ফরিদপুরে পুলিশের কাছ থেকে আসামি ছিনিয়ে নিলেন নারীরা
ফরিদপুরের সালথায় একাধিক মামলার আসামি তারা মিয়াকে গ্রেপ্তার করে নিয়ে যাচ্ছিলেন সালথা থানার দুই পুলিশ কর্মকর্তা। এ সময় রুখে দাঁড়ায় এলাকার কয়েকজন নারী। তাদের সঙ্গে ধস্তাধস্তি করে শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয়েছে দুই পুলিশ সদস্যকে। সেখানে প্রায় ২০ জনের নারী দল ছিনিয়ে নিয়ে গেছেন ওই আসামিকে।
যাত্রাপালা, নাটক কিংবা চলচ্চিত্রের গল্প মনে হলেও এমন ঘটনা ঘটেছে ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের খারদিয়া গ্রামে।
রোববার (১ মে) দুপুর ১টার দিকে গ্রামের ছয়আনি পাড়ায় তারা মিয়া (৫৩) নামে এক আসামিকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিলেন সালথা থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) খারদিয়া এলাকার বিট কর্মকর্তা মো. নাজমুল ও সহ-উপ পরিদর্শক (এএসআই) মো. লিয়াকত হোসেন। কিন্তু এ সময় এলাকার ২০ জন নারী এগিয়ে এসে দুই পুলিশ কর্মকর্তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে আসামি তারা মিয়া ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান।
ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ফরিদপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (নগরকান্দা সার্কেল) সুমিনুর রহমান বলেন, ‘পুলিশ কর্মকর্তা নাজমুল ও লিয়াকত আসামি তারা মিয়াকে সঙ্গে নিয়ে ফিরছিলেন। এ সময় এলাকার কিছু নারী দুই ভাগে ভাগ হয়ে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে জাপটে ধরলে সুযোগ বুঝে তারা মিয়া পালিয়ে যান। অভিযানের সময় কোনো নারী পুলিশ সঙ্গে না থাকায় ওই নারীদের পক্ষে আসামিকে ছিনিয়ে নেওয়া সহজ হয়েছে।’
এলাকার বাসিন্দারা জানান, যদুনন্দী ইউনিয়নে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মিয়ার মধ্যে বিরোধ চলে আসছিল। এই বিরোধের সূত্র ধরে এলাকায় বেশ কয়েকবার সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে।
গত এপ্রিলেও খারদিয়া এলাকায় দুই পক্ষের সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে এসে কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হন। এ ঘটনায় পুলিশের করা মামলায় ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলমগীর মিয়া গ্রেপ্তার হন। আসামি তারা মিয়াও পুলিশের ওপর চালানো হামলার মামলার একজন আসামি। তিনি ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলামের সমর্থক। এছাড়া, তার নামে ২০১৯ সালে একটি এবং ২০২০ সালে দুটি মামলা রয়েছে। এই চার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করতে গিয়েছিলেন দুই পুলিশ কর্মকর্তা।