দেশের চরাঞ্চলে অর্থনীতির অপার সম্ভাবনা : জাহিদ ফারুক
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেছেন, বহু নদ-নদী বেষ্টিত বাংলাদেশের একটি বড় অংশ চরাঞ্চল। দেশের চরাঞ্চলগুলো অর্থনীতির অপার সম্ভাবনা রয়েছে।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী আজ বুধবার রাজধানীর পানি ভবনের মাল্টিপারপাস হলরুমে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, চরে বসবাসরত অধিকাংশ দরিদ্র শ্রেণীর মানুষ মৌলিক চাহিদা বঞ্চিত। সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ বির্নিমাণে চরাঞ্চলের মানুষের জীবনমানের উন্নয়নের জন্য টেকসই প্রকল্প হাতে নিয়েছে। উপকূলীয় চরাঞ্চলে বসবাসরত জনগণের ক্ষুধা ও দারিদ্র্য হ্রাসের লক্ষ্যে প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। চরে রয়েছে বিপুল জনগোষ্ঠী ও বিস্তীর্ণ উর্বর ভূমি। চর আমাদের কৃষি তথা অর্থনীতির অপার সম্ভাবনাময়। ভূমিহীন জনগোষ্ঠীর ঠিকানা। নেদারল্যান্ড সরকার ও ইফাদ এর আর্থিক ও কারিগরি সহায়তায় এই প্রকল্পের কাজ এগিয়ে চলছে।
প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক বলেন, উন্নয়নের যে জোয়ার সারা দেশে চলছে, তা থেকে বাধ যাবে না চরাঞ্চলের মানুষ। বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল, বিশেষত নোয়াখালীতে চর উন্নয়ন ও বসতি স্থাপন প্রকল্প-১, ২, ৩, ও ৪ এর মাধ্যমে ১৯৯৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ব্যাপক চর উন্নয়ন এবং ভূমি মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে ভূমি বন্দোবস্তের কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়। ইতোমধ্যে এ প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে ১ লাখ ২২ হাজার ৬৭৩ হেক্টর জমির সার্বিক উন্নয়ন সাধন করা হয়েছে। নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত ১ লাখ ৪৪ হাজার ১৪৫ ভূমিহীন পরিবারকে পুনর্বাসন করা হয়েছে। এই প্রকল্পের আওতায় উপকারভোগী ৭ লাখ ৭১ হাজার ৫৩৭ জন।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, টেকসই উনয়নের জন্য জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা জরুরি। এজন্য শতবর্ষের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ডেল্টা প্লানের প্রায় ৮০ শতাংশ বাস্তবায়ন পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব। জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি মোকাবিলায় আমরা উন্নত দেশের মতোই কাজ করছে সরকার। উপকূলীয় মানুষ, পিছিয়ে পড়া মানুষ যেন ভালো থাকে এ লক্ষ্যে কাজ অব্যাহত রয়েছে। এই প্রকল্পটি বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, বন বিভাগ, ভূমি মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সমন্বয়ে গঠিত। প্রকল্পটির প্রথম তিনটি পর্যায়ের জন্য এটি বাংলাদেশ সরকার ও নেদারল্যান্ডস সরকারের আর্থিক সহায়তা পেয়েছিল। প্রকল্পটির মাধ্যমে চরকে সবুজ খামারে পরিবর্তন করছে। প্রকল্পের পঞ্চম পর্যায় ২০২৪ সালের জুনে শেষ হওয়ার কথা রয়েছে।
সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম। এসময় পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ফজলুর রশিদ ও নেদারল্যান্ড দূতাবাসের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী সৈয়দ আহমেদ।