ফরিদপুরে করোনায় মৃত ব্যক্তির সৎকারে এগিয়ে এলো পুলিশ
করোনায় মৃত ব্যক্তির সৎকারে পরিবার ও প্রতিবেশীরা যখন এগিয়ে এলো না, তখন ফরিদপুর জেলা পুলিশের সদস্যরা সেই ব্যক্তির সৎকার করে আরও একটি দৃষ্টান্ত স্থাপন করল। আজ শনিবার বিকেলে পুলিশ ওই ব্যক্তির সৎকার সম্পন্ন করে।
পুলিশ জানায়, ফরিদপুর সদর উপজেলার ৬ নম্বর মাচ্চর ইউনিয়নের কৌরপুর গ্রামের বাসিন্দা বিপ্লব কুমার সাহা (৫৫) করোনা আক্রান্ত হয়ে ঢাকাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান গত রাতে। তার দুই মেয়ে ও স্ত্রী ছাড়া আর কেই নেই। তার নিজের কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় তার সৎকারের জন্য গ্রামের মানুষ সহায়তা করতে এগিয়ে আসেনি। আর এই সময় মৃতের সৎকারে জটিলতা হওয়ায় সমস্যার সৃষ্টি হয়।
বিষয়টি ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান জানতে পেরে সৎকারের ব্যবস্থা করতে নির্দেশ দেন। তাঁর নির্দেশ পেয়ে এগিয়ে যায় ফরিদপুর পুলিশের সদস্যরা।
এ সময় জেলা পুলিশের পক্ষ থেকে এসআই মো. আনোয়ার হোসেন নেতৃত্বে ফরিদপুর জেলা পুলিশের একটি দল মৃতের বাড়িতে উপস্থিত হয়। এরপর ওই মৃতদেহের সব কাজ সম্পন্ন করে। এরপর তাকে লাশবাহী গাড়িতে করে নিয়ে গিয়ে লক্ষ্মীদাসের হাট শ্মশানে সৎকার করে।
শ্মশানে উপস্থিত রনি তরফদার বলেন, ‘এমন একটি ভালো কাজ পুলিশের সদস্যরা করল আমি অভিভূত। তাদের পরিবারে ছেলে সন্তান না থাকায় সমস্যা সৃষ্টি হয়। এরপর জেলা পুলিশের সদস্যরা এসে সৎকারের সব ব্যবস্থা করে। তাদের কাছে আমরা চির কৃতজ্ঞ।’
ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) মো. তরিকুল ইসলাম বলেন, ‘করোনার শুরু থেকে ফরিদপুর জেলা পুলিশ করোনায় মৃত ব্যক্তির দাফন, সৎকার, ফ্রি অক্সিজেন সেবা, অসহায় মানুষের মধ্যে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া, লকডাউন নিশ্চিতসহ নানা কাজে ফরিদপুর জেলা পুলিশ এখন একটি উদাহরণ সারা দেশে। জেলায় গত এক মাস ধরে করোনা অবস্থা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। প্রতিদিন এখানে করোনা ও উপসর্গে মারা যাচ্ছে ১০ জনের উপরে। আর এই সময়ে প্রতিনিয়ত ছুটছে করোনা রোগীর সেবাসহ নানা কাজে ফরিদপুর পুলিশের সদস্যরা।’
এএসপি আরও বলেন, ‘এর আগেও জেলার যেখানেই করোনা রোগীর সৎকার বা দাফনে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে সেখানেই জেলা পুলিশের টিম দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। ফরিদপুর জেলা পুলিশ সব সময় জনগনের পাশে আছে এবং থাকবে।’