বিএনপির কারণে বাংলাদেশ বিনামূল্যে সাবমেরিন কেবলে যুক্ত হতে পারেনি
স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায়মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম বলেছেন, দেশে বিনামূল্যে সাবমেরিন কেবল স্থাপনের সু্যোগ এলেও তৎকালীন বিএনপি সরকারের অদূরদর্শী নেতৃত্বের অভাবে তা বাস্তবে রূপ নেয়নি।
আজ রোববার স্থানীয় সরকার বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত স্থানীয় সরকার বিভাগের সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তাজুল ইসলাম এ কথা বলেন।
সমঝোতা স্মারকের আওতায় সারা দেশে প্রতিটি উপজেলায় নেটওয়ার্ক সুইচরুম, উপজেলার নেটওয়ার্ক, অপারেশন সেন্টার, উপজেলায় আইসিটি সার্ভিস ডেস্ক, উপজেলায় সিটির ট্রেনিং ল্যাব ও অফিস স্থাপনের জন্য একটি করে আইসিটি অবকাঠামো ও অফিস স্থাপন করা হবে।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে একসময় সাবমেরিন কেবল বিনা পয়সায় স্থাপনের সুযোগ তৈরি হলেও তৎকালীন সরকারপ্রধান খালেদা জিয়া বলেছিলেন, এটির সংযোগ হলে দেশের নিরাপত্তা হুমকির সম্মুখীন হবে এবং তথ্য পাচার হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। অদূরদর্শিতার কারণে এই সুযোগ থেকে দেশ এবং দেশের মানুষ বঞ্চিত হয়েছে। এমনকি এই উদ্যোগের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। কিন্তু ওই সময়ে পৃথিবীর অনেক দেশ সাবমেরিনে যুক্ত হয়ে এখন তার সুফল নিচ্ছে।’
বর্তমান সময়ে তথ্য ও প্রযুক্তির সুফল অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে পরিণত হয়েছে বলে মন্তব্য করেন তাজুল ইসলাম। তিনি বলেন, পৃথিবীর অন্যান্য দেশের তুলনা এ খাতে বাংলাদেশ অনেক সম্ভাবনাময়। তথ্য ও প্রযুক্তির সর্বোচ্চ সুবিধা পেতে এবং লক্ষ্যমাত্রা ২০২১, ২০৩০ এবং ২০৪১-এ পৌঁছাতে হলে সরকারের সব অঙ্গকে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে।
একত্রে কাজ করার উদাহরণ হিসেবে আইসিটি বিভাগের সঙ্গে স্থানীয় সরকার বিভাগের আজকের এই চুক্তি নতুন দিগন্তের উন্মোচন করবে বলেও উল্লেখ করেন তাজুল ইসলাম।
স্থানীয় সরকারমন্ত্রী আরো বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন উন্নত দেশ গার্মেন্টস শিল্প অথবা অন্য কোনো শিল্প দিয়ে শুরু করলেও আজ সব দেশ তথ্যপ্রযুক্তিতে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে। আমাদের বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সমানতালে চলতে হবে, তাহলেই দেশ এগিয়ে যাবে।
এ প্রসঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কথা উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, আমেরিকা আজকে পৃথিবীর সবচেয়ে ধনী দেশ হওয়ার ম্যাজিক হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে উন্নয়ন। এটা অনুধাবন করেই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং তাঁর সুযোগ্য পুত্র আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন, যা এখন বাস্তবে রূপ নিয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের উদ্ভাবনী শক্তিতে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের ইমেজ এখন বিশ্বে অনেক উপরে উঠেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যখন তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে বিতর্ক হয় তখন রেফারেন্স হিসেবে বাংলাদেশের নাম উল্লেখ করা হয় বলেও মন্তব্য করেন তাজুল ইসলাম।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০০৮ সালে যখন সরকার গঠন করেন তখন এ দেশে ডিজিটাল সেবা বলে তেমন কোনোকিছু ছিল না। কিন্তু বর্তমানে ডিজিটাল বাংলাদেশের কল্যাণে সরকারের সব সেবা প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে।
২০২১ সালের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণা নিয়ে অনেকে তখন হাসি-ঠাট্টা করেছিলেন বলে উল্লেখ করেন পলক। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের সুদূরপ্রসারী চিন্তাচেতনার কারণে দেশ আজ ডিজিটালে রূপান্তরিত হয়েছে।
স্থানীয় সরকার বিভাগের সিনিয়র সচিব হেলালুদ্দীন আহমদের সভাপতিত্বে সমঝোতা স্মারক অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।