঁর সরকারের বারবার আবেদন সত্ত্বেও কিছু দেশ খুনিদের ফেরত না দিয়ে তাদের মানবাধিকার রক্ষা করতে ব্যস্ত হয়ে উঠেছে।’
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি বলেন, ‘যে খুনি আমার সেজ ফুপুর বাড়িতে গিয়ে চার বছরের সুকান্ত থেকে শুরু করে আমার ফুপুকে গুলি করেছে, ফুফাকেও হত্যা করেছে, তিনজন ফুপাতো বোনকে হত্যা করেছে, ভাইকে হত্যা করেছে, সে এখন আমেরিকায়। বারবার তাদের কাছে আমরা অনুরোধ করছি ওই আসামিকে আমাদের কাছে ফেরত দেন, সে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। সেই সাজাপ্রাপ্ত আসামিকে তারা দেয় না। কারণ, খুনির মানবাধিকার রক্ষা করছে তারা।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘মেজর নূর যে সরাসরি ৩২ নম্বরের বাড়িতে গিয়েছিল, সেই নূর এখন কানাডায়। কানাডা সরকারকে বারবার অনুরোধ করি, তারা ফেরত দেয় না। খুনিদের মানবাধিকার রক্ষা করতে তারা ব্যস্ত। তাহলে আমরা যারা আপনজন ও স্বজন হারিয়েছি তাদের অপরাধটা কী? সেটা আমি জাতির কাছে জিজ্ঞাসা করি। বিএনপি বা জামাত, যারা এদের জন্য হাপিত্যেশ করে কান্নাকাটি করে, তারা এর জবাব দিক।’
শেখ হাসিনা আরও বলেন, ‘শুধু এখানে আওয়ামী লীগের হাজার হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। কত মানুষকে গুম করেছে। আমার ছাত্রলীগের মাহফুজ বাবুর লাশ তো তাঁর পরিবার পায়নি। নারায়ণগঞ্জের মনিরের লাশ তো পায়নি। যুবলীগনেতা চট্টগ্রামের মৌলভী সৈয়দকে দিনের পর দিন অত্যাচার করে মেরেছে, ঠিক সেইভাবে খসরুসহ আমাদের বহুনেতাকে দিনের পর দিন অত্যাচার করেছে। একেক জনকে অত্যাচার করে এমনভাবে ছেড়ে দিয়েছে, বেশি দিন তারা আর বাঁচতে পারেনি।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই বুদ্ধিজীবী হত্যা এবং আওয়ামী লীগকে একদম নিশ্চিহ্ন করার অপরাধ তারা করেছে। এদেশের স্বাধীনতা আমরা এনেছি। জাতির পিতা যদি স্বাধীনতা না আনতেন, তাহলে ওই মেজর জিয়া কি কোনো দিন মেজর জেনারেল হতে পারত বা তার পরিবার সেই স্ট্যাটাস ভোগ করতে পারত? পারত না। ওই মেজর থেকেই স্যালুট দিতে দিতে ওই বুট ও পা ক্ষয় হয়ে শেষ হয়ে যেত।’
প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আজকে শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস। যারা আপনজন হারিয়েছে, তারা জানে যে তারা কী হারিয়েছে। তারাও তো লাশ পায়নি। আর যারা পেয়েছে, তাও গলিত লাশ, দেখার মতো নয়।’
আলোচনা সভায় দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের সূচনা বক্তব্য দেন। আরও বক্তব্য দেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য সাবেক মন্ত্রী শেখ ফজলুল করিম সেলিম, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল-আলম হানিফ ও আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক শহীদ জায়া ডা. রোকেয়া সুলতানা এবং মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম মান্নান কচি, হুমায়ুন কবির প্রমুখ।
দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ এবং উপপ্রচার সম্পাদক আমিনুল ইসলাম সভাটি সঞ্চালনা করেন।
এ সময় দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদসহ জ্যেষ্ঠ নেতৃবৃন্দ মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।