গণপরিবহণ চললে রাইড শেয়ারিং বন্ধ কেন, চালকদের বিক্ষোভ
সরকারের দেওয়া কঠোর বিধিনিষেধের মধ্যে রাজধানীতে গণপরিবহন চালুর পর রাইড শেয়ারিংয়ে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবিতে বিক্ষোভ করেছে মোটরসাইকেলের চালকরা।
বিক্ষোভকারীদের দাবি, সরকারকে দ্রুত রাইড শেয়ারিং সেবা চালু করতে দিতে হবে। একমাত্র আয়ের উৎস বন্ধ হওয়াতে তাঁরা মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর মগবাজার, খিলক্ষেত, মিরপুর, জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে চালকরা বিক্ষোভ করেন। এ সময় তাঁরা সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন। পরে পুলিশ তাদের সরিয়ে দেয়।
বিক্ষোভে মোটরসাইকেল চালকরা জানান, সরকারকে দ্রুত রাইড শেয়ারিং সেবা চালু করে দিতে হবে। গণপরিবহণ চললে রাইড শেয়ারিং বন্ধ থাকবে কেন? তাদের সঙ্গে কেন বৈষম্য করা হচ্ছে? রাইড শেয়ারিং চালকরা রাস্তায় যাত্রী নিয়ে বের হলে পুলিশ মামলা দেয়। অহেতুক মামলা না দিতেও সরকারের প্রতি আবেদন জানান চালকরা।
মাহবুব আলী (৩৫) নামের এক উবার চালক বলেন, ‘রাস্তায় সব চলছে। আমরা রাস্তায় উঠলেই পুলিশ আমাদের নামে মামলা দিচ্ছে। মোটরসাইকেলে দুজন দেখলেই হয়রানি করা হচ্ছে। সব খোলা রেখে আমাদের সঙ্গে কেন এমন আচরণ? আমরা কি রাষ্ট্রের নাগরিক না?’
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমান বলেন, ‘রাইড শেয়ারিং চালকরা অনেক স্থানে বিক্ষোভ করেছে। আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। বোঝানোর পর তাঁরা সড়ক ছেড়ে দেন। তাদের দাবির বিষয় নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলছি। বাকিটা সরকারের সিদ্ধান্ত।’
করোনানাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে গত সোমবার থেকে এক সপ্তাহের কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করে সরকার। এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে সারা দেশে গণপরিবহণ বন্ধ, জরুরি প্রয়োজন ছাড়া সন্ধ্যা ৬টা থেকে ভোর ৬টা পর্যন্ত ঘরের বাইরে বের হওয়ার ক্ষেত্রে নিষেধাজ্ঞা, কাঁচাবাজার ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে বিধি-নিষেধ আরোপ করা হয়।
এই প্রজ্ঞাপনের পর সারা দেশেই বাস ছাড়া সব ধরনের পরিবহণই চলছে এবং ঢিলেঢালা লকডাউন চলছে। বাস না চলায় চরম দুর্ভোগে পড়েন কর্মমুখী লোকজন। এর মধ্যে রাইড শেয়ারিংয়েও নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। তবে নিষেধাজ্ঞার পরও গত সোমবার থেকে রাইড শেয়ারিংয়ের চালকের রাস্তায় থাকতে দেখা গেছে।
এর মধ্যে গতকাল মঙ্গলবার ঢাকাসহ দেশের সব সিটি করপোরেশন এলাকায় আজ বুধবার থেকে গণপরিবহণ চালু করার সিদ্ধান্ত নেয় সরকার। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এই গণপরিবহণ চলবে। তবে মহানগরের বাইরের কোনো পরিবহণ শহরে প্রবেশ করতে পারবে না এবং বেরও হতে পারবে না বলে সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়।
মোটরসাইকেলের চালকদের বিক্ষোভের বিষয়ে রমনা বিভাগের সহকারী পুলিশ কমিশনার (এসি) শেখ মোহাম্মদ শামীম বলেন, ‘সকালে জাতীয় প্রেসক্লাব থেকে মোটরসাইকেল চালকরা বিক্ষোভ র্যালি নিয়ে শান্তিনগরে এসে রাস্তা অবরোধ করেন। পরে তাদের বুঝিয়ে সেখান থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তারপর তাঁরা মগবাজার এলাকায় অবস্থান করেন। শুনেছি, সেখান থেকেও তাদেরকে বুঝিয়ে সরিয়ে দেওয়া হয়।’