প্রকল্পের বকেয়া অর্থ দ্রুত বরাদ্দের দাবিতে রাজশাহী পাউবো ঘেরাও
প্রকল্প ও আপদকালীন জরুরি কাজ বাস্তবায়নে জটিলতা নিরসন এবং বাস্তবায়িত প্রকল্পের বকেয়া অর্থ বরাদ্দের দাবি জানিয়েছে রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) সম্মিলিত ঠিকাদাররা। এ দাবিতে আজ রোববার সকালে রাজশাহী পাউবো অফিসের সামনে বিক্ষোভ মিছিল, সমাবেশ ও ঘেরাও কর্মসূচি পালন করা হয়। পরে পাউবো মহাপরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দেওয়া হয়। স্মারকলিপির অনুলিপি সংশ্লিষ্ট প্রতিমন্ত্রী, উপমন্ত্রী, স্থানীয় সংসদ সদস্য, সিটি মেয়র ছাড়াও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে পাঠানো হয়েছে।
রাজশাহী পাউবোর সম্মিলিত ঠিকাদার সমাজের ব্যানারে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পাউবো ঠিকাদার সমিতির সভাপতি মাহফুজুল আলম লোটন। বক্তব্য দেন পাউবো ঠিকাদার সমিতি ও মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সম্পাদক ডাবলু সরকার, রাজশাহী চেম্বারের সাবেক পরিচালক জামাত খান, প্রকৌশলী খাজা তারেক, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য ফ্রন্টের ট্রাস্টি তপন কুমার সেন, বীর মুক্তিযোদ্ধা বজলার রহমান, ঠিকাদার আতিকুর রহমান, মাসুদ রানা শাহীন, কেএম জোবায়েদ হোসেন জিতু, সাইফুল ইসলাম টুকু, আবু বক্কর সিদ্দিক ও সাজ্জাদ হোসেন।
বক্তারা বলেন, ঝুঁকি নিয়ে কাজ করলেও প্রকল্পিত কাজের বিপরীতে সময় মতো টাকা পাওয়া যায় না। ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় তাদের। এ অবস্থায় ঠিকাদারদের রক্ষায় অবিলম্বে প্রকল্প ও আপদকালীন জরুরি কাজ বাস্তবায়নে জটিলতা নিরসন এবং বাস্তবায়িত প্রকল্পের বকেয়া অর্থ বরাদ্দের দাবি জানান তারা। কাজের বিপরীতে অর্থ প্রাপ্তিতে ঠিকাদারদের হয়রানি বন্ধেরও দাবি জানান বক্তারা।
এদিকে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, দেশে যখন বন্যায় প্লাবিত হয়ে ব্যাপক নদী ভাঙন শুরু হয়, তখন আপদের সময়ে ঠিকাদাররা জরুরি ঘোষণাপত্র পাওয়া মাত্রই নদী ভাঙন রোধে এগিয়ে আসে। দ্রুত কাজ বাস্তবায়ন করতে গিয়ে প্রতিকুলতার সম্মুখীন হতে হয় তাদের। ভরা নদীতে বালু পাওয়া যায় না, বৃষ্টির সময় শ্রমিক পাওয়া যায় না, নৌকা ব্যবহার করা যায় না, অতিরিক্ত মূল্য দিয়ে বালু কিনতে হয়।
স্মারকলিপিতে বলা হয়, আপদের সময়ে জিও ব্যাগ ডাম্পিংকালীন ভাঙন কবলিত এলাকায় বর্ষা মৌসুমে ভাঙন রোধ কল্পে ঠিকাদাররা কাজ করে থাকেন। অতিরিক্ত টাকা খরচ করে নদী ভাঙনের হাত থেকে দেশের সম্পদ রক্ষার জন্য দিনরাত বন্যাকে উপেক্ষা করেন তারা। এর অনেক দিন পরে দপ্তর থেকে অ্যাসেসমেন্ট কমিটি গঠন করে ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে একটি প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। সেই প্রতিবেদন ঠিকমতো মূল্যায়ন হয় না। যার ফলে ঠিকাদারদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়। স্থানীয় কমিটির তত্ত্বাবধানে জরুরি ভিত্তিক নদী ভাঙনের কাজ সমাপ্ত করে কাজের বিপরীতে অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হবে বলে সিদ্ধান্ত থাকলেও কোনো সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয় না। ব্যাংকে ঋণের টাকা দিয়ে ঠিকাদাররা প্রকল্প বাস্তবায়ন করেন। এ ক্ষেত্রে কাজের বিপরীতে সময় মতো অর্থ বরাদ্দ না পাওয়ায় মানবেতর জীবনযাপন করতে হয় তাদের।
ঠিকাদাররা বলেন, এডিপি প্রকল্পে রাজশাহীর চারঘাট বাঘা, চাঁপাইনবাবগঞ্জের চরবাগডাঙ্গা, নওগাঁ, পাবনার বেড়া, সিরাজগঞ্জ, বগুড়া, গাইবান্ধা, জয়পুরহাটসহ সারা দেশে শত শত কোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে, অথচ লক্ষ করা যাচ্ছে প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থাকারীদের জন্য অর্থ বরাদ্দ একেবারেই অপ্রতুল। এ অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ বাস্তবায়ন করার আহ্বান জানান তারা। এ ছাড়া প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে কার্যাদেশ ও অর্থ বরাদ্দের অনুরোধ জানান তারা।