পদ্মায় স্রোতের বিপরীতে চলছে না ডাম্প ফেরি
দেশের দক্ষিণবঙ্গের ২১ জেলার প্রবেশদ্বার হিসেবে খ্যাত মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ফেরিঘাট। রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যানবাহনে চড়ে যাত্রীরা শিমুলিয়াঘাটে উপস্থিত হয়ে ফেরি ও লঞ্চে পদ্মা পাড়ি দেয়। ফেরিঘাটের যানবাহনের দীর্ঘ সারি আর লঞ্চঘাটে যাত্রীদের সরগরম থাকে ফেরিঘাট এলাকা। পণ্যবোঝাই ট্রাক, প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস, পিকআপভ্যান, মোটরবাইক, দূরপাল্লার বাস সব ধরনের যানবাহনসহ যাত্রীরা ফেরিতে পার হয়ে থাকে।
মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া-বাংলাবাজার নৌরুটে ১৭টি ফেরি পারাপার করলেও ঈদের আগ থেকে বেশ কিছুদিন ধরে ১০টি ফেরি দিয়ে যানবাহন ও যাত্রী পারাপার করছে। এ ১০টি ফেরির মধ্যে রয়েছে রোরো ও মাঝারি ছোট ধরনের। তবে শিমুলিয়া বাংলাবাজার নৌরুটে ছয়টি ডাম্প ফেরি (টানা ফেরি) ঈদের আগ থেকে বন্ধ রয়েছে। পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতে এসব টানা ফেরি পাল্লা দিয়ে চলতে পারে না। দুর্ঘটনা এড়ানো জন্য ও দীর্ঘ সময় লাগে পদ্মা পাড়ি দিতে তাই বন্ধ রয়েছে ফেরিগুলো।
বিআইডাব্লিউটিসি সূত্রে জানা যায়, বন্ধ থাকা ফেরিগুলো হলো টাপেলো, রানীগঞ্জ, রানীক্ষেত, যমুনা, রায়পুরা ও ল্যান্টন। এসব ফেরি প্রায় ৩০ থেকে ৪০ বছরের পুরনো। আগে এসব ফেরি দিয়ে পাট টানা হত। জুলাই-আগস্ট মাসে নদীতে স্রোতের বিপরীতে এসব টানা ফেরি এখন চলতে পারে না। দুর্ঘটনা এড়াতে শিমুলিয়া ১ নম্বর ফেরিঘাটে তিনটি ও বাংলাবাজার ফেরিঘাট এলাকায় পন্টুনে বাকি ফেরিগুলো নোঙর করে রাখা হয়েছে।
ফেরিচালক লাল মিয়া বলেন, ‘আমি আইটি-৯৬ ফেরি চালাই। টানা ফেরি আরেকটি ট্যাগ বোটের সাহায্যে টানা হয়। আমি তিন বছর চালাই। আগে আইটি-৯০ চালাইছি। ফেরির বয়স প্রায় ৪৫ বছরের উপরে। একটি দুর্ঘটনা ঘটে, এরপর থেকে বন্ধ থাকে। আর এখন পদ্মা নদীতে তীব্র স্রোত। পদ্মার স্রোত সেতুর নিচ দিয়া যাইতে হয়, দুর্ঘটনা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই ফেরি চলাচল বন্ধ আছে।
আবু হানিফ আইটি-৯৬ তে আছি বেশ কয়েক বছর ধরে। এই নৌরুটে ছয়টি টানা ফেরি রয়েছে। আরও একটি ছিল সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে বিআইডাব্লিউটিস শিমুলিয়া ঘাটের সহকারী ব্যবস্থাপক সাফায়েত আহমেদ বলেন, ‘নৌরুটের বহরে বর্তমানে ১৭টি ফেরি থাকলেও চলাচল করছে ১০টি। ডাম্প ফেরি শিমুলিয়া প্রান্তে তিনটি এবং বাংলাবাজার প্রান্তে তিনটি নোঙর করে রাখা হয়েছে। দুর্ঘটনা এড়ানোর জন্যই এই ফেরিগুলো চলাচল করছে না। ফেরিগুলো বেশ পুরনো। অনেকগুলো ফেরি এরই মধ্যেই ৫০ বছরের উপরে বয়স হয়েছে। পদ্মা নদীর তীব্র স্রোতের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে এই ফেরিগুলো সময়োপযোগী নয়। এদিকে দেশের মেগা প্রজেক্ট পদ্মা সেতু প্রকল্প কাজ চলছে। এরই মধ্যে একটি দুর্ঘটনা ঘটেছে। যার জন্য ঈদের আগে থেকেই এই ফেরিঘাট এলাকায় পল্টনে বেঁধে রাখা হয়েছে।’