চাটমোহর পৌরসভা নির্বাচনে দুই বিদ্রোহী প্রার্থীর ভোট বর্জন
পাবনার চাটমোহর পৌরসভার নির্বাচনে আজ সোমবার ভোটগ্রহণ শুরুর পর এজেন্টদের জোর করে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়াসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ এনে ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দুই বিদ্রোহী প্রার্থী।
এর মধ্যে আজ সকাল ৯টার দিকে চাটমোহর পৌর সদরের সবুজ সংঘ ক্লাবের সামনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন বিএনপির বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী সাবেক মেয়র প্রফেসর আব্দুল মান্নান। তাঁর প্রতীক মোবাইল ফোন।
অপরদিকে, সকাল ১০টার দিকে ছোট শালিখা মহল্লার বাসভবনে সংবাদ সম্মেলন করে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও বর্তমান মেয়র মির্জা রেজাউল করিম দুলাল। তাঁর প্রতীক জগ।
বিদ্রোহী দুই প্রার্থীর অভিযোগ, সকালে ভোটগ্রহণ শুরুর পর নৌকার এজেন্ট ও কর্মীরা অন্যান্য প্রার্থীর এজেন্টদের মারধর করে বের করে দেন। এছাড়া সব ভোটকেন্দ্র দখলে নিয়েছে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর লোকজন। বুথে ইভিএমের গোপন কক্ষে নৌকার এজেন্টরা ফ্রিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়ার পর ভোটারদের জোর করে নৌকায় ভোট দিতে বাধ্য করছেন। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও প্রশাসনকে জানিয়েও ফল হয়নি। তাই বাধ্য হয়ে তাঁরা ভোট বর্জন করেছেন।
আওয়ামী লীগ প্রার্থী অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন সাখো সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘এই দুই প্রার্থী ভোট বর্জনের বাহানা খুঁজছিলেন। চাটমোহরের ৯টি কেন্দ্রে মানুষজন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিয়েছেন।
এদিকে, পাবনার চাটমোহরে পৌরসভা নির্বাচনের একটি কেন্দ্রের পাশে সুজন মাহমুদ (৪০) নামের এক নৌকা প্রতীকের সমর্থক মারা গেছেন। পৌর শহরের এনায়েতুল্লাহ সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রের পাশে সকাল সোয়া ১০টার দিকে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে তিনি মারা যান।
সুজন উপজেলার বিলচলন ইউনিয়নের নটাবাড়িয়া গ্রামের সাহা মাহমুদের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকালে বালুচর মাঠ এলাকায় কেন্দ্রের বাইরে দলীয় নেতাকর্মীদের সঙ্গে দাঁড়িয়ে ছিলেন সুজন খান। তাঁর বুকে লাগানো ছিল নৌকা মার্কার ব্যাজ। হঠাৎ তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাঁকে দ্রুত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। এদিকে খবর পেয়ে হাসপাতালে যান পুলিশ সদস্যরা।
চাটমোহর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক মাহমুদুল হাসান খান বলেন, ‘হাসপাতালে আনার আগেই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন সুজন মাহমুদ নামের ওই যুবক।’
নৌকা সমর্থকের পরিচয় নিশ্চিত করে চাটমোহর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল ইসলাম বলেন, ‘সুজন নামের ওই যুবক আমাদের সঙ্গেই দাঁড়িয়ে ছিলেন। তিনি ভোট দেখতে এসেছিলেন। হঠাৎ সুজন মাটিতে পড়ে গেলে তাঁকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে দায়িত্বরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এ ব্যাপারে চাটমোহর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, মৃত যুবকের সুরতহাল শেষে পরিবারের অভিযোগ না থাকায় মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।