ছাত্রলীগের কর্মীদের লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থাকতে হবে : আল-নাহিয়ান খান জয়
ছাত্রলীগের কর্মীরা লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে উঠে সবাই কাজ করে যাচ্ছে। দেশের জন্য কাজ করতে হবে। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া সেগুলোর সঙ্গে একমত থাকতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন ছাত্রলীগের সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এনটিভি অনলাইনকে দেওয়া এক বিশেষ সাক্ষাৎকারে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার আগরপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন আল-নাহিয়ান খান জয়। বাবা বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আলী খান। বঙ্গবন্ধুর আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে বাবার হাত ধরে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয়েছিলেন।
বরিশাল জেলা স্কুলে অধ্যয়নরত অবস্থাতেই ছাত্রলীগের রাজনীতিতে হাতেখড়ি। জয় উপজেলা ছাত্রলীগেও সম্পৃক্ত ছিলেন। এসএসসি পাস করে ঢাকা কমার্স কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক শেষ করেন তিনি। এরপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ২০০৮-০৯ সেশনে আইন বিভাগে ভর্তি হন। বর্তমানে তিনি অপরাধবিজ্ঞান বিভাগে মাস্টার্স করছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়েও সক্রিয় ছিলেন রাজনীতিতে। প্রথমে শহীদ সার্জেন্ট জহুরুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের উপ-আইনবিষয়ক সম্পাদক এবং পরবর্তীতে হলের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন।
এরপর কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের (সোহাগ-জাকির কমিটি) আইনবিষয়ক সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরের সম্মেলনে দায়িত্ব পান সিনিয়র সহসভাপতির (শোভন-রাব্বানী কমিটি)। শোভন ও রাব্বানী মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই কমিটি থেকে পদত্যাগ করেন। তখন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক অভিভাবক ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করেন জয়কে। পরে তিনি ছাত্রলীগের সভাপতির দায়িত্ব পান।
বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবর্ষ ও স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে এনটিভি অনলাইন বিশেষ সাক্ষাৎকার প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। এ বিশেষ সাক্ষাৎকারের তৃতীয় পর্বে কথা বলেছেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয়। সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন এনটিভি অনলাইনের স্টাফ করেসপনডেন্ট ফখরুল শাহীন।
এনটিভি অনলাইন : মুজিববর্ষ, স্বাধীনতা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। একজন ছাত্রনেতা হিসেবে ‘বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশ’কে কীভাবে মূল্যায়ন করবেন?
আল-নাহিয়ান খান জয় : স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও মুজিববর্ষ- এ দুটি আমাদের তরুণদের জন্য বড় পাওয়া। আর বঙ্গবন্ধু এবং বাংলাদেশ দুটি অবিচ্ছিন্ন অংশ। বঙ্গবন্ধু মানেই বাংলাদেশ আর বাংলাদেশ মানেই বঙ্গবন্ধু। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে আমরা এ দেশ পেয়েছি। তাঁর স্বপ্ন পূরণে আমরা কাজ করে যাচ্ছি। আর সেই মহান নেতার হাতে গড়া সংগঠনের একজন কর্মী হিসেবে আমরা গর্বিত।
এনটিভি অনলাইন : জাতির পিতা যে স্বপ্ন নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে, তা কতটুকু বাস্তবায়ন হয়েছে?
আল-নাহিয়ান খান জয় : আপনারা জানেন, ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে সপরিবারে হত্যা করা হয়েছিল। তারপর আইন করে খুনিদের বিচার পর্যন্ত করতে দেওয়া হয় নাই। তবে সব কিছু উপেক্ষা করে প্রাণপ্রিয় নেত্রী দেশে প্রত্যাবর্তন করলেন। ১৯৯৬ সালে ক্ষমতায় আসার পর তিনি তাঁর পিতার খুনিদের বিচার কার্যক্রম হাতে নেন। রাজকারদের বিচারও করেন। স্বাধীনতার পক্ষের প্রত্যেকটি ভালো কাজ তিনিই শুরু করেছেন। যার কারণে আজ স্বাধীনতাবিরোধী শক্তিরা নেই বলেলই চলে। পিতার স্বপ্নপূরণে কাজ করে যাচ্ছেন প্রিয়নেত্রী।
এনটিভি অনলাইন : তরুণ ছাত্রনেতা হিসেবে দেশকে কোথায় নিয়ে যাওয়ার স্বপ্ন দেখেন?
আল-নাহিয়ান খান জয় : যে উদ্দেশ্য ও ত্যাগের বিনিময়ে জাতির পিতা এ দেশ স্বাধীন করেছেন আমাদের ছাত্রলীগের একজন কর্মীর স্বপ্ন জাতির পিতার সেই সোনার বাংলা গড়ে তোলার। আমাদের তরুণ প্রজন্মের অহংকার সজীব ওয়াজেদ জয়; যিনি ডিজিটাল বাংলার আলোকবর্তিকা। আমরা তরুণ প্রজন্ম চাই আর যেন কেউ বাংলাদেশকে নিয়ে কোনো ষড়যন্ত্র না করতে পারে। আমরাই পারব আগামীর বাংলাদেশ গড়তে।
এনটিভি অনলাইন : একজন মেধাবী ও পরিচ্ছন্ন রাজনীতিবিদ হিসেবে আপনার সুনাম রয়েছে, একজন পরিচ্ছন্ন রাজনীতিকের জন্য কী কী গুণ থাকা উচিত?
আল-নাহিয়ান খান জয় : এ ক্ষেত্রে যদি ছাত্র সংগঠন বলেন, তাহলে অবশ্যই তাঁকে শিক্ষার্থী হতে হবে। শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবি-দাওয়া সেগুলোর সঙ্গে একমত থাকতে হবে। এবং তাঁকে লোভ-লালসার ঊর্ধ্বে থাকতে হবে। কারণ, লোভ মানুষকে ধ্বংস করে। এ জায়গাগুলো যদি আমরা ঠিক রাখতে পারি তাহলে আমার মনে হয় কেউ আমাদের আটকাতে পারবে না।
এনটিভি অনলাইন : বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য তৈরি নিয়ে সাম্প্রদায়িক শক্তি মাথা ছাড়া দিয়ে উঠছে। আওয়ামী লীগের ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠন এটা কীভাবে রুখে দাঁড়াবে?
আল-নাহিয়ান খান জয় : আমরা এরই মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচি করেছি। এবং বলেছি এ ধরনের সম্প্রদায়িক শক্তিগুলোকে প্রতিহত করার জন্য বাংলাদেশ ছাত্রলীগ সবসময় মাঠে আছে এবং থাকবে।
এনটিভি অনলাইন : ছাত্ররাজনীতিতে আপনার কোনো মধুর স্মৃতির কথা বলেন।
আল-নাহিয়ান খান জয় : প্রথমত ছাত্রলীগের একজন কর্মী হতে পারা সৌভাগ্যের বিষয়। আর ছাত্রলীগের একমাত্র অভিভাবক যার ভ্যানগার্ড হিসেবে কাজ করি আমাদের মমতাময়ী নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার সান্নিধ্য পাওয়া। আমরা যখন একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার মধ্য দিয়ে দায়িত্ব পেয়েছি। এর পর যখন আমরা হাজারও নেতাকর্মীদের মধ্যে আমাদের ভারমুক্ত হই সেদিনও আমাদের জন্য সবচেয় স্মরণীয় মধুর দিন ছিল।