নির্বাচন কমিশন গঠন আইনের তীব্র সমালোচনা বিএনপির
নির্বাচন কমিশন নিয়োগে মন্ত্রিসভায় যে আইনের খসড়া অনুমোদন হয়েছে তাতে ‘পর্বতের মূষিক প্রসব’ বা একটি ‘পচা কদু’ হতে যাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে বিএনপির স্থায়ী কমিটি।
সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত স্থায়ী কমিটির বৈঠকের সিদ্ধান্ত জানাতে গিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এ মন্তব্য করেন।
সোমবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘প্রধান নির্বাচন কমিশনার এবং নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ বিল-২০২২’ এর খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন পায়। চলতি অধিবেশনে আগামী রোববার বিলটি পাসের জন্য সংসদে উপস্থাপন করবেন আইনমন্ত্রী্ আনিসুল হক।
আইনমন্ত্রী্ বলেন, অনুগত ও অপদার্থ নির্বাচন কমিশন গঠনের চলমান প্রক্রিয়াকে দলীয় স্বার্থে আইনি রূপ দেওয়ার সরকারি অপপ্রয়াসের ফলাফল হবে ‘যেই লাউ, সেই কদু’। এবার সম্ভবত হতে যাচ্ছে একটি পচা কদু। এটা পর্বতে মূষিকের চেয়ে বেশি কিছু প্রসব করবে না। এতো দিন ধরে যেটা প্রশাসনিক কায়দায় হয়েছে এখন সেটা আইনি কায়দায় হবে। আমরা ওইজন্য বলেছি যে, ‘যেই লাউ, সেই কদু।
‘পচা কদু’ বলার কারণও ব্যাখ্যা করে নজরুল ইসলাম বলেন, পচা কদু এজন্য বলছি যে খসড়া আইন আরেক প্রস্তাব করা হয়েছে যে, সরকারি চাকরির দীর্ঘ অভিজ্ঞতা ছাড়া কেউ এটার সদস্য হতে পারবেন না। অর্থাৎ সিভিল সোসাইটির কেউ অথবা কোনো শিক্ষাবিদ, কোনো আইনজ্ঞ তারা কেউ সদস্য হতে পারবেন না। দুনিয়ার কোথায় এরকম বিধিনিষেধ আছে। এই যে সারা জীবন সরকার আদেশ মেনে চলার যাদের অভ্যাস সেই সরকারি কর্মকর্তা বা যাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে চাকরি করার তাদেরকেই দিয়ে শুধু নির্বাচন কমিশন হবে; এরকম একটা আইন করা-এটা তো সেই কদু; আমরা সেজন্য বলেছি যে, সম্ভবত পচা কদু হতে যাচ্ছে।
খসড়া আইনের সমালোচনা করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, বিনা ভোটের অনির্বাচিত একটি অবৈধ সরকারের নিকট থেকে জনগণ এর চেয়ে বেশি কিছু প্রত্যাশা করে না। তারা মনে করে যে, একটি নিরপেক্ষ, স্বাধীন যোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের নৈতিক যোগ্যতা ও সামর্থ্য আছে শুধু একটি নির্বাচিত সরকারের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচন নয় জানিয়ে নজরুল ইসলাম খান বলেন, আমরা তো এই সরকারের এবং এই সরকারি প্রশাসনের অধীনে নির্বাচন করতে রাজি না। আমরা এটা বলে দিয়েছি যে, এই সরকার যারা জনগণের ভোটে নির্বাচিত না, তারা গণবিরোধী এবং তাদের সাজানো যে প্রশাসন তার অধীনে কোনো নির্বাচনে আমরা যাব না।
রাষ্ট্রপতির সংলাপ অর্থহীন আখ্যা দিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, আমরা দেখলাম সেটা হলো, একদিক থেকে রাষ্ট্রপতিরও কোনো ক্ষমতা নেই। যারা গেছেন তাদেরও কোনো ক্ষমতা নাই। এই সংলাপ অর্থহীন এটা ইতিহাস প্রমাণ করে। এই সংলাপে কোনো কিছুই অর্জিত হয়নি; বরঞ্চ ক্রমান্বয়ে পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে।