জয়পুরহাটে ডিবির জালে ধরা কিডনি ক্রয়-বিক্রয়চক্রের ৭ সদস্য
জয়পুরহাটে কিডনি ক্রয় ও বিক্রয়চক্রের সাত সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। দরিদ্ররা ছিলেন এ চক্রের টার্গেট। তাঁদেরকে বিপুল অর্থের প্রলোভনে উদ্বুদ্ধ করা হত কিডনি বিক্রিতে। কিডনি বিক্রির জন্য নিয়ে যাওয়া হত দেশের বাইরেও। পরে টাকা দেওয়ার নামে করত প্রতারণা। অঙ্গহানি করে বিদেশ থেকে পাঠিয়ে দেওয়া হত দেশে। অবশেষে গতকাল শুক্রবার রাতে জেলার কালাই ও পাঁচবিবি উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে গ্রেপ্তার হন এ চক্রের সাত সদস্য।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন—কালাই উপজেলার থল গ্রামের শাহারুল, একই উপজেলার উলিপুর গ্রামের ফরহাদ হোসেন ওরফে চপল, জয়পুর-বহুতি গ্রামের মোশাররফ হোসেন ও মোকাররম হোসেন, ভেরেণ্ডি গ্রামের শাহরুল ইসলাম, দুর্গাপুর গ্রামের সাইদুল ইসলাম ফকির এবং জয়পুরহাট সদর উপজেলার হানাইল-বম্বু গ্রামের সাদ্দাম হোসেন।
ডিবির দাবি—গ্রেপ্তার সাত সদস্যের সবাই কিডনি বিক্রিচক্রের মূল হোতা কাওছার ও সাত্তারের সহযোগী।
জয়পুরহাট পুলিশ লাইন্সে আজ শনিবার দুপুর দেড়টায় জেলা পুলিশ আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন থেকে এ তথ্য জানা যায়। এ সব তথ্য জানিয়েছেন পুলিশ সুপার (এসপি) মাছুম আহাম্মদ ভূঞা।
এসপি মাছুম বলেন, ‘সংঘবদ্ধ এ দালাল চক্রের সদস্যরা বিপুল পরিমাণ অর্থ প্রদানের লোভ দেখিয়ে দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে গোপনে নিরীহ মানুষকে তাঁদের কিডনি বিক্রিতে উদ্বুদ্ধ করত। কিডনি বিক্রিতে রাজি হলে কিডনি প্রতিস্থাপনের জন্য গোপনে তাঁদেরকে রাজধানী ঢাকা এবং প্রতিবেশি দেশ ভারতসহ বিভিন্ন দেশে নিয়ে যেত। কিন্তু, কিডনি দেওয়ার পরে তাঁরা প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী টাকা না দিয়ে প্রতারণা করত। এরপর দেশে পাঠিয়ে দিত।’
পুলিশের এ কর্মকর্তা জানান, এ চক্রের ফাঁদে পড়ে কিডনি বিক্রি করে অনেকে এখন অসুস্থাবস্থায় নিজ বাড়িতে কর্মক্ষমতাহীন মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
এসপি মাছুম আরও জানান, সম্প্রতি এ দালাল চক্রের খপ্পরে পড়ে তিন কিডনি বিক্রিতা বর্তমানে দুবাইয়ে ও দুজন ভারতে অবস্থান করছেন বলে তথ্য পাওয়া গেছে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ফারজানা হোসেন, ইশতিয়াক আলমসহ বিভিন্ন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।