বিশ্বের ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাংলাদেশের একটিও নেই : রুমিন ফারহানা
সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা বলেছেন, সম্প্রতি যুক্তরাজ্য ভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা ১৪ শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে। এর মধ্যে, প্রতিবেশি দেশ ভারতের ৯টি, পাকিস্তানের তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বসেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান পেলেও বাংলাদেশের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ও এই তালিকার মধ্যে নেই।
জাতীয় সংসদে আজ বৃহস্পতিবার বিএনপি দলীয় সংসদ সদস্য রুমিন ফারহানা এক বক্তব্যে তিনি বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে মানটাই আমাদের বড় সমস্যা। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থার জরিপের দিকে যদি আমরা তাকাই, আমরা দেখবো আমাদের র্যাংকিংগুলো খুব স্পষ্ট। ২০১৬ সালে পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীর মধ্যে স্বাক্ষরতা দক্ষ ছিল আনুমানিক ৩১ দশমিক ৪ শতাংশ। যা ২০০১ সালে ৩৪ দশমিক ১ শতাংশে উন্নিত হবে বলে আশা করা হয়েছিল। কিন্তু গবেষণার ফলাফল বলছে এখন এটা ৭ দশমিক ৩ শতাংশ কমে আনুমানিক ২৭ দশমিক ২ শতাংশে দাঁড়িয়েছে। কেবলমাত্র পড়তে, লিখতে এবং সংখ্যা চিনতে পারে ও প্রয়োগ করতে পারে এমন শিক্ষার্থীদের দক্ষ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। এর মধ্যে পড়তে, লিখতে ও সংখ্যা চিনতে পারে এমন প্রাথমিক পাস করা শিক্ষার্থীরা অর্জন করতে পারছে না।
রুমিন ফারহানা আরও বলেন, ইউএনডিপি ও মোহাম্মদ বিন রশিদ আল মাকতুম নলেজ ফাউন্ডেশনে প্রকাশিত ২০২১ সালের বৈশ্বিক জ্ঞান সূচকে ১৫৪ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২০তম। ২০২১ সালে গ্লোবাল ট্যালেন্ট কম্পিটিটেন্ট ইনডেক্স ১৩৪ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১২৩ নম্বরে। জাতিসংঘ প্রকাশিত ২০২১ সালের বৈশ্বিক উৎভাবন সূচকে ১৩২ দেশের মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান ১১৬ নম্বরে। তিনটির মধ্যে শেষ দুটি সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বনিম্ন। এটা আমাদের জন্য লজ্জাজনক নয় বরং অত্যন্ত দুঃখের ও উদ্বেগের বিষয়।
যুক্তরাজ্য ভিত্তিক শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থা ১৪ শতাধিক বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকা প্রকাশ করেছে কিছুদিন আগে। প্রতিবেশি দেশ ভারতের ৯টি, পাকিস্তানের তিনটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিশ্বসেরা ৫০০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় স্থান পেলেও বাংলাদেশের একটা বিশ্ববিদ্যালয়ও এই তালিকার মধ্যে নেই। আগের মতই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ৮০১ থেকে ১০০০ এর মধ্যে আছে। ২০১২ সালে কিএস র্যাংকিং এ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় র্যাংকিং এ ছিল ৬০১ এর মধ্যে ২০১৪ সালে পিছিয়ে তা ৭০১ এ চলে যায়। ২০১৯ সালের তালিকায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের র্যাংকিং আরও পিছিয়ে যায় এবং ২০২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ৮০০ থেকে ১০০০ এ চলে যায়। এদিকে প্রতিটি জেলায় জেলায় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে সরকার এবং শিক্ষার মান যদি প্রাথমিক থেকে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত এই হয় তাহলে বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন শুধু অবকাঠামো নির্মাণ হয়ে যায়। শিক্ষার মান বা শিক্ষার প্রসার নয়। এবার বাজেট দেখে প্রতি বারের মতো আবারও বিস্মিত হয়েছি শিক্ষার এই দুরবস্থার মধ্যে শিক্ষার ক্ষেত্রে জিডিপির অনুপাতে বরাদ্দ কমেছে। ইউনেস্কোর মতে জিডিপির ৬ বরাদ্দ শিক্ষায় থাকা উচিত, এর আগে বাংলাদেশে ২ শতাংশের মতো থাকলেও এবারের বাজেটে হয়েছে এটা ১ দশমিক ৮৩ শতাংশ। শিক্ষার মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করার ফলে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুত কেন্দ্রের প্রায় ১৫ হাজার টাকা এই বরাদ্দের মধ্যে ঢুকে পড়েছে।