শাল্লায় ঘটনায় আদালতে ঝুমন দাশের মায়ের মামলা
সুনামগঞ্জের শাল্লায় সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বাড়িতে হামলা ও লুটপাটের ঘটনায় আদালতে মামলা করেছেন ঝুমন দাস আপনের মা নিভা রানী দাস। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শ্যাম কান্ত সিনহার আদালতে এ মামলা করেন।
এদিকে আদালত মামলাটি গোয়েন্দা পুলিশের কাছে তদন্তের জন্য দিয়েছেন। এই মামলায় আসামি করা হয়েছে ৭২ জনকে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আইনজীবী অ্যাডভোকেট দেবাংশ শেখর দাস। তিনি বলেন, ‘শাল্লা থানার পুলিশ মামলাটি না নেওয়ায় আমরা আদালতে দাখিল করেছি। আদালত বাদীর জবানবন্দি নিয়ে মামলাটি ডিবির ওসিকে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।’
মামলায় নিভা রানী দাস জানান, তার ঘরে ঢুকে পুত্রবধুর শ্লীলতাহানির চেষ্টা করে হামলাকারীরা। মামলায় তিনি নাচনি, চণ্ডিপুর, ধনপুর ও কাশিপুরসহ কয়েকটি গ্রামের ৭২ জনের নামোল্লেখসহ অন্তুত দুই হাজার অজ্ঞাতনাম আসামি অংশ নেওয়ার কথা উল্লেখ করেন।
বাদী আরও উল্লেখ করেন, গত ২৫ মার্চ এই মামলাটি তিনি শাল্লা থানায় করেছিলেন। কিন্তু পুলিশ মামলাটি না নেওয়ায় আজ আদালতে দাখিল করেছি। আদালতের কাছে তিনি এই ঘটনায় জড়িতদের বিচার দাবি করেন। একইসঙ্গে তাঁর ছেলেরও মুক্তি দাবি করেন।
উল্লেখ্য, গত ১৫ মার্চ সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় শানে রিসালাত সম্মেলনে লক্ষাধিক মানুষের সামনে বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতারা। সেই সূত্র ধরে পাশের শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের ঝুমন দাস আপন তাঁর ফেসবুকে মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন বলে দাবি করা হয়। এক পর্যায়ে ঝুমনকে খুঁজে বের করে গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশে দেয় লোকজন। এরপরও লোকজন শান্ত না হয়ে গত বুধবার সকাল থেকে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নোয়াপাড়া গ্রাম ঘিরে রাখে। পরে তারা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে।
এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে হবিবপুর ইউপির চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে প্রথম মামলাটি করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয়েছে দিরাই উপজেলার সরমঙ্গল ইউপির সদস্য নাচনী গ্রামের বাসিন্দা শহিদুল ইসলাম স্বাধীন মিয়াকে। তিনি ওই ইউনিয়নের ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতি বলে জানা গেছে। তবে স্বাধীন মিয়া যুবলীগের কেউ নন বলে দাবি করছেন জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক খায়রুল হুদা চপল।
এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও দেড় হাজার জনকে আসামি করে পুলিশের পক্ষ থেকে অপর মামলাটি করা হয়। পুলিশের করা মামলার বাদী হয়েছেন শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিম।