চুরির অপবাদে যুবককে পেটালেন কাউন্সিলর, দুজন গ্রেপ্তার
মুন্সীগঞ্জে স্বর্ণ চুরির অপবাদে রনি নামের এক যুবককে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধরের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় আওলাদ হোসেন নামের এক কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার সকালে শহরের দক্ষিণ ইসলামপুরে এ ঘটনায় ঘটে।
এদিকে মারধরের ঘটনার একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এতে জেলা জুড়ে তৈরি হয়েছে সমালোচনার ঝড়।
প্রধান অভিযুক্ত আওলাদ হোসেন মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিল।
এদিকে এ ঘটনায় গতকার রাতেই ভুক্তভোগী যুবক মুরাদ হোসেন রনি বাদী হয়ে আওলাদসহ অপর দুজনের বিরুদ্ধে সদর থানায় মামলা করেছেন। অপর অভিযুক্তরা হলেন দক্ষিণ ইসলাম এলাকার মনির হোসেন ও কালাই হোসেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, দক্ষিণ ইসলামপুর এলাকার স্থানীয় মনির হোসেনের বাড়ি থেকে চার ভরি স্বর্ণ ও ২২ হাজার টাকা চুরি হয়। ওই ঘটনায় গতকাল সোমবার সকালে চুরির অপবাদে মনিরের প্রতিবেশী ভুক্তভোগী রনিকে বাড়ি থেকে ধরে আনেন কাউন্সিলর আওলাদ হোসেনসহ মনির হোসেন ও তার ভাই কালাই। পরে মনিরের বাড়ির উঠানে রনিকে হাত-পা বেঁধে মধ্যযুগীয় কায়দায় মারধর করে স্বীকারোক্তি আদায়ের চেষ্টা করেন আওলাদ। তবে মারধরের পরও চুরির বিষয়ে অস্বীকার করেন রনি। পরে রনির ছোটভাই থানা থেকে পুলিশ নিয়ে এলে রনিকে তাদের কাছে সোপর্দ করে মারধকারীরা।
এর মধ্যে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম আপলোড করা হলে রাতেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। এতে তৈরি হয় সমালোচনার ঝড়।
ভুক্তভোগী রনি বলেন, ‘সকালে আমার বাসায় আইসা কাউন্সিলর আওলাদ জিজ্ঞাসার কথা বলে মনিরদের বাড়িতে নিয়া যায়। সেখানে নিয়া আমারে মারে আর বলে চুরির কথা স্বীকার করতে। আমি তো স্বর্ণ নেই নাই, আমি কেন শিকার করুম। পরে আমার ছোট ভাই পুলিশ নিয়া আইলে আমারে ছাইড়া দেয়। কারা যেনো ফেসবুকে ভিডিও দিছে। রাতে আবার পুলিশ আইলে আমি বাদী হয়ে কাউন্সিলর আওলাদ হোসেনসহ মনির হোসেন ও কালাইয়ের বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দিছি। আমারে শুধু শুধু মারধর করছে আমি এর বিচার চাই।’
মারধরের বিষয়টি স্বীকার করে কাউন্সিলর আওলাদ হোসেন বলেন, ‘আমি রনিকে বাড়ি থেকে ধরে নিয়ে আসিনি। মনিরদের বাড়িতে তাকে বেঁধে রাখা হয়েছে। এটি জানতে পেরে আমি সেখানে যাই। গিয়ে দেখি অনেক মানুষ সেখানে। ক্রেডিট নেওয়ার জন্য কৌশল অবলম্বনের জন্য তাকে মারছি। পুলিশ এলে চিকিৎসা করানোর কথা বলি। বিষয়টি আমরা ভুল হয়েছে। মারধরের অধিকার আমার নেই, আমি অনুতপ্ত।’
সে যে চুরি করেছে প্রমাণ পেয়েছেন এমন প্রশ্নে কাউন্সিল বলেন, ‘না চুরির প্রমাণ পাইনি। তবে এর আগে তাঁর বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ ছিল।’
এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জের সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, মারধরের ওই ঘটনায় মামলা হয়েছে। কালাই ও মনির নামের দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।