টাকার হিসাব চাওয়ায় বাবা-মায়ের প্রহারে প্রাণ গেল ছেলের
বিদেশ থেকে পাঠানো টাকার হিসাব চাওয়ায় বাবা-মা ও ছোট ভাইয়ের প্রহারে নিহত হয়েছেন প্রবাস ফেরত শারফুল ঢালী (২৮)। এমন অভিযোগ ওঠার পর থেকে অভিযুক্ত ওই বাবা, মা ও ছোট ভাই পলাতক রয়েছে। গতকাল বুধবার সকালে ঘটনাটি ঘটেছে ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলার পাগলা থানার চাকুয়া গ্রামে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, উপজেলার চাকুয়া গ্রামের ইসহাক ঢালীর বড় ছেলে শারফুল ঢালী দীর্ঘ আট বছর লেবানন প্রবাসী ছিলেন। ছয় মাস আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। পরে প্রবাসে কর্মরত থাকাকালে পরিবারের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পাঠানো টাকার হিসাব জানতে চায় শারফুল। কিন্তু শারফুলের বাবা তাঁর টাকার হিসাব দিতে অস্বীকৃতি জানায়। এ নিয়ে বাবা-ছেলের মধ্যে প্রায়ই ঝগড়া বিবাদ হতো। তিন মাস আগে শারফুলকে তাঁর বাবা একটি মিথ্যা মামলা দিয়ে জেলে পাঠায়।
জামিনে মুক্ত হয়ে বাড়িতে এসে কয়েকদিন পর আবারও টাকা ফেরত চাইলে পরিবারের সঙ্গে বিরোধ তীব্র হয়।
গতকাল বুধবার সকালে বাবা ইসহাক ঢালী, মা হোসেনা আরা, ছোট ভাই আশরাফুল ঢালী লোহার রড ও শাবল দিয়ে শারফুল ঢালীর মাথা, পা ও বুকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। এতে প্রায় অর্ধমৃত অবস্থায় বসতঘরের একটি রুমে তালাবদ্ধ করে রাখে। এ অবস্থায় শারফুলের চিৎকারে তাঁর চাচা-চাচিসহ এলাকাবাসী তাকে উদ্ধার করতে এলে তাদের তাড়িয়ে দেওয়া হয়।
পরে শারফুলের চাচা নুরুল ইসলাম ঢালী ও ইসমাইল ঢালী, চাচী নাছিমা খাতুন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ শাহাবুদ্দিনকে ঘটনাটি জানায়। চেয়ারম্যান স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে নিয়ে শারফুল ঢালীকে তাদের বাড়ি থেকে মুমূর্ষু অবস্থায় উদ্ধার করে।
উদ্ধারের পর প্রথমে তাকে গফরগাঁও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে শারফুল ঢালী চিকিৎসাধীন অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান।
পাগলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রাশেদুজ্জামান জানান, এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলার প্রস্তুতি চলছে।