নওগাঁয় ট্রাক-অটোরিকশার সংঘর্ষে তিন শিক্ষকসহ পাঁচ জন নিহত
নওগাঁ সদর উপজেলার বাবলাতলী মোড় নামক স্থানে ট্রাক ও সিএনজিচালিত অটোরিকশার সংঘর্ষে তিন শিক্ষকসহ পাঁচ জন নিহত হয়েছে। উপজেলার বাবলাতলী মোড় নামক স্থানে নওগাঁ-রাজশাহী মহাসড়কে আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহত পাঁচ জন হলেন নিয়ামতপুর উপজেলার ভাদুরন্দ গ্রামের ওমর আলীর মেয়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌস (৩৮), রামপুরা গ্রামের শিক্ষক মকবুল হোসেন (৬০), শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন (৪৭), অটোরিকশার চালক ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের সেলিম উদ্দিন (৪৫) ও ট্রাকের হেলপার গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলার লেলিন হোসেন (৩৫)।
নওগাঁর সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টার দিকে নওগাঁর দিক থেকে মাছের ফিডবোঝাই একটি ট্রাক রাজশাহীর দিকে এবং সিএনজিচালিত একটি অটোরিকশা নওগাঁর দিকে যাচ্ছিল। ট্রাক ও অটোরিকশাটি বাবলাতলীর মোড়ে পৌঁছালে হঠাৎ করে বলিহার সংযোগ সড়ক থেকে একটি মাটিবোঝাই ট্রাক্টর মহাসড়কে উঠে পড়ে। এ সময় ট্রাক্টরকে পাশ দিতে গিয়ে ট্রাক ও অটোরিকশাটির মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ওই সময় ট্রাকটি অটোরিকশাসহ পাশের জলাশয়ে পড়ে যায়। এতে অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে যায় এবং পাঁচ জন নিহত হন।
এ ঘটনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নুর জাহানকে (৩২) আহত অবস্থায় নওগাঁ ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তিনি নিহত শিক্ষক জান্নাতুল ফেরদৌসের বোন। তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। জানা গেছে, নিহত জান্নাতুল ফেরদৌস, মকবুল হোসেন ও দেলোয়ার হোসেন এবং আহত নুর জাহান সবাই কোনো এক প্রশিক্ষণে অংশ নিতে নওগাঁয় যাচ্ছিলেন।
উদ্ধারকাজে অংশগ্রহণকারী ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সিনিয়র স্টেশন ইনচার্জ মো. শফিউল ইসলাম জানান, সংবাদ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু করেন তাঁরা। পরে মান্দা ফায়ার সার্ভিসের আরও একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে যোগ দেয়। পরে নওগাঁ ও মান্দা ফায়ার সার্ভিস টিম যৌথভাবে উদ্ধারকাজ পরিচালনা করে। ট্রাকের চাপায় অটোরিকশাটি দুমড়েমুচড়ে গিয়ে পানির নিচে ডুবে ছিল। অটোরিকশার বিভিন্ন অংশ কেটে ভেতর থেকে একটি একটি করে পাঁচটি লাশ উদ্ধার কয়রা হয়েছে। উদ্ধার করা মরদেহগুলো ফায়ার সার্ভিস নওগাঁ সদর মডেল থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেছে।
ওসি নজরুল ইসলাম জুয়েল জানান, এ মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নওগাঁ সদর মডেল থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। নিহত পাঁচ জনের মরদেহ মর্গে রাখা হয়েছে। নিহতদের পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় কোনো অভিযোগ করা না হলে ময়নাতদন্ত ছাড়াই মরদেহ পরিবারগুলোর কাছে হস্তান্তর করা হবে।
এদিকে, নওগাঁ সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মির্জা ইমাম উদ্দিন জানান, নিহতদের পরিবারকে দুর্যোগ ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের আওতায় ২৫ হাজার টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। আর নিহতদের পারিবারিক অবস্থা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসকের তহবিল থেকে প্রয়োজনে আরও অনুদান দেওয়া হবে।