বঙ্গোপসাগরে বিদেশি জাহাজে ‘ডাকাতির প্রস্তুতি’, ৭ ‘দস্যু’ আটক
বঙ্গোপসাগরের বোর পয়েন্ট এলাকায় বিদেশি একটি বাণিজ্যিক জাহাজে ডাকাতির প্রস্তুতিকালে সাত দস্যুকে আটক করেছে বলে দাবি কোস্ট গার্ডের।
কোস্ট গার্ডের দাবি—আটক করা ব্যক্তিদের কাছ থেকে দেশীয় ধারালো অস্ত্র, চাপাতি, দা, কুড়াল, ব্লেড ও করাত জব্দ করা হয়েছে। এ ছাড়া তাদের কাছ থেকে সাত পিস ইয়াবা এবং ২০ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করা হয় এবং উদ্ধার করা মাদক ও জব্দ করা ট্রলার এবং ধারালো অস্ত্রসহ আটক দস্যুদের মোংলা থানা পুলিশে হস্তান্তরের প্রক্রিয়া চলছে বলে জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।
আটক করা ব্যক্তিরা হলো—মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনি গ্রামের হারুন (৪৫) এবং চিলা ইউনিয়নের কানাইনগর গ্রামের শাওন (১২), ইমামুল ব্যাপারী (২৩), আনসার খাঁ (৪০), শামসু ব্যাপারী (৩০), মোবারক খাঁ (৩০) ও মুন্না তালুকদার (২২)।
মোংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন সদর দপ্তরের জোনাল কমান্ডার ক্যাপ্টেন এম মোসায়েদ হোসেন জানান, বঙ্গোপসাগরে মোংলা বন্দরের বোর পয়েন্ট এলাকায় অবস্থানরত বিদেশি বাণিজ্যিক জাহাজ এম ভি ব্লু মার্লিনে গত ১২ জুলাই বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ডাকাতির প্রস্তুতি নিচ্ছিল একদল দস্যু। ওই সময় জাহাজটি ভিএইচএফের মাধ্যমে ঘটনাটি বন্দর কর্তৃপক্ষকে জানায়। এরপর খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের আওতাধীন কোকিলমনি স্টেশন এবং দুবলা আউটপোস্টের দুটি দল বিদেশি জাহাজটির উদ্দেশে রওনা হয়ে যায়। সেখানে পৌঁছে কোস্ট গার্ড সদস্যেরা দস্যুদের ট্রলারটি ধাওয়া করলে তারা পালিয়ে যায়।
পরে বিদেশি জাহাজের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে কোস্ট গার্ডের জাহাজ তামজিদের নেতৃত্বে তিনটি অপারেশন দল অভিযান চালিয়ে বঙ্গোপসাগরের বোর পয়েন্টসংলগ্ন সুন্দরবনের কৈখালী এলাকা থেকে আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৪টা ৪৫ মিনিটের সময় ওই ট্রলারটিসহ সাত দস্যুকে আটক করা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার ভোরে ট্রলারসহ আটক দস্যুদের দুপুরে মোংলা কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন সদর দপ্তরে আনা হয়। এখান থেকে তাদের মোংলা থানা পুলিশে হস্তান্তর করা হবে বলে জানিয়েছে কোস্ট গার্ড।
২০১৮ সালের ১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষণা করেন। ২০১৬ সালের ৩১ মে বনদস্যু মাস্টার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে র্যাব-৮-এর কাছে আত্মসমর্পণ প্রক্রিয়া শুরু হয়৷ এরপর একে একে ২৬ বাহিনীর ২৭৪ জন আত্মসমর্পণ করে। এ ছাড়া বিভিন্ন সময় আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয় ১৩৫ জন।
এরপর থেকে সাগর-সুন্দরবন উপকূলজুড়ে জেলে, বাওয়ালী, মৌয়ালীদের মাঝে শান্তির সুবাতাস বইছে। কিন্তু, মাঝে মধ্যে দু-একটি ছোট দস্যুবাহিনী নতুন করে অপতৎপরতার চেষ্টা করলেও আইনশৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর অভিযানে তারা ধরা পড়ছে।