প্রস্তাবিত বাজেট : ১১.৩৬ ভাগ ব্যয় যাবে সুদে
প্রস্তাবিত আগামী অর্থবছরের (২০২১-২২) সবচেয়ে বেশি খরচ হবে ঋণের সুদ পরিশোধে, যার পরিমাণ ৬৮ হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা। এটি মোট বাজেটে প্রস্তাবিত ব্যয়ের ১১.৩৬ শতাংশ।
আজ বৃহস্পতিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বিকেলে বাজেট বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
অর্থমন্ত্রী বলেন, সুদ পরিশোধ খাতে সরকারের ব্যয় বেড়েই চলেছে। বৈদেশিক অনুদানের পরিমাণ কমতে থাকায় গুরুত্ব বাড়ছে বৈদেশিক ঋণ ও অভ্যন্তরীণ ঋণের ওপর। উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের গতি অব্যাহত রাখতে বাড়ছে ঋণের পরিমাণ। একই সঙ্গে বাড়ছে এসব ঋণের সুদ খাতের ব্যয়।
এ ঘাটতি অর্থ পূরণে এক লাখ ১৩ হাজার ৪৫৩ কোটি টাকা ঋণ করতে হবে অভ্যন্তরীণ উৎস তথা ব্যাংক ব্যবস্থা ও সঞ্চপত্র বিক্রি থেকে। আর ৯৭ হাজার ৭৩৮ কোটি টাকা ঋণ করা হবে বিদেশি উৎস থেকে। বাকি ঘাটতি পূরণ করা হবে বিদেশি অনুদানের মাধ্যমে।
ঘাটতি পূরণে ঋণের সুদ পরিশোধ ব্যবস্থায় অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বাবদ ব্যয় করতে হবে ৬২ হাজার কোটি টাকা এবং বৈদেশিক ঋণের সুদ বাবদ ব্যয় হবে ছয় হাজার ৫৮৯ কোটি টাকা।
বিদেশি উৎসের তুলনায় অভ্যন্তরীণ ঋণের সুদ বেশি। কিন্তু সরকার বিদেশি উৎস থেকে আশানুরূপ ঋণ না পাওয়ায় বেশি সুদ দিয়ে অভ্যন্তরীণ ঋণেই বেশি ভরসা রাখছে। তবে প্রস্তাবিত বাজেটে এবার বিদেশি ঋণ নেওয়ার লক্ষ্যমাত্রাও বেড়েছে।
চলতি অর্থবছরের (২০২০-২১) মূল বাজেটে সুদ পরিশোধ খাতে সুদ ভর্তুকি রাখা হয় ৬৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা, যা ছিল মোট বাজেট ব্যয়ের ১১.২৩ শতাংশ। তবে সংশোধিত বাজেটে এই ব্যয় আরও বাড়ানো হয়েছে। এতে সুদ খাতে খরচ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৩ হাজার ৮২৩ কোটি টাকা। তা সত্ত্বেও সংশোধিত বাজেটের হিসাব থেকেও প্রস্তাবিত ২০২১-২২ অর্থবছরের জন্য সুদ খাতে ব্যয়ের খরচ চার হাজার ৭৬৬ কোটি টাকা বেশি।
একইভাবে ২০১৯-২০ অর্থবছরেও সুদ পরিশোধে ব্যয় প্রস্তাব করা হয়েছিল ৫৭ হাজার ৭০ কোটি টাকা, যদিও সংশোধিত বাজেটে তার আকার বেড়ে দাঁড়ায় ৫৭ হাজার ৬৬৪ কোটি টাকা। ২০১৮-১৯ অর্থবছরে সুদ ভর্তুকি ব্যয় ছিল ৪৯ হাজার ৪৬১ কোটি টাকা। তারও আগে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে সুদ পরিশোধে খরচ হয়েছে ৪১ হাজার ৭৬৫ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে সুদ পরিশোধ খাতে খরচ ছিল ৩৫ হাজার ৩৩৭ কোটি টাকা, যা ২০১৫-১৬ সালে ছিল ৩৩ হাজার ১১৭ কোটি টাকা।