নিরাপত্তা প্রমাণের জন্য ক্ষমতাসীনদের আগে টিকা নেওয়া উচিত : রিজভী
রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী করোনার টিকা আগে নিলে ‘অসুবিধা কোথায়’, এমন প্রশ্ন রেখে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘ভ্যাকসিন নিয়ে সরকার জনগণের সঙ্গে তামাশা শুরু করেছে। নিরাপত্তা প্রমাণের জন্য ক্ষমতাসীনদের আগে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা উচিত।’
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় আজ রোববার দুপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও দলটির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ছোটো ছেলে আরাফাত রহমান কোকোর ষষ্ঠ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত দোয়া মাহফিলে এ কথা বলেন রিজভী।
এ সময় রিজভী আরো বলেন, ‘ভারতে ভ্যাকসিন নিয়ে অনেকে মারা গেছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে ২০ লাখ ডোজ ভ্যাকসিন পাঠানো হয়েছে। এজন্য আমরা বলেছিলাম, নিরাপত্তা প্রমাণের জন্য ক্ষমতাসীনদের আগে ভ্যাকসিন গ্রহণ করা উচিত। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সবার আগে ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন এবং ডা. ফসি আগে নিয়েছিলেন। তাতে করে ভ্যাকসিনের প্রতি মার্কিনিদের আস্থা ফিরেছে, ভীতি দূর হয়েছে। সুতরাং আমাদের দেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী ভ্যাকসিন আগে নিলে অসুবিধা কোথায়? তাঁরা আগে ভ্যাকসিন নিলে এই ভ্যাকসিনের ওপর জনগণের আস্থা বাড়বে।’
রিজভী আরো বলেন, ‘(তথ্যমন্ত্রী) হাছান মাহমুদ মিথ্যার যন্ত্রে পরিণত হয়ে গেছেন। মিথ্যার যন্ত্রে পরিণত হয়ে বলছেন, বিএনপিকে এ ভ্যাকসিন আগে দেবেন। তাদের উদ্দেশ্য হলো, বিএনপিকে নিধন করা। খুন-গুম দিয়ে বিএনপিকে নিধন করার চেষ্টা করেছিল। এখন ভ্যাকসিনের নিরাপত্তার জন্য বিএনপিকে আগে দিয়ে নিধন করার চেষ্টা করছে। এ সরকার মানুষের মরা-বাঁচা নিয়েও তিরস্কার শুরু করেছে।’
এ সময় আরাফাত রহমান কোকোর স্মৃতিচারণ করে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকো রাজনৈতিক ব্যক্তি ছিলেন না। তবে রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান ছিলেন। রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান হিসেবে রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ তাঁকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে। এ দেশের কোটি কোটি মানুষের সমাদৃত নেত্রী খালেদা জিয়াকে সরকার ঘিরে রেখেছে গুলশান অফিসে।’
রিজভী বলেন, ‘তখন হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের উদ্যোগে মাঝে মধ্যে ঝটিকা মিছিল দেখতাম। সারা দেশের নেতাকর্মীরা রাস্তায় অবরোধ তৈরি করেছিল। সেই মুহূর্তে একজন মা সরকারের নিপীড়ন-অত্যাচারের শিকার। গোলমরিচ যাঁর চোখে, তিনি যদি তাঁর কনিষ্ঠপুত্রের মৃত্যুসংবাদ শোনেন, তখন সেই মায়ের কী অবস্থা হতে পারে? সেই বেদনা কি সইবার মতো? সেই বেদনা ছিল হিমালয় পর্বতের মতো ভারী। সেই সময় জনগণ তা উপলব্ধি করেছিল।’
বিএনপির এই নেতা আরো বলেন, ‘আরাফাত রহমান কোকোর মরদেহ যখন ঢাকায় আনা হয়েছিল, তখন সারা দেশে একদিকে গুম-খুন, অত্যাচার-নিপীড়ন, আর অন্যদিকে কোকোর জানাজায় মানুষের ঢল নেমেছিল। এত অত্যাচার-নির্যাতনের মাঝেও মানুষের ঢল দেখে সেদিনই শেখ হাসিনা বার্তা পেয়ে গিয়েছিলেন। আর সেদিন থেকেই বিএনপির ওপর অত্যাচার আরো বহুমাত্রায় বেড়ে গিয়েছিল। সেদিন থেকেই শেখ হাসিনা আরো অত্যাচারী হয়ে উঠেছিলেন।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সুযোগ্য সহধর্মিনী এবং বারবার যিনি স্বৈরাচারের অন্ধকার থেকে গণতন্ত্রকে উদ্ধার করেছেন, সেই দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এখনো অসংখ্য মিথ্যাচার-নিপীড়ন সহ্য করেও আপন শিরদাঁড়ায় সংগ্রাম করছেন।’
দোয়া মাহফিলে আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুস সালাম আজাদ, মীর নেওয়াজ আলী প্রমুখ।