ময়মনসিংহসহ ছয় জেলায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহণ ধর্মঘট
ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুর চৌরাস্তায় পৌঁছাতে এক ঘণ্টা ২০ মিনিট লাগলেও চৌরাস্তা থেকে মহাখালী পৌঁছাতে সময় লাগছে তিন থেকে পাঁচ ঘণ্টা। এক্সপ্রেসওয়ের কাজ চলছে ঢিমেতালে। গাড়ি চলাচলের রাস্তাও খানাখন্দে ভরা। তাই ১৫ জানুয়ারির মধ্যে রাস্তা চলাচলের উপযোগী না হলে বৃহত্তর ময়মনসিংহের যোগাযোগ ব্যবস্থা বন্ধ রাখা ছাড়া আমাদের কোনো উপায় থাকবে না।
গত ২ জানুয়ারি ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতি ও ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনের এই ঘোষণা দেওয়া হয়েছিল।
পরিবহণ মালিক সমিতির দাবি ছিল ঢাকা-ময়মনসিংহ রোডের জয়দেবপুর চৌরাস্তা থেকে টঙ্গী পর্যন্ত ১২ কিলোমিটার রাস্তা চলাচলের অযোগ্য, তাই জরুরি ভিত্তিতে মেরামত করে গাড়ি চলাচল উপযোগী করার।
সংবাদ সম্মেলনে আরও ঘোষণা করা হয়েছিল উল্লেখিত সমস্যার দৃশ্যমান সমাধান না হলে পরিবহণ শিল্পসহ সব ব্যবসায়ী মহলকে রক্ষা করার লক্ষ্যে ১৬ জানুয়ারি রোববার থেকে বৃহত্তর ময়মনসিংহের (ময়মনসিংহ, জামালপুর, শেরপুর, নেত্রকোনা, কিশোরগঞ্জ, টাঙ্গাইল) যোগাযোগ ব্যবস্থা আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বন্ধ থাকবে।
এর ধারাবাহিকতায় আগামীকাল রোববার থেকে উল্লেখিত রুটে পরিবহণ ধর্মঘট শুরু হচ্ছে। জেলা মোটর মালিক সমিতির দায়িত্বশীল দুই কর্মকর্তা আজ সন্ধ্যায় এই খবর নিশ্চিত করেছেন।
সেদিনের সংবাদ সন্মেলনে ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি মমতাজ উদ্দিন দাবি করেছিলেন, ‘পরিবহণ মালিক শ্রমিকগণের নিজস্ব জরিপে দেখা যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কের প্রতি মিনিটে সাতটি যাত্রীবাহী গাড়ি বিভিন্ন রোড থেকে গাজীপুর হয়ে ঢাকা অভিমুখে চলাচল করে। হিসাব অনুযায়ী ঘণ্টায় যাতায়াত করছে ৪২০টি গাড়ি। ২৪ ঘণ্টায় চলাচল করছে ১০ হাজার ৮০টি গাড়ি। রাস্তা খারাপের কারণে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত ২০ লিটার জ্বালানি খরচ হয়। সে হিসাবে ২৪ ঘণ্টায় ১০ হাজার ৮০ গাড়িতে দুই লাখ এক হাজার ৬০০ লিটার তেল বেশি খরচ হয়। যার ফলে অর্থমূল্য প্রতিদিন মালিকদের এক কোটি ৬১ লাখ ২৮ হাজার টাকা ক্ষতি হচ্ছে। দিন দিন পরিবহণ শিল্পের এই অতিরিক্ত খরচে মালিকরা তাদের গাড়ির কিস্তিসহ মেরামত, যন্ত্রাংশ ও টায়ার ক্রয় সক্ষমতা হারাচ্ছে । গাজীপুর-ঢাকা রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে আমদানি-রপ্তানিসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের কাঁচামাল বহনে ব্যাপক বাধা সৃষ্টি হচ্ছে। শিল্পপ্রতিষ্ঠানের যেমন ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে তেমনি দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতিও রোধ করা যাচ্ছে না। তাই পরিবহণ শিল্পসহ সব ব্যবসায়ীমহলের স্বার্থ রক্ষার লক্ষ্যে ১৬ জানুয়ারি থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করা হবে।
সেদিনের সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ময়মনসিংহ জেলা মোটর মালিক সমিতির সভাপতি মো. মমতাজ উদ্দিন মন্তা, ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি, এফবিসিসিআই সহসভাপতি ও দি ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি মো. আমিনুল হক শামীম, দি ময়মনসিংহ চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহসভাপতি শংকর সাহা, জেলা মোটর মালিক সমিতির মহাসচিব মো. মাহবুবুর রহমান, সহসভাপতি অধ্যাপক শ্যামল দত্ত, কোচ বিভাগের সম্পাদক সোমনাথ সাহা প্রমুখ।