জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত ও পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি যাত্রী কল্যাণ সমিতির
পরিবহণ ধর্মঘট প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। একই সঙ্গে করোনার বিপর্যয় কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টারত নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত জনগোষ্ঠীর জীবন-জীবিকা সচল রাখার স্বার্থে অযৌক্তিকভাবে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছে সংগঠনটি।
ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে আজ শনিবার সকালে সংবাদ সম্মেলনে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী এসব দাবি জানান।
মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, ‘বৈশ্বিক মহামারি করোনা সংকটে লকডাউনসহ নানা কারণে দেশের ৭৭ ভাগ মানুষের আয় কমেছে। ফলে তিন কোটি ২৪ লাখ মানুষ নতুন করে দরিদ্র হয়েছে বলে এক সমীক্ষায় উঠে এসেছে। এমন সংকটাপন্ন দেশের মানুষজন দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে যখন দিশেহারা, ঠিক তখনই জ্বালানি তেলের দাম এক লাফে ২৩ শতাংশ বৃদ্ধির ফলে মানুষের যাতায়াত, পণ্য পরিবহণ, খাদ্যপণ্য ও কৃষিজ উৎপাদনসহ সামগ্রিক ব্যয় কয়েকগুণ বেড়ে যাবে। পণ্য ও সেবামূল্য আরেক দফা বৃদ্ধি ঘটবে এবং চরমভাবে মুদ্রাস্ফীতি বাড়বে। এতে নতুন করে কয়েক কোটি মানুষ দারিদ্রের ঝুঁকিতে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।’
মো. মোজাম্মেল হক চৌধুরী আরও বলেন, ‘বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম কম থাকায় সরকার উচ্চহারে তেল বিক্রি করে গত ছয় বছরে ধরে একচেটিয়া মুনাফা করেছে। এতে সরকার প্রায় ৬৩ হাজার কোটি টাকার বেশি আয় করেছে। মাত্র পাঁচ মাস ধরে জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষের এই কঠিন দুঃসময়ে এক লাফে ২৩ শতাংশ তেলের মূল্য বৃদ্ধি করা আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত। করোনা সংকটাপন্ন জনগণকে প্রণোদনা দিয়ে সরকার যেখানে জনগণের পাশে থাকার কথা, সেখানে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানোর মধ্য দিয়ে জনসাধারণকে আরেক দফা সংকটে ঠেলে দিয়েছে।’
যাত্রী কল্যাণ সমিতির উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য শরীফুজ্জামান শরীফ বলেন, ‘যে প্রক্রিয়ায় দাম বাড়ানো হয়েছে তা অবৈধ। জ্বালানির দাম বাড়ানোর কোনো ক্ষমতা জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের নেই। এটা করার ক্ষমতা বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশনের (বিইআরসি)। সেখানে শুনানির পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়ার নিয়ম। সরকার গায়ের জোরে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তাদের নেতাকর্মীদের বিরাট অংশের আয় বৃদ্ধিকে সাধারণ মানুষের আয় বৃদ্ধি মনে করে সরকার জনগণের বিরুদ্ধে এমন হঠকারী সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
সংবাদ সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন সংগঠনের সহ-সভাপতি তাওহীদুল হক লিটন, যুগ্ম মহাসচিব এম. মনিরুল হক, প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেন। শনিবার দুপুরে যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রচার সম্পাদক আনোয়ার হোসেনের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব কথা জানানো হয়।