বিমানবন্দরে যাত্রীদের সঙ্গে প্রতারণা, জাবেদ গ্যাংয়ের প্রধান গ্রেপ্তার
রাজধানীর হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে যাত্রী ও দর্শনার্থীদের সঙ্গে প্রতারণার অভিযোগে জাবেদ গ্যাংয়ের প্রধান মো. জাবেদকে (৪৭) গ্রেপ্তার করেছে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে এয়ারপোর্ট এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আর আজ বুধবার (২৬ এপ্রিল) বিকেলে এপিবিএনের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জিয়াউল হক এ তথ্য জানিয়েছেন।
মোহাম্মদ জিয়াউল হক জানান, দীর্ঘদিন ধরে বিমানবন্দর এলাকায় যাত্রীদের সঙ্গে বিভিন্ন ধরনের প্রতারণা করে আসছিল জাবেদ। কখনো ডলার করে দেওয়ার কথা বলে যাত্রীর টাকা নিয়ে লাপাত্তা হয়ে যাওয়া, সুকৌশলে যাত্রীর পাসপোর্ট এবং ট্রাভেল ডকুমেন্টস নিয়ে পালিয়ে যাওয়া, যাত্রী ফ্লাইটে যেতে পারবেন না বলে ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে যাত্রীর আত্মীয়স্বজনের কাছ থেকে অর্থ আদায় করা এবং পুলিশ পরিচয়ে হুমকি দিয়ে অর্থ আদায় সহ বিভিন্ন অপকর্মে জড়িত এই জাবেদ।
এর আগেও বিভিন্ন অভিযোগে জাবেদকে অন্তত চারবার গ্রেপ্তার করে ব্যবস্থা নেয় এপিবিএন। কিন্তু, বিভিন্ন মেয়াদে জেল খেটে এবং জামিন পেয়ে বের হয়েই একই ধরনের প্রতারণার সঙ্গে আবার যুক্ত হয় গ্যাংটির প্রধান। নিজের নামে তিনি বিমানবন্দর কেন্দ্রিক একটি চক্রও গড়ে তুলেছেন। এই চক্রে পাঁচ থেকে ছয়জন সক্রিয় সদস্য রয়েছে। তাদেরকে বিভিন্ন সময়ে এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার বলেন, গত ৩ জানুয়ারি সিঙ্গাপুরগামী যাত্রী মো. শফিকুল ইসলাম ফ্লাইট মিস করেছেন বলে তার আত্মীয়স্বজনকে ফোন করে জানান জাবেদ। তাকে নতুন করে টিকিট করে দিতে হবে বলে আত্মীয়স্বজনকে যাত্রীর কণ্ঠ নকল করে ফোনে কান্নাকাটি করেও শোনান এই প্রতারক। যাত্রীকে সিঙ্গাপুরে পাঠাতে হলে ৬৮ হাজার টাকা দিয়ে নতুন করে সরাসরি ফ্লাইটের টিকিট করতে হবে বলে যাত্রীর স্বজনকে বলেন জাবেদ। উপায় না দেখে যাত্রীর স্বজন বিকাশ ও নগদের মাধ্যমে টাকা পাঠান। অথচ, যাত্রী শফিকুল তখন সিঙ্গাপুরগামী ফ্লাইটে ছিলেন, যার জন্য ফোন তখন বন্ধ ছিল।
মোহাম্মদ জিয়াউল হক বলেন, ‘টাকা পাঠানোর পরপরই জাবেদ তার ফোন নাম্বারটি বন্ধ করে দেয়। এ বিষয়ে ভুক্তভোগী এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের কাছে অভিযোগ করে। পরে, তদন্ত করে প্রতারক জাবেদকে চিহ্নিত করা হয়। গতকাল মধ্যরাতে বিমানবন্দর এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। বিমানবন্দরে কর্মরত ম্যাজিস্ট্রেট জাবেদকে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মেয়াদে সাজাও দেয়। প্রতারণার ঘটনায় জাবেদের নামে ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধি আইন অনুযায়ী মামলা করে বিমানবন্দর থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।’