মোখায় সর্বোচ্চ সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছি, ক্ষয়ক্ষতির তথ্য পাইনি : ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী
ঘূর্ণিঝড় মোখার প্রভাবে উপকূলে জলোচ্ছ্বাসের মাত্রা সহনীয় ছিল জানিয়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেছেন, ‘এই দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির তথ্য এখন পর্যন্ত আসেনি। আমরা পাঁচ বছরে যত দুর্যোগ মোকাবিলা করেছি, তার মধ্যে এবারের ব্যবস্থাপনাটি ছিল সর্বোচ্চ সঠিক।’
প্রতিমন্ত্রী আজ রোববার (১৪ মে) সচিবালয়ে তাঁর দপ্তরে ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন।
ঘূর্ণিঝড়ের সর্বশেষ অবস্থা তুলে ধরে সাংবাদিকদের প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সকাল ৬টা থেকে ঘূর্ণিঝড় মোখার অগ্রভাগ কক্সবাজার, টেকনাফ, সেন্ট মার্টিন ও মিয়ানমারের উপকূল অতিক্রম শুরু করে। এখনও সেটি অতিক্রম করছে। বিকেলে এটি উপকূল অতিক্রম করে মিয়ানমারের দিকে অগ্রসর হবে।’
এনামুর রহমান বলেন, ‘এখন ঝড় ৫০ থেকে ৬৮ কিলোমিটার গতিতে হচ্ছে। যেহেতু সকাল থেকে ভাটা শুরু হয়েছে তাই বড় ধরনের জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা নাই, মাত্রাটাও সহনীয়।’
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ঝড়টি দুর্বল হয়ে বাংলাদেশ ও মিয়ানমার অতিক্রম করছে। তবে ঝড়ের কেন্দ্রের ৭৮ কিলোমিটারের মধ্যে ঝড়ের গতিবেগ এখনও ২০০ থেকে ২১৫ কিলোমিটার। এ গতিবেগে কেন্দ্রটি উপকূল অতিক্রম করলে কিছুটা ক্ষয়ক্ষতি হবে।’
ক্ষয়ক্ষতির সংবাদ না পাওয়ার কথা জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। সেন্ট মার্টিনে ৩৭টি আশ্রয়কেন্দ্রে সাড়ে আট হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া কক্সবাজারে ৫৭৬টি কেন্দ্রে দুই লাখের বেশি, চট্টগ্রামে ১ হাজার ২৪ আশ্রয়কেন্দ্রে পাঁচ লাখ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। কুতুবদিয়া, মহেশখালী, সন্দ্বীপ, সুবর্ণচরের মানুষকেও নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।’
কয়েকটি আশ্রয়কেন্দ্রে সুপেয় পানি না থাকার অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘কক্সবাজারের একটি কেন্দ্রে সুপেয় পানি ছিল না। আমি অভিযোগ পেয়ে সেখানকার জেলা প্রশাসককে বলেছি। সেখানে তিনি পর্যাপ্ত বোতলজাত পানির ব্যবস্থা করেছেন।’
ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন ‘আমরা আন্তঃমন্ত্রণালয় বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি, এবার তাদের বোতলজাত পানি দেওয়া হবে, সিলেট-সুনামগঞ্জের বন্যায় যা করেছিলাম, যেন দুর্যোগের পর সেখানে পানিবাহিত কোনো রোগ না হয়।’
দুর্যোগকালীন লাখ লাখ মানুষের ব্যবস্থাপনা সহজ নয় জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী এনামুর রহমান বলেন, ‘হাজার হাজার আশ্রয়কেন্দ্র, লাক লাখ মানুষ। এদের ব্যবস্থাপনা বাস্তবিক অর্থে এতো সহজ না। আমরা দেখেছি এর আগেও সক্ষমতা ১০০ জনের হলেও ২০০ মানুষ আসে। তাদের খাওয়া-দাওয়া, স্যানিটেশনের ব্যবস্থা খুব সহজ নয়।’
এবারের ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় বিভিন্ন বাহিনীর সদস্য, সেন্টমার্টিন, টেকনাফ ও কক্সবাজারের স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কাজের প্রশংসা করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী।