দলবেঁধে করোনার টিকা নিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা
করোনাভাইরাস টিকা গ্রহণে কোনো অপপ্রচার ও মিথ্যাচারে কান না দিয়ে দেশবাসীকে টিকা গ্রহণ করার আহ্বান জানিয়েছে আওয়ামী লীগ।
আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালে টিকা গ্রহণ শেষে আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া সাংবাদিকদের মাধ্যমে এই আহ্বান জানান।
আওয়ামী লীগের নেতারা বলেন, যে যতই অপপ্রচার করুক, সরকারের টিকাদান কার্যক্রম চলবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা রেখেছেন। পর্যায়ক্রমে দেশের ১৩ কোটি মানুষকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা টিকা প্রদানের ব্যবস্থা করবেন।
আজ সকাল সাড়ে ৮টার পর থেকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতারা উপস্থিত হয়ে টিকাদান কেন্দ্রের ফরম পূরণ করে টিকা নেওয়া শুরু করেন। কয়েকজন নেতা সস্ত্রীক টিকা নেন। সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত টিকা নেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল ইসলাম চৌধুরী নাদেল, স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যাবিষয়ক সম্পাদক ডা. রোকেয়া সুলতানা, দপ্তর সম্পাদক ও প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, শিক্ষাবিষয়ক সম্পাদক শামসুন নাহার চাঁপা, আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক শাম্মী আহমেদ, উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজী ও সৈয়দ আবদুল আউয়াল শামীম।
উপদপ্তর সম্পাদক সায়েম খান বলেন, ‘আমাদের আরও কয়েকজন নেতার টিকা গ্রহণ করার কথা রয়েছে। তাঁরা হলেন উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মুকুল বোস, ইনাম আহমেদ চৌধুরী, বন ও পরিবেশবিষয়ক সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য উপাধ্যক্ষ রেমন্ড আরেং ও আজিজুস সামাদ আজাদ ডন।
টিকা গ্রহণ শেষে সাংবাদিকদের সামনে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, জাতির পিতার কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেক দেশের বিরুদ্ধে লড়াই করে এই টিকা এনেছেন প্রান্তিক জনগণের স্বাস্থ্যের উন্নতির লক্ষ্যে। উনি মানুষকে সুরক্ষা দেওয়ার জন্য কৃষি, শিক্ষা খাতের মতোই দেখছেন। মহামারির ভয়াল এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য বাংলাদেশের প্রত্যেকটি মানুষকে সুস্থ রাখার জন্য উনি টিকার ব্যবস্থা করেছেন।
টিকা নিয়ে অপপ্রচারকারীদের বিষয়ে ডা. রোকেয়া সুলতানা বলেন, ‘অপপ্রচার আগেও ছিল সব কাজে। অপপ্রচার এখনো আছে। তার পরও মানুষ যেটা সঠিক সিদ্ধান্ত সেটাই মেনে নিচ্ছে আমরা মনে করি। জাতির পিতা যখন স্বাধীনতা এনেছিলেন তখনও অপপ্রচার ছিল। কিন্তু সব অপপ্রচারকে চ্যালেঞ্জের সঙ্গে বাস্তবায়ন করে প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। সারা বিশ্ব এখন তাকিয়ে আছে বিস্ময়ে। তাই মনে করি, যে যতই অপপ্রচার করুক, আমাদের টিকাদান কার্যক্রম চলবে। জাতির পিতার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে স্বাস্থ্য সুরক্ষায় যেভাবে দায়িত্ব পালন করছেন, এতে আমরা প্রত্যেকে তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।’
‘বাংলাদেশের জনগণ প্রত্যেকেই যেন অপপ্রচারে না গিয়ে শরীর সুস্থ রাখার জন্য টিকা গ্রহণ করে। এটা শুধু আমার আহ্বান নয়, এটা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর আহ্বান’ বলেও জানান ডা. রোকেয়া সুলতানা।
ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, ‘আমাদের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একটি অংশ এখানে টিকা গ্রহণ করেছে। আমাদের মধ্যে যাঁরা জনপ্রতিনিধি আছেন, সরকারের মন্ত্রী হিসেবে আছেন, তাঁরা ইতোমধ্যে টিকা গ্রহণ করেছেন। আমরা আজকে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির একটি অংশ এবং ধানমণ্ডির কার্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী আমরা আগেই নিবন্ধন করেছিলাম। আজকে আমরা একটি সরকারি টিকাদান কেন্দ্রে টিকা গ্রহণ করেছি, পরিবেশ খুবই ভালো। আমরা সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলেছি, তারা খুবই আগ্রহী টিকা পেতে।’
আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা ২০২০ সালের বাজেট অধিবেশনে জাতিকে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যখনি ভ্যাকসিন আবিষ্কার হবে, প্রথম সুযোগেই বাংলাদেশের নাগরিকদের জন্য তিনি ভ্যাকসিন সুনিশ্চিত করবেন। তিনি কথা রেখেছেন। ইতোমধ্যে আমরা ৭০ লাখ টিকা সংগ্রহ করেছি এবং পর্যায়ক্রমে ১৩ কোটি মানুষকে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা টিকা প্রদান করবেন।
প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বিপ্লব বড়ুয়া বলেন, যেখানে উন্নত রাষ্ট্র ইউরোপ-আমেরিকায় মানুষ টিকা পাচ্ছে না, সেখানে বাংলাদেশের মতো একটি দেশের নাগরিকের জন্য প্রধানমন্ত্রী টিকা গ্রহণের ব্যবস্থা গ্রহণ করেছেন। আমরা টিকা দিয়েছি। আমরা দেশের মানুষকেও আহ্বান জানাব, পর্যাপ্ত টিকার ব্যবস্থা রয়েছে। আপনারাও দেশের যেখানে টিকাদান কেন্দ্র রয়েছে, সেখানে গিয়ে টিকা গ্রহণ করবেন।