চোর সন্দেহে যুবককে ‘পিটিয়ে হত্যা’, পদ্মা সেতু প্রকল্পের ৯ কর্মী আটক
মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার মাওয়া চৌরাস্তা এলাকায় চোর সন্দেহে জুলহাস হাওলাদার (৩৫) নামের এক যুবককে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। পদ্মা সেতু প্রকল্পের নিরাপত্তাকর্মী ও শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত কয়েক জন ওই যুবককে পেটান বলে অভিযোগ উঠেছে। খবর পেয়ে জুলহাসের স্বজনেরা ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন। পরে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। এ ঘটনায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত নয় কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।
নিহত জুলহাস উপজেলার কুমারভোগ পদ্মা সেতু পুনর্বাসন কেন্দ্রের হাসান হাওলাদারের ছেলে। তিনি অটোরিকশাচালক ছিলেন।
আটক করা ব্যক্তিরা হলেন—সেলিম, রাব্বি, তপু, আল-আমিন, আরিফ, আব্দুল মান্নান, ইস্রাফিল, রুবেল ও সুশান্ত।
লৌহজং থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিজ বাড়ির অদূরে মাওয়া চৌরাস্তা এলাকায় পদ্মা সেতু প্রকল্পের ভেতরে গেলে জুলহাসকে চোর সন্দেহে আটক করেন নিরাপত্তা কর্মী ও শ্রমিকেরা। এ সময় ১০ থেকে ১২ জন মিলে ওই যুবককে লোহার রড দিয়ে এলোপাতাড়ি পেটান। খবর পেয়ে স্বজনেরা ওই যুবককে উদ্ধার করে পাশের শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শ্রীনগর-লৌহজং সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আসাদুজ্জামান জানান, পদ্মা সেতুর এফ-৪ পিলারের নিচে ওই যুবককে পেটান নিরাপত্তা কর্মীরা। এতে ওই যুবকের মৃত্যু হয়। ঘটনা জানার পরপরই অভিযানে নামে পুলিশ। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে পদ্মা সেতুর নিরাপত্তাকর্মী ও শ্রমিক হিসেবে নিয়োজিত নয় জনকে আটক করতে সক্ষম হন তাঁরা।
নিহত যুবকের বোন শাহানা বলেন, ‘আমার ভাই পদ্মা সেতু প্রকল্পের ভেতরে কীভাবে গেল, তা জানি না। আমরা খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যাই। গিয়ে দেখি হাত-পা বাঁধা অবস্থায় তাকে ফেলে রাখা হয়েছে। এর আগে তাকে রড দিয়ে পেটানো হয়েছে। পদ্মা সেতুর নিরাপত্তা কর্মীরা আমাদের বলেন, আমার ভাই নাকি চুরি করেছে। পরে আমরা ভাইকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাই। এ সময় সেখানকার চিকিৎসক আমার ভাই মারা গেছে বলে জানান।’
শাহানা আরও বলেন, ‘আমার ভাই চোর নয়। অটোরিকশা চালায়। আর চুরি করলেই কি পিটিয়ে হত্যা করতে হবে?’