নারী শ্রমিককে গণধর্ষণ : চারজনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন, দুজনকে খালাস
নরসিংদীর পলাশ উপজেলায় এক নারী শ্রমিককে (২০) গণধর্ষণ মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন ও দুজনকে খালাস দিয়েছেন হাইকোর্ট। আজ মঙ্গলবার বিচারপতি ভীষ্মদেব চক্রবর্তী ও বিচারপতি খোন্দকার দিলীরুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
হাইকোর্টে মৃত্যুদণ্ড থেকে যাবজ্জীবন পাওয়া আসামিরা হলেন- আশিকুর রহমান (৩৫), ইলিয়াছ মিয়া (২১), মো. রুমিন (২০) ও মো. রবিন (২০)। মৃত্যুদণ্ড থেকে খালাস পাওয়া দুই আসামি হলেন- মো. ইব্রাহিম (২২) ও আবদুর রহমান (২৪)।
আদালতে আসামিদের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মনসুরুল হক চৌধুরী। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হারুনুর রশিদ ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল জাহিদ আহমদ হিরো।
এর আগে ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট নরসিংদীর পলাশে এক নারী শ্রমিককে (২০) ধর্ষণের দায়ে ছয়জনের মৃত্যুদণ্ড দেন আদালত। জেলা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক শামীম আহাম্মদ এ রায় দেন।
নিম্ন আদালতে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন পলাশ উপজেলার বাগপাড়া এলাকার আশিকুর রহমান (৩৫), ইলিয়াছ মিয়া (২১), মো. রুমিন (২০), মো. রবিন (২০), মো. ইব্রাহিম (২২) ও আবদুর রহমান (২৪)। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি প্রত্যেককে এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। দণ্ডপ্রাপ্ত ইব্রাহিম ও আবদুর রহমানকে আলাদাভাবে একই মামলায় পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দুই লাখ টাকা করে জরিমানা এবং সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেওয়া হয়। পরে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিদের ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে এবং নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন আসামিরা।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৩ সালের ২৩ মে দুপুরে পলাশ উপজেলার বাগপাড়া এলাকার ওই শ্রমিক কাজ শেষে একই এলাকায় কারখানার নিজস্ব মেসে ফিরছিলেন। তিনি জনতা পাটকলের ফটকের সামনে পৌঁছালে ওই ব্যক্তিরা তাকে জোর করে পাশের একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান। পরে আশিকুর, ইলিয়াছ, রুমিন, রবিনসহ ছয়জন তাকে পালাক্রমে ধর্ষণ করেন। এর মধ্যে অন্যদের ধর্ষণের ভিডিওচিত্র ধারণ করেন অভিযুক্ত ইব্রাহিম ও আবদুর রহমান। ধর্ষণের পর তাকে আধা ঘণ্টা আটকে রাখেন তারা। এ সময় কান্নাকাটি করলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়।
সূত্র জানায়, পরের দিন ওই শ্রমিক কারখানায় গিয়ে ঘটনাটি এক নারী নিরাপত্তাকর্মীকে জানান। তিনি কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানালে প্রশাসন বিভাগের সহকারী ব্যবস্থাপক এ এস এম সাদেকুল ইসলাম বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে পলাশ থানায় ছয়জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা করেন।