বড়পুকুরিয়া কয়লাখনিতে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসীর মানববন্ধন
দিনাজপুরের পার্বতীপুর উপজেলার বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির কারণে বাড়িঘর ফাটল ধরা, ক্ষতিপূরণ ও জমি অধিগ্রহণের নামে হয়রানি বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ সোমবার সকালে বড়পুকুরিয়া স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন করে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাবাসী।
এলাকাবাসীর অভিযোগ, প্রথম দিকে ১৯০ কোটি টাকায় ৬৭২ একর জমি অধিগ্রহণ করে কয়লাখনি কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে অধিগ্রহণ করা জমির পাশে নতুন করে বাঁশপুকুর ও বৌদ্ধনাথপুর গ্রামের ১৫ দশমিক ৫৮ একর জমি দেবে গেছে। এতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ওই এলাকার ২০০ পরিবার। বাসাবাড়িগুলোতে নতুন করে ফাটল দেখা দিয়েছে। কুয়া, টিউবওয়েল, পুকুরের পানি প্রতিনিয়তই ভূগর্ভে নেমে যাচ্ছে। এরই মধ্যে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় খনি কর্তৃপক্ষ ২০২০ সালের ১ মার্চ চার ধারায় ও ২৩ জুন সাত ধারায় ক্ষতিগ্রস্ত মালিকদের জমি অধিগ্রহণের নোটিশ দিয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও ভূমি অধিগ্রহণ কাজ সম্পন্ন করা হয়নি। কয়লাখনি কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে প্রতারণা শুরু করেছে। মসজিদগুলোর ক্ষতিপূরণও এখনও পায়নি। ফলে গ্রামের মানুষ বাড়িঘর ছেড়ে কোথাও যেতে পারছে না। অবিলম্বে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ার দাবি জানায় গ্রামবাসী।
মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বড়পুকুরিয়া জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটির উপদেষ্টা মো. ইব্রাহিম খলিল। বক্তব্যে তিনি বলেন, ‘আতঙ্কে দিন কাটছে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির পাশের দুই গ্রামের ২০০ পরিবারের। ভূমি অধিগ্রহণের টাকা হাতে না পাওয়ায় বাড়িঘর ছেড়ে চলে যেতে পারছে না ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো। ফলে ঝুঁকির মধ্যে পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করতে হচ্ছে। কয়লা উত্তোলনের ফলে খনির অঞ্চলের চারপাশে ৬০০ একরেরও বেশি জমি দেবে গেছে। সেখানে বিশাল জলাশয়ের সৃষ্টি হয়েছে।’
বক্তারা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের প্রতি সবসময় সুনজর রেখেছেন। আমরা মনে করি, আমাদের দাবি মেনে নিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বাঁচার পথ তিনি সুগম করবেন। আগামীতে সুষ্ঠুভাবে আমাদের দাবি মেনে না নিলে আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবে এলাকাবাসী।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন জীবন ও সম্পদ রক্ষা কমিটির সভাপতি মো. রফিকুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক মো. বোরহান উদ্দীন সুমন, বিশিষ্ট সমাজসেবক ও সংগঠনের উপদেষ্টা মো. এ জেড এম রেজওয়ানুল হক, উপদেষ্টা আলহাজ মো. বেলাল উদ্দিন, আলহাজ মো. রুহুল আমিন। মানববন্ধনে সংগঠনের অন্য নেতাকর্মী, বৌদ্ধনাথপুর ও বাঁশপুকুর মৌজার পাঁচশতাধিক নারী-পুরুষ অংশ নেয়।