নারায়ণগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ
বেশকিছু দিন ধরে রাজধানী ও এর আশপাশের কয়েকটি এলাকায় হঠাৎ করেই ডায়রিয়ার প্রকোপ প্রকট আকার ধারণ করেছে। এ অবস্থায় ডায়রিয়া থেকে বাঁচতে সচেতন হওয়ার পরামর্শ দিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর।
এরই মধ্যে রাজধানীর বাইরে ডায়রিয়া পরিস্থিতি ভয়াবহ রূপ নিচ্ছে নারায়ণগঞ্জ ও ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়ও। নারায়ণগঞ্জে গত ২০ দিনে আক্রান্ত হয়েছে চার হাজারের অধিক মানুষ। চিকিৎসকরা বলছেন, শুকনো মৌসুমে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব একটু বেশিই হয়ে থাকে। এ ছাড়া বিশুদ্ধ পানির অভাব এবং বাইরে খোলা খাবারের কারণে ডায়রিয়ার প্রাদুর্ভাব বেশি দেখা দিয়েছে। শুধু জেনারেল হাসপাতালে (সাবেক ভিক্টোরিয়া) ডায়রিয়ার চিকিৎসা দেওয়া হয়ে থাকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডায়রিয়া রোগীদের চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছে। বেশির ভাগ রোগী ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে।
নারায়ণগঞ্জ ১০০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালে মাত্র ১৬টি সিট রয়েছে ডায়রিয়া রোগীর জন্য। গত ২০ দিনে এই হাসপাতালে প্রতিদিন ১০০ থেকে ২০০ রোগী চিকিৎসা নিয়েছে। ২০ দিনে ডায়রিয়া রোগীর এ সংখ্যা দাঁড়িয়েছে চার হাজারেরও অধিক। শুরুর দিকে শহরতলীর রোগী অধিক আসতে দেখা যেত। কিন্তু এখন সদর এলাকা থেকেও প্রতিদিন ডায়রিয়া রোগী হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। তবে চিকিৎসাসেবা নিয়ে রোগীদের কোনো অভিযোগ নেই।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের এক কর্মী সাইদুর রহমান জানান, বেশির ভাগ রোগী দিনমজুর, শ্রমিক বা খেটে খাওয়া মানুষ। যারা বাইরে খোলা খাবার বেশি খেয়ে থাকে। হাসপাতালে রোগীর চাপ খুব বেশি। শয্যা সংখ্যা কম হলেও অতিরিক্ত কিছু শয্যার ব্যবস্থা করে রোগীদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। যাদের একটু ভালো মনে হয় তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। কিন্তু চিকিৎসা ছাড়া কোনো রোগী ফেরত দেওয়া হয় না।
নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. ফরহাদ সার্বক্ষণিক নজর রাখছেন। আজও দুপুর ১২টা পর্যন্ত ৭০ জন ডায়রিয়ার রোগী এই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। তাদের ওষুধও হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি।
ডায়রিয়া মুক্ত থাকার জন্য বাইরের খোলা খাবার থেকে বিরত থাকার এবং পানি ফুটিয়ে পান করার পরামর্শ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. ফরহাদ।
এদিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে শিহাব উদ্দিন বিপু জানিয়েছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। আজ সোমবার সকালে নতুন আরও ১৬ জন রোগী ভর্তি হয়েছে। শুধু জেলা সদর হাসপাতালে ১৩৬ জন ভর্তি আছে। বয়স্কদের পাশাপাশি শিশুরাও আক্রান্ত হচ্ছে। রোগীর স্বজনরা জানিয়েছে চিকিৎসকরা নিয়মিত না আসায় তারা কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে পর্যাপ্ত ওষুধ ও স্যালাইন মজুদ রয়েছে। জেলা সদর হাসপাতালসহ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে । হঠাৎ করে গরম বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ। নারী শিশুসহ বিভিন্ন বয়সের মানুষ এতে আক্রান্ত হচ্ছে। জেলা সদর হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে এখন রোগীদের উপচেপড়া ভিড়।
উল্লেখ্য, ২০ মার্চের পর থেকে জেলায় ডায়রিয়ার প্রকোপ বাড়তে শুরু করেছে।