ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন অবিলম্বে বাতিলের দাবি
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা ও গণমাধ্যমবিরোধী’। তাই এই আইন অবিলম্বে বাতিলের দাবি জানিয়েছেন সাংবাদিক নেতাদের একাংশ।
আজ শনিবার বগুড়ায় এক সাংবাদিক সমাবেশে নেতারা এই দাবি জানান। এ সময় তারা আরও বলেন, সরকার ভিন্নমত দমন ও সংবাদমাধ্যমের স্বাধীনতা হরণে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, রাষ্ট্রদ্রোহ আইনের নির্বিচারে অপব্যবহার করছে। এ সময় নেতারা, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমানের বক্তব্য গণমাধ্যমের প্রচারের ওপর দেওয়া আদালতের নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার দাবিও জানান।
এ আইনে ১০ মাস ধরে কারাবন্দি বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন- বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজীর অবিলম্বে মুক্তি দাবি করে নেতারা বলেন, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত স্বাধীন মতামত বন্ধ করতে ডেটা প্রোটেকশন আইন নামের আরেকটি কালাকানুন পাশের প্রক্রিয়া সাংবাদিক সমাজ মেনে নেবে না।
সাংবাদিক ইউনিয়ন বগুড়া (জেইউবি) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল ও সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীর মুক্তির দাবিতে শহরের টিএমএসএস মহিলা মার্কেট মিলনায়তনে এ সাংবাদিক সমাবেশের আয়োজন করে।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন সম্মিলিত পেশাজীবী পরিষদের ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ও সাংবাদিক নেতা শওকত মাহমুদ। প্রধান বক্তা ছিলেন বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ। জেইউবি সভাপতি মির্জা সেলিম রেজার সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল ওয়াদুদের সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য দেন বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, জেইউবি সাধারণ সম্পাদক গণেশ দাস, জেইউবি নেতা সৈয়দ ফজলে রাব্বি ডলার, আলহাজ মমিনুর রশীদ শাইন, মো. আবদুর রহীম, মাহফুজ মণ্ডল, আবুল কালাম আজাদ, এস এম আবু সাঈদ, আতাউর রহমান মিলন প্রমুখ।
শওকত মাহমুদ বলেন, ‘মতপ্রকাশের স্বাধীনতা আল্লাহ প্রদত্ত, কিন্তু বর্তমান ফ্যাসিবাদী সরকার মতপ্রকাশ ও ভোটের অধিকার হরণ করেছে। ভোট দেওয়ার মধ্য দিয়েও মানুষ এক ধরনের মতপ্রকাশ করে। অতএব ভোটাধিকারও আল্লাহ প্রদত্ত অধিকার।’ তিনি বলেন, এখন দেশে আওয়ামী লীগ, বিএনপি বা জামায়াতে ইসলামীপন্থি সাংবাদিক হিসেবে বিভাজন নেই। আছে ফ্যাসিবাদের পক্ষের শক্তি ও ফ্যাসিবাদ বিরোধী শক্তি। জড়তা কাটিয়ে সাহসের সঙ্গে ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন আন্দোলন জোরদার করতে হবে।
বিএফইউজে সভাপতি এম আবদুল্লাহ বলেন, সাংবাদিক নির্যাতন-নিপীড়ন ক্রমাগতভাবে বেড়ে চলেছে। প্রতি মাসে গড়ে ছয় থেকে আটজন করে সাংবাদিক হামলা, মামলাসহ নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন। ক্ষমতাধররা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনকে তাদের দুর্নীতি লুটপাটের রক্ষাকবচ হিসেবে ব্যবহার করছে। নির্যাতন, নিপীড়ন ও গণমাধ্যম দলনের বিরুদ্ধে সাংবাদিক সমাজকে ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, রুহুল আমিন গাজী দীর্ঘ প্রায় তিন যুগ সাংবাদিকদের নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তাকে বানোয়াট মামলায় গ্রেপ্তার করে ১০ মাস কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে। অবিলম্বে তাকে মুক্তি না দিলে বিএফইউজের নেতৃত্বে সাংবাদিক সমাজ সারা দেশে বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবে।