তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন কুয়াশার মতো এটি আসলে কি?
দিনে বৈশাখের প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ ও রাতে তীব্র গরমে পঞ্চগড় জেলার মানুষ হাঁসফাঁস করছে। ঠিক এর উল্টো আবহাওয়া ছিল আজ মঙ্গলবার (২ মে) সকালে। গতকাল সোমবার রাত থেকেই কুয়াশা দেখা গেছে। ভোর থেকে ঘনকুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে ছিল পঞ্চগড়। সঙ্গে ছিল মৃদু বাতাসও। ফলে কিছুটা ঠান্ডা অনুভূত হয়েছে। কুয়াশা ভেদ করে সূর্য দুয়েকবার উঁকি দিয়েছিল। কিন্তু ক্ষণিকের জন্য। সকাল নয়টা পর্যন্ত এ অবস্থা বিরাজ করেছে। তবে, বেলা বাড়ার পর ধীরে ধীরে কুয়াশা কেটে গেছে। এর আগে এমন দৃশ্য দেখা যায়নি। বৈশাখের এই প্রচণ্ড তাপপ্রবাহের মধ্যে ঘন কুয়াশার মতো আসলে এটি কী কুয়াশা না অন্য কিছু? তা নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে কৌতূহল তৈরি হয়েছে।
এদিকে আজ মঙ্গলবার (২ মে) তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রে সকাল ৯টায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১৯ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ২৯ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
ডোকরোপাড়া এলাকার বাসিন্দা সুমাইয়া স্মৃতি বলেন, ‘আজকের ভোরের দৃশ্যটা ছিল শীতকালের মতো। আকষ্মিকভাবে প্রকৃতির এমন পরিবর্তিত রূপ দেখে আমি অবাক হয়েছি। আজকের ভোরটা ছিল উপভোগ করার মতো।’
কায়েতপাড়া এলাকার শাহজাহান আলী বলেন, ‘তীব্র গরমে শরীর জ্বালা করছে। রোদের সময় বাইরে বের হওয়া যাচ্ছে না। ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত আবহাওয়া কিছুটা স্বস্তি এনে দিয়েছে।’
ফুটকিবাড়ি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী সেলিম হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন সকালে প্রাইভেট পড়তে যেতে হয়। এতদিন কুয়াশা পাইনি। আজকে কুয়াশা পেয়েছি। আমি জানি শীতের দিনে কুয়াশা পড়ে কিন্তু বুঝতে পারলাম না গরমের দিনে কেন কুয়াশা পড়ে।’
শহরের প্রবীণ ব্যক্তিত্ব আলাউদ্দীন আহম্মেদ বলেন, ‘গ্রীষ্মকালে এমন কুয়াশা আমি আগে কখনো দেখিনি।’
ময়দানদিঘী ডিগ্রি কলেজের ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগের প্রভাষক শেখ সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ‘বৃক্ষ নিধন, বেপরোয়া ইট ভাটা স্থাপন, পরিবেশ দূষণ, পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাত না হওয়াসহ জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়ার এমন রূপ দেখা যাচ্ছে।’
তেঁতুলিয়া আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. রাসেল শাহ্ বলেন, ‘বাহ্যিক চোখে কুয়াশা মনে হলেও এটি আসলে ধূলিকণা। সারা দিন ভুপৃষ্ঠের ধুলোবালি আকাশে উড়ে রাতে জলীয়বাষ্প হয়ে যায়। যেগুলো মাটির ওপরে থাকে। এটাকে কুয়াশা মনে হয়। পরিবেশ দূষণের কারণে জলবায়ুর পরিবর্তন হয়ে যাওয়ায় এমন আবহাওয়া বিরাজ করে।’