নীলফামারীতে বাড়ছে ডায়রিয়ার প্রকোপ, বেশি আক্রান্ত শিশুরা
বিভিন্ন রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে নীলফামারীতে। বিশেষ করে ডায়রিয়া, সর্দি, জ্বর, কাশি ও বুকে ব্যথা। এসব রোগীর মধ্যে ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত শিশুরা। আবহাওয়ার পরিবর্তনের ফলে রোগীর সংখ্যা বাড়ছে, বলছেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা পানি পানের দিক দিয়ে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বনে দিয়েছেন পরামর্শ।
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতাল ঘুরে সোমবার দেখা গেছে, সেখানে বহির্বিভাগ ও অভ্যন্তরীণ বিভাগে রোগীর উপচেপড়া ভিড়। শিশু ওয়ার্ডে নতুন রোগী ভর্তির জায়গা নেই। অতিরিক্ত রোগীর সেবা দিতে গিয়ে হিমশিম সেবাদানকারী নার্সদের।
হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হওয়া জেলা সদরের খোকশাবাড়ি ইউনিয়নের সিংগিমারী এলাকার বাসিন্দা পিংকিং আক্তার বলেন, ‘কয়েকদিন থেকে ছেলে আদিল আহমেদ অসুস্থ্। সর্দিজ্বর, কাশির পাশাপাশি পেট ব্যথা ছিল। বাইরে ডাক্তার দেখিয়েও কমছিল না। বাধ্য হয়ে আজ হাসপাতালে ভর্তি করাতে হলো।’
মরিয়ম বেগম তাঁর সাত বছর বয়সি ছেলে মুহিন হোসেনকে নিয়ে এসেছেন সোনাখুলি থেকে। দুজনই সোমবার সকালে ভর্তি হয়েছেন হাসপাতালের ডায়রিয়া ওয়ার্ডে। কয়েকদিন থেকে অসুস্থ্ হওয়ায় এখানে এসেছেন তারা।
মরিয়ম বেগম জানান, শুক্রবার থেকে ডায়রিয়া শুরু হয়। বাড়ে আবার কমে। একই অবস্থা ছেলেরও।
শহরের উকিলের মোড় এলাকার বাসিন্দা রুবি বেগম জানান, আমার সাত মাস বয়সি মেয়ের প্রায় জ্বর আসছে, কমছেই না। বিভিন্ন সময়ে ডাক্তার দেখানো হয়েছিল। তারপরও না কমায় পেট ব্যথাসহ আজ হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়েছে।
শিশু ওয়ার্ডের চিকিৎসক প্রীতিলতা রায় এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘গেল কিছুদিন থেকে রোগীর চাপ বেড়েছে কয়েক গুন। এর মধ্যে শিশুর সংখ্যা বেশি। নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। বিশেষ করে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরা বেশি।’
‘আমরা যথাযথ চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি’ উল্লেখ করে ডা. প্রীতিলতা বলেন, ‘হাসপাতালে এক শয্যায় তিন জনকেও চিকিৎসা দিতে হচ্ছে।’
নীলফামারী জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক আব্দুর রহিম জানান, আজ হাসপাতালে ডায়রিয়া ওয়ার্ডে ৩১ জন ভর্তি রয়েছেন। এর মধ্যে শিশুই ১৮ জন। আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন শিশুসহ বৃদ্ধরা। এর মধ্যে সর্দি, জ্বর, কাশি, পেট ব্যথা ও ডায়রিয়া রয়েছে। তবে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের মধ্যেই রয়েছে।’
এই চিকিৎসক আরও বলেন, ‘খাওয়ার ব্যাপারে একটু সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। বিশেষ করে পচাবাসি খাবার পরিহার করতে হবে। বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।’
সিভিল সার্জন ডা. জাহাঙ্গীর কবির এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘ডায়রিয়া নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। তবে অন্যান্য রোগীর সংখ্যা সিটের তুলনায় অনেক বেশি। গেল ১৫ দিনে সর্বোচ্চ ১০০ জন আক্রান্ত হয়েছিলেন জেলায়। আজ গোটা জেলায় ৭৬ জন রোগী রয়েছে।