চলন্ত ট্রেনে মা হলেন জয়পুরহাটের গৃহবধূ
ট্রেনের কামরায় মা হলেন জেসমিন আকতার (২৫)। ঢাকার কমলাপুর রেল স্টেশন থেকে ছেড়ে একতা আন্তঃনগর এক্সপ্রেস ঈশ্বরদী পার হলে ওঠে প্রসব বেদনা। এরপর সান্তাহার জংশনে পৌঁছানোর আগেই মা হন তিনি। তাঁর সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন কামরার নারী যাত্রীরা ও রেল কর্মকর্তারা। গতকাল শনিবার বিকেলে ঘটে এ ঘটনা।
জানা গেছে, মা হওয়ার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর ট্রেনটি সন্ধ্যা পৌনে ৭টার দিকে জয়পুরহাট স্টেশনে পৌঁছানোর পর জেসমিন আকতারকে জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বর্তমানে সেখানে নবজাতকসহ মা জেসমিন আকতার সুস্থ রয়েছেন।
সংশ্লিষ্টসূত্রে জানা গেছে, জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মোলামগাড়ীহাট-নানাহার গ্রামের তহিদুল ইসলাম আনসার বাহিনীতে চাকরি করেন। তিনি দুই বছরের মেয়েকে নিয়ে সস্ত্রীক ঢাকার মিরপুরে বসবাস করেন। চিকিৎসকের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেওয়া সময় অনুসারে, তহিদুল ইসলামের সন্তানসম্ভবা স্ত্রী জেসমিনের আরও এক সপ্তাহ পর সন্তানপ্রসবের দিন ধার্য ছিল। ঢাকায় তাঁকে দেখাশোনার মতো আত্মীয়-স্বজন না থাকায় নিজ বাড়িতে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন তাঁর স্বামী।
গতকাল শনিবার ঢাকার কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে একতা আন্তঃনগর এক্সপ্রেসে করে জয়পুরহাট রেলস্টেশনের উদ্দেশে রওনা হন তাঁরা। পরে বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে চলন্ত ট্রেনেই সন্তান জন্ম দেন জেসমিন।
জেসমিনের স্বামী তহিদুল ইসলাম এসব তথ্য সাংবাদিকদের জানিয়ে বলেন, ওই ট্রেনে অবস্থানকারী পরিচালক ও রেল পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমানকে বিষয়টি জানান। এসআই মিজান তাৎক্ষণিক ওই ট্রেনের কয়েকজন নারীকে দিয়ে ওই কামরায় কাপড় দিয়ে ঘিরে কৃত্রিম প্রসবকক্ষ তৈরি করে দেন। এ ছাড়া বিষয়টি জানার পর একই ট্রেনের পাশের সিটের যাত্রী ডা. রাফসান জানি অপর যাত্রীদের নিয়ে চিকিৎসাসেবা দেন।
ডা. রাফসান জানি বলেন, ‘গর্ভবতী জেসমিনের প্রসব বেদনার বিষয়টি জানতে পেরে আমি একজন নারী শিক্ষিকাসহ আরও কয়েকজন নারী যাত্রীকে নিয়ে সহযোগিতা করি। ট্রেনে ধারাল কোনো কাঁচি বা ব্লেড না থাকায় রানীনগর স্টেশনে ট্রেন থামার পর দ্রুত স্টেশনের একটি দোকান থেকে ব্লেড সংগ্রহ করে ওই ব্লেড দিয়েই নাড়ি কেটে আলাদা করা হয়েছিল।’
এ বিষয়ে জয়পুরহাট রেল স্টেশনের সহকারী স্টেশন মাস্টার আব্দুর রাজ্জাক সাংবাদিকদের জানান, ‘ট্রেনটি জয়পুরহাট স্টেশনে যাত্রাবিরতি দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমরা নবজাতকসহ প্রসূতিকে হুইল চেয়ারে করে নামিয়ে তাৎক্ষণিক জয়পুরহাট আধুনিক জেলা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।